অনলাইন থেকে-ধনী ও দরিদ্রের রাজনীতি
অতীত ও বর্তমানের রাজনৈতিক
প্রতিদ্বন্দ্বীদের কথা বলতে গেলে ঔপন্যাসিক স্কট ফিটজেরাল্ডের একটি কথা মনে
পড়ে : 'অতি ধনীদের সম্পর্কে যদি বলি, তারা তোমার বা আমার চেয়ে সম্পূর্ণ
ভিন্ন।
'ধনী লোকদের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করা
পাকিস্তানের রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের দৃশ্য। এখনকার বাস্তবতা হলো, অতি উচ্চ
ধনীরা পাকিস্তানের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছেন, যে জনগোষ্ঠী
মুদ্রাস্ফীতির জাঁতাকলে পড়ে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়ে পড়ছে। এ দুই চরম
শ্রেণীর মাঝামাঝি যাঁরা আছেন, তাঁরা রাজনীতির বাইরে পড়ে গেছেন। তাঁরা না
পারছেন নির্বাচন করতে, না পারছেন ভোটের লাইনে দাঁড়াতে। এখন ও সামনের
দিনগুলোতে এই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পছন্দ-অপছন্দ সীমাবদ্ধ থাকবে শরিফ ও
ভুট্টো-জারদারি পরিবারের মধ্যে। ইমরান খান তাঁর ক্যারিশমা দিয়ে এক পাশ থেকে
কিছুটা থাবা দিয়েছেন বটে, কিন্তু তিনিও তো ক্রিকেটধনী। তিনিও ওই
জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু থেকে সরাতে পারেননি।
পাকিস্তানের গণতন্ত্র হলো প্রকৃত অর্থে ধনিকতন্ত্র। ধনী লোকের শাসন। প্রকৃত সমস্যা গণতন্ত্রের পদ্ধতি নিয়ে নয়। প্রেসিডেন্ট পদ্ধতি, নাকি সংসদীয় পদ্ধতি, তা নিয়ে নয়। প্রকৃত সমস্যা হলো দরিদ্রদের সক্ষম করে তোলা। কোন অঞ্চলে বাস করে বা কোন ভাষায় কথা বলে, সেটা বড় কথা নয়, তারাই জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশ।
ধনীদের প্রভাবিত বর্তমান গণতন্ত্রের নিয়তি স্থানীয় সরকারকে বিমুখ করছে। এটা যে দরিদ্রদের ক্ষমতার ভাগ দিতে পারত, সে কারণে নয়, বরং এ কারণে যে স্থানীয় সরকার চারটি প্রাদেশিক সরকারে যাঁরা শাসন করছেন, তাঁদের ওপর নির্ভরতা কমাতে পারত। বর্তমান চারটি প্রদেশকে ভেঙে আরো যে প্রদেশ গঠন করার দাবি রয়েছে, তা সাধারণ মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করে নয়, বরং এলিট শ্রেণীর জন্য আরো ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু তৈরির উদ্দেশ্যে। সরকারের নতুন আসনগুলো, যেমন মুলতান অথবা বাহাওয়ালপুর অথবা বেলুচিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চল রয়ে যাবে দরিদ্রদের অধিকারের বাইরে। এর কারণ অর্থ ও প্রভাবের অভাব।
এখন এমনকি প্রাইমারি স্কুলের ব্যবস্থাপনাও চলে গেছে প্রাদেশিক সরকারের হাতে। প্রকৃত অর্থে ক্ষমতার প্রধান উৎস কেন্দ্রে, যেখানে অর্থ আছে। কেন্দ্র, প্রদেশ ও স্থানীয় প্রশাসনের রাজস্ব ও কার্যক্রমগুলো এখন সংবিধান অনুসারে পুনর্বণ্টন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
লেখক : কুনাওয়ার ইদ্রিস, পাকিস্তানের সাবেক আমলা।
দৈনিক ডন পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধের কিয়দংশ।
ভাষান্তর : মহসীন হাবিব
পাকিস্তানের গণতন্ত্র হলো প্রকৃত অর্থে ধনিকতন্ত্র। ধনী লোকের শাসন। প্রকৃত সমস্যা গণতন্ত্রের পদ্ধতি নিয়ে নয়। প্রেসিডেন্ট পদ্ধতি, নাকি সংসদীয় পদ্ধতি, তা নিয়ে নয়। প্রকৃত সমস্যা হলো দরিদ্রদের সক্ষম করে তোলা। কোন অঞ্চলে বাস করে বা কোন ভাষায় কথা বলে, সেটা বড় কথা নয়, তারাই জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশ।
ধনীদের প্রভাবিত বর্তমান গণতন্ত্রের নিয়তি স্থানীয় সরকারকে বিমুখ করছে। এটা যে দরিদ্রদের ক্ষমতার ভাগ দিতে পারত, সে কারণে নয়, বরং এ কারণে যে স্থানীয় সরকার চারটি প্রাদেশিক সরকারে যাঁরা শাসন করছেন, তাঁদের ওপর নির্ভরতা কমাতে পারত। বর্তমান চারটি প্রদেশকে ভেঙে আরো যে প্রদেশ গঠন করার দাবি রয়েছে, তা সাধারণ মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করে নয়, বরং এলিট শ্রেণীর জন্য আরো ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু তৈরির উদ্দেশ্যে। সরকারের নতুন আসনগুলো, যেমন মুলতান অথবা বাহাওয়ালপুর অথবা বেলুচিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চল রয়ে যাবে দরিদ্রদের অধিকারের বাইরে। এর কারণ অর্থ ও প্রভাবের অভাব।
এখন এমনকি প্রাইমারি স্কুলের ব্যবস্থাপনাও চলে গেছে প্রাদেশিক সরকারের হাতে। প্রকৃত অর্থে ক্ষমতার প্রধান উৎস কেন্দ্রে, যেখানে অর্থ আছে। কেন্দ্র, প্রদেশ ও স্থানীয় প্রশাসনের রাজস্ব ও কার্যক্রমগুলো এখন সংবিধান অনুসারে পুনর্বণ্টন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
লেখক : কুনাওয়ার ইদ্রিস, পাকিস্তানের সাবেক আমলা।
দৈনিক ডন পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধের কিয়দংশ।
ভাষান্তর : মহসীন হাবিব
No comments