শার্ট জিন্স পাঞ্জাবি তরুণদের পছন্দ
এবারের ঈদ কেনাকাটায় তরুণদের পছন্দের তালিকায় প্রিন্টেড শার্ট, পাঞ্জাবি আর জিন্স প্রাধান্য পাচ্ছে। এসব পণ্যের ক্রেতা বেশি। মানানসই শার্ট ও জিন্স কিনতে ক্রেতারা আস্থা রাখছেন ব্র্যান্ডের ওপর। তবে পাঞ্জাবির বিষয়টা একটু আলাদা। দেশীয় ব্র্যান্ডের পাশাপাশি ভারতীয় বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি বেশি বিক্রি হচ্ছে। সরেজমিন কয়েকটি শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবারের তুলনায় ভিড় কিছুটা কম। তবে যারাই শপিংমলে এসেছেন তাদের সবাই সাধ্যমতো কেনাকাটা করছেন। রাজধানীর সড়কের পাশে গড়ে ওঠা মার্কেটের তুলনায় শপিংমলে ক্রেতাদের ভিড় বেশি ছিল। এর কারণ শপিংমলের পরিবেশ। এদিক থেকে এগিয়ে ছিল দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক। খোলামেলা পরিবেশ, সব ব্র্যান্ড এক ছাদের নিচে থাকায় সকাল থেকে ক্রেতারা শপিংমলে ঢুকতে শুরু করেন। ইফতারের পর থেকে ভিড় বাড়তে থাকে। রাজধানীর শপিংমলগুলো ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে নানা কৌশল বেছে নিয়েছে। কোনো কোনো শপিংমল বাইরে উচ্চস্বরে স্পিকার বাজিয়ে শপিংমলে কী কী পণ্য বিক্রি হচ্ছে তা ক্রেতাদের জানাচ্ছে। আবার ঈদ কেনাকাটার কুপন দিচ্ছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গেছে এবার যমুনা ফিউচার পার্কের ঈদ আয়োজন। প্রতি এক হাজার টাকার কেনাকাটায় ক্রেতাদের স্ক্র্যাচ কার্ড দেয়া হচ্ছে। এ স্ক্র্যাচ কার্ড ঘষে ক্রেতারা পাচ্ছেন নিশ্চিত উপহার। উপহারের তালিকায় আছে প্রাইভেটকার, ইভো ও সুজুকির মতো ব্র্যান্ডেড মোটরসাইকেল, সোনার গহনা, ডায়মন্ডের অলঙ্কার, এলইডি টিভি, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ডিনার সেট, টি-সেট, ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, হাতঘড়ি ইত্যাদি। কার্ড স্ক্র্যাচ করে উপহার ক্রেতাদের হাতে তাৎক্ষণিকভাবে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন ফ্যাশন শো, সার্কাস শো ও ফায়ার ড্যান্স শো’র আয়োজন করেছে। মানসিক ক্লান্তি দূর করতে ক্রেতারা বিনামূল্যে এসব শো দেখতে পেরে মুগ্ধ। ফ্যাশন শো’তে নতুন নতুন ঈদ কালেকশনের পোশাক ক্রেতাদের সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যাতে সব শ্রেণীর ক্রেতার পছন্দসই পোশাক কিনতে সুবিধা হয়েছে।
উত্তরা থেকে ৫ বন্ধু মিলে যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজমুল ইসলাম বলেন, এক ছাদের নিচে সব ব্র্যান্ডের পোশাক পাওয়ায় যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করতে এসেছি। কারণ ব্র্যান্ডের পোশাকের দাম সব জায়গায় এক। কিন্তু অন্য শপিংমলে একসঙ্গে সব ব্র্যান্ড পাওয়া যায় না। যেটা যমুনা ফিউচার পার্কে আছে। তিনি জানালেন, প্রথম দফায় ঈদের পাঞ্জাবি কিনেছেন। এখন শার্ট-জিন্স ও জুতা কিনতে এসেছেন। নাজমুল আরও জানান, যমুনা ফিউচার পার্কে স্বচ্ছন্দে কেনাকাটা করা যায়। ঝক্কি-ঝামেলাও কম। শপিংমল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় এবং আকারে বড় হওয়ায় হুড়োহুড়ি নেই। খোলামেলা পরিবেশে বন্ধুদের নিয়ে ঈদের কেনাকাটায় আলাদা আনন্দ পেয়েছি। নিচ তলার ফ্রিল্যান্ড শোরুমের ম্যানেজার রাশেদুল ইসলাম জানান, এবারের ঈদে তরুণরা প্রিন্টেড ক্যাজুয়াল শার্ট, জিন্স ও পাঞ্জাবি বেশি কিনছেন। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী এসব পোশাকে রংয়ের ভেরিয়েশন আনা হয়েছে। আর্টিস্টির ম্যানেজার নাফিজ সাদিক বলেন, মিসরীয় কটনের তৈরি ফরমাল ও ক্যাজুয়াল শার্ট এবার বেশি বিক্রি হচ্ছে। এসব শার্ট সব বয়সী ক্রেতাদের শরীরের গড়ন অনুযায়ী নিজস্ব কারখানায় ডিজাইন ও সেলাই করা হয়। এছাড়া লিলেন কাপড়ের ওপর নানা রংয়ের ডিপডাই পাঞ্জাবি আনা হয়েছে। যা তরুণ ক্রেতাদের আকৃষ্ট করেছে, বিক্রিও ভালো হচ্ছে। দ্বিতীয় তলায় ম্যানস ওয়ার্ল্ডের ম্যানেজার আবদুল্লাহ ইবনে জাফর বলেন, এবার স্পেশাল কাবলি, প্রিন্টেড শার্ট বেশি বিক্রি হচ্ছে। তরুণ ক্রেতাদের এবারের ঈদ কেনাকাটায় এসব পোশাক প্রাধান্য পাচ্ছে। ঈদ গরমে হওয়ায় সুতি পোশাকেরই ওপর ডিজাইন করা হয়েছে।
No comments