পাচারের ঝুঁকিতেও ভয় নেই রোহিঙ্গাদের -রয়টার্সের রিপোর্ট
বাংলাদেশে
রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন আমিনা বেগম নামের এক রোহিঙ্গা নারী। তার
স্বামী থাকেন মালয়েশিয়া। তার কাছে যেতে চান আমিনা বেগম। এ জন্য যেন কেউ
তাকে থামাতে পারছেন না, যদিও তিনি এরই মধ্যে একবার পাচারকারীদের শিকারে
পড়েছিলেন।
আমিনা বেগমের বয়স ১৮ বছর। তার দাবি মিয়ানমারের এক সেনা সদস্য তাকে ধর্ষণ করেছে। তাই নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার চেয়ে বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণের মাধ্যমে তিনি মালয়েশিয়া যেতে চান।
তার মতো রোহিঙ্গা শিবিরে আরো অনেকে আছেন।
তারা আসন্ন বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে এমন ঝুঁকিপূর্ণ সফরের মাধ্যমে অন্য দেশে যেতে চান। আর এক্ষেত্রে পাচারকারীরা নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ ব্যবহার করছে। ফলে আইন প্রয়োগকারীদের থাকতে হয়েছে উচ্চ সতর্ক অবস্থায়।
আমিনা বেগম দোভাষীর মাধ্যমে টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, কক্সবাজারে আশ্রয়শিবিরে জীবনযাপনের মান এখন উন্নত হয়েছে। কিন্তু আমি জানি একদিন আমাকে মিয়ানমারে ফিরে যেতেই হবে। সেখানে আমার কোনো ভবিষ্যত নেই।
বাংলাদেশের আধা সামরিক বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিপি সম্প্রতি মিয়ানমার সীমান্তের কাছে তল্লাশি চালিয়ে আমিনা বেগম ও অন্য ১১ জনকে উদ্ধার করেছে। আইন প্রয়োগকারীরা এ বছর পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন কমপক্ষে ১০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে।
সম্প্রতি টেলিফোনে আরেক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বিয়ে করেছেন আমিনা বেগম। তার গ্রামে এভাবে বিয়ে বৈধতা দিয়েছেন বড়রা। এখন মালয়েশিয়ায় সেই স্বামীর কাছে যেতে চান আমিনা। এ জন্য তিনি দালালদের অর্থ দিয়েছেন।
আমিনা বেগমের মতো শারমিন খাতুনও মালয়েশিয়ায় তার স্বজনদের সঙ্গে একসঙ্গে বসবাস করতে যেতে চান। তিনিও পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছেন। উপকূলের কাছ থেকে বোটে করে অন্য আরো ২০ রোহিঙ্গার সঙ্গে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় তাদেরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বিজিবি কর্মকর্তারা বলেছেন, দালালরা আমিনা ও শারমিনের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভুলপথে পরিচালিত করছে। ২০১৫ সালে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার সীমান্তে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশীদের গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর মালয়েশিয়াগামী সব পাচারের রুট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আইন প্রয়োগকারীরা বলছেন, তা সত্ত্বেও পাচারকারীরা অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের পাচার করতে অর্থ নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
তবে পাচার বিরোধী সংগঠনগুলো আশঙ্কা করছে, বঙ্গোপসাগরে যেসব রুট ২০১০ সালের দিকে সক্রিয় ছিল তা আবার ব্যবহার করছে পাচারকারীরা। কারণ, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার বাসনা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে।
আরাকান প্রজেক্ট নামের নজরদারিকারী গ্রুপের পরিচালক ক্রিস লিওয়া বলেছেন, অনেক শরণার্থী অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা ও আশাহত বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরগুলোতে। এর ফলে তারা এসব শিবির ছাড়তে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বিশেষ করে তারা মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী আত্মীয়স্বজনদের কাছে যেতে চান। এক্ষেত্রে বোটে করে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো উপায় নেই। যদিও এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা নজরদারি করে যাচ্ছে।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের পর ১৮ মাস বা দেড় বছর হয়ে গেছে। এর মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন কমপক্ষে ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা। এর ফলে বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যটন স্পট কক্সবাজার পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।
সম্প্রতি পুলিশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা বলছে, বিদেশে কাজের অনুমতি দেয়া হয়েছে এবং উন্নত জীবনের সুযোগ রয়েছে। এ জন্য পাচারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ওদিকে ১৫ই নভেম্বর প্রত্যাবর্তন শুরু হওয়ার কথা ছিল রোহিঙ্গাদের। বলা হয়, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে প্রস্তুত। রোহিঙ্গাদের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও এ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। রোহিঙ্গারা দাবি তুলেছে, তাদের নাগরিকত্ব ও চলাচলের স্বাধীনতা সহ মৌলিক অধিকারগুলোর পূর্ণাঙ্গ নিশ্চয়তা দিতে হবে। তারপরেই তারা ফিরে যাবে মিয়ানমারে।
শুক্রবার ৩৫ জন মানুষকে মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য পারলিসের উপকূলে আটকে পড়া অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে তারা রোহিঙ্গা মুসলিম। এর ফলে কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, আবার সমুদ্রপথে ভয়াবহ উপায়ে মানুষ পাচার শুরু হয়েছে। ওই ৩৫ জনের ভিতরে রয়েছে ৯টি শিশু।
পারলিসের পুলিশ প্রধান নূর মুশার মোহাম্মদ বলেছেন, আমাদের মনে হয় এসব মানুষকে সমুদ্রের ভিতরে মাছ ধরা নৌকা থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে ভোর রাতে, যাতে তারা ভাটার সময় তীরে পৌঁছাতে পারেন। তবে এসব মানুষ কি মিয়ানমারের নাকি বাংলাদেশের তা নিশ্চিত করতে পারেন নি কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের রেকর্ড অনুযায়ী, এ বছর কক্সবাজার থেকে পাচার করার সময় কমপক্ষে ১০০ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিকী বলেছেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা যুক্ত এমন মানব পাচারের ৬৩টি মামলার শুনানি করেছে মোবাইল কোর্ট। কয়েক হাজার মানুষকে শিবির ছেড়ে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে।
একজন মুখপাত্র বলেছেন, সংকট শুরুর পর থেকে কক্সবাজারে কমপক্ষে ২১৭ জন পাচারের শিকার ব্যক্তিকে সনাক্ত করে তাদেরকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক এজেন্সি আইওএম। আইওএমের বাংলাদেশের প্রতিনিধি ফিওনা ম্যাকগ্রেগর বলেছেন, সত্যিকার অর্থে যে পরিমাণ রোহিঙ্গা পাচারের শিকার হচ্ছেন আমরা মনে করি এ সংখ্যা তার অংশ বিশেষ।
বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা বলছে, সামনেই বর্ষা মৌসুম। এপ্রিল মাস থেকে শুরু এ মৌসুমের। এ মৌসুমকে সামনে রেখে পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের ফিল্ড অফিসার ওমর সাদেক বলেছেন, বর্তমানে সমুদ্র শান্ত। এ জন্য পাচারকারীরা উৎসাহী হয়ে উঠেছে।
তবে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারীরা মনে করেন, অনেক পাচারকারীই রোহিঙ্গাদেরকে মালয়েশিয়া নিয়ে যেতে সক্ষম হবে না। একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে প্রতারণা করে দালালরা। তারা অর্থ নিয়ে আলাদা বোটে চলে যায়।
এ অবস্থায় আশ্রয় শিবিরের পরিবেশ ও অবস্থা উন্নত করার চেষ্টা করছে কর্মকর্তারা। সরকারও পাচারের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। পরিস্থিতি সম্পর্কে ভাল নজরদারি করার জন্য ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
আমিনা বেগমের বয়স ১৮ বছর। তার দাবি মিয়ানমারের এক সেনা সদস্য তাকে ধর্ষণ করেছে। তাই নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার চেয়ে বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণের মাধ্যমে তিনি মালয়েশিয়া যেতে চান।
তার মতো রোহিঙ্গা শিবিরে আরো অনেকে আছেন।
তারা আসন্ন বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে এমন ঝুঁকিপূর্ণ সফরের মাধ্যমে অন্য দেশে যেতে চান। আর এক্ষেত্রে পাচারকারীরা নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ ব্যবহার করছে। ফলে আইন প্রয়োগকারীদের থাকতে হয়েছে উচ্চ সতর্ক অবস্থায়।
আমিনা বেগম দোভাষীর মাধ্যমে টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, কক্সবাজারে আশ্রয়শিবিরে জীবনযাপনের মান এখন উন্নত হয়েছে। কিন্তু আমি জানি একদিন আমাকে মিয়ানমারে ফিরে যেতেই হবে। সেখানে আমার কোনো ভবিষ্যত নেই।
বাংলাদেশের আধা সামরিক বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিপি সম্প্রতি মিয়ানমার সীমান্তের কাছে তল্লাশি চালিয়ে আমিনা বেগম ও অন্য ১১ জনকে উদ্ধার করেছে। আইন প্রয়োগকারীরা এ বছর পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন কমপক্ষে ১০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে।
সম্প্রতি টেলিফোনে আরেক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বিয়ে করেছেন আমিনা বেগম। তার গ্রামে এভাবে বিয়ে বৈধতা দিয়েছেন বড়রা। এখন মালয়েশিয়ায় সেই স্বামীর কাছে যেতে চান আমিনা। এ জন্য তিনি দালালদের অর্থ দিয়েছেন।
আমিনা বেগমের মতো শারমিন খাতুনও মালয়েশিয়ায় তার স্বজনদের সঙ্গে একসঙ্গে বসবাস করতে যেতে চান। তিনিও পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছেন। উপকূলের কাছ থেকে বোটে করে অন্য আরো ২০ রোহিঙ্গার সঙ্গে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় তাদেরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বিজিবি কর্মকর্তারা বলেছেন, দালালরা আমিনা ও শারমিনের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভুলপথে পরিচালিত করছে। ২০১৫ সালে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার সীমান্তে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশীদের গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর মালয়েশিয়াগামী সব পাচারের রুট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আইন প্রয়োগকারীরা বলছেন, তা সত্ত্বেও পাচারকারীরা অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের পাচার করতে অর্থ নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
তবে পাচার বিরোধী সংগঠনগুলো আশঙ্কা করছে, বঙ্গোপসাগরে যেসব রুট ২০১০ সালের দিকে সক্রিয় ছিল তা আবার ব্যবহার করছে পাচারকারীরা। কারণ, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার বাসনা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে।
আরাকান প্রজেক্ট নামের নজরদারিকারী গ্রুপের পরিচালক ক্রিস লিওয়া বলেছেন, অনেক শরণার্থী অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা ও আশাহত বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরগুলোতে। এর ফলে তারা এসব শিবির ছাড়তে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বিশেষ করে তারা মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী আত্মীয়স্বজনদের কাছে যেতে চান। এক্ষেত্রে বোটে করে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো উপায় নেই। যদিও এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা নজরদারি করে যাচ্ছে।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের পর ১৮ মাস বা দেড় বছর হয়ে গেছে। এর মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন কমপক্ষে ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা। এর ফলে বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যটন স্পট কক্সবাজার পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।
সম্প্রতি পুলিশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা বলছে, বিদেশে কাজের অনুমতি দেয়া হয়েছে এবং উন্নত জীবনের সুযোগ রয়েছে। এ জন্য পাচারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ওদিকে ১৫ই নভেম্বর প্রত্যাবর্তন শুরু হওয়ার কথা ছিল রোহিঙ্গাদের। বলা হয়, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে প্রস্তুত। রোহিঙ্গাদের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও এ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। রোহিঙ্গারা দাবি তুলেছে, তাদের নাগরিকত্ব ও চলাচলের স্বাধীনতা সহ মৌলিক অধিকারগুলোর পূর্ণাঙ্গ নিশ্চয়তা দিতে হবে। তারপরেই তারা ফিরে যাবে মিয়ানমারে।
শুক্রবার ৩৫ জন মানুষকে মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য পারলিসের উপকূলে আটকে পড়া অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে তারা রোহিঙ্গা মুসলিম। এর ফলে কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, আবার সমুদ্রপথে ভয়াবহ উপায়ে মানুষ পাচার শুরু হয়েছে। ওই ৩৫ জনের ভিতরে রয়েছে ৯টি শিশু।
পারলিসের পুলিশ প্রধান নূর মুশার মোহাম্মদ বলেছেন, আমাদের মনে হয় এসব মানুষকে সমুদ্রের ভিতরে মাছ ধরা নৌকা থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে ভোর রাতে, যাতে তারা ভাটার সময় তীরে পৌঁছাতে পারেন। তবে এসব মানুষ কি মিয়ানমারের নাকি বাংলাদেশের তা নিশ্চিত করতে পারেন নি কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের রেকর্ড অনুযায়ী, এ বছর কক্সবাজার থেকে পাচার করার সময় কমপক্ষে ১০০ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিকী বলেছেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা যুক্ত এমন মানব পাচারের ৬৩টি মামলার শুনানি করেছে মোবাইল কোর্ট। কয়েক হাজার মানুষকে শিবির ছেড়ে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে।
একজন মুখপাত্র বলেছেন, সংকট শুরুর পর থেকে কক্সবাজারে কমপক্ষে ২১৭ জন পাচারের শিকার ব্যক্তিকে সনাক্ত করে তাদেরকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক এজেন্সি আইওএম। আইওএমের বাংলাদেশের প্রতিনিধি ফিওনা ম্যাকগ্রেগর বলেছেন, সত্যিকার অর্থে যে পরিমাণ রোহিঙ্গা পাচারের শিকার হচ্ছেন আমরা মনে করি এ সংখ্যা তার অংশ বিশেষ।
বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা বলছে, সামনেই বর্ষা মৌসুম। এপ্রিল মাস থেকে শুরু এ মৌসুমের। এ মৌসুমকে সামনে রেখে পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের ফিল্ড অফিসার ওমর সাদেক বলেছেন, বর্তমানে সমুদ্র শান্ত। এ জন্য পাচারকারীরা উৎসাহী হয়ে উঠেছে।
তবে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারীরা মনে করেন, অনেক পাচারকারীই রোহিঙ্গাদেরকে মালয়েশিয়া নিয়ে যেতে সক্ষম হবে না। একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে প্রতারণা করে দালালরা। তারা অর্থ নিয়ে আলাদা বোটে চলে যায়।
এ অবস্থায় আশ্রয় শিবিরের পরিবেশ ও অবস্থা উন্নত করার চেষ্টা করছে কর্মকর্তারা। সরকারও পাচারের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। পরিস্থিতি সম্পর্কে ভাল নজরদারি করার জন্য ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
No comments