ইতেকাফের মর্যাদা অশেষ
রমজানের শেষ দশকের বিশেষ আমল ইতেকাফ। এরই মধ্যে ঘরে ও মসজিদে ইতেকাফে বসেগেছেন মুসলিম উম্মাহ। ইতেকাফের আভিধানিক অর্থ অবস্থান করা বা কোনো স্থানে নিজেকে আবদ্ধ রাখা। শরিয়তের পরিভাষায় ইতেকাফকে বলা হয়, আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য এক বিশেষ সময় এবং বিশেষ নিয়মে নিজেকে মসজিদে আবদ্ধ রাখা। ইতেকাফের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লামা হাফেজ ইবনে রজব বলেছেন, ‘ইতেকাফের উদ্দেশ্য হল সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং স ষ্টার সঙ্গে সম্পর্ক কায়েম করা। আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় যত গভীর হবে, সম্পর্ক ও ভালোবাসা তত নিবিড় হবে এবং তা বান্দাকে পুরোপুরি আল্লাহর কাছে নিয়ে যাবে।
ক্ষমার ইতেকাফ : হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এভাবেই করে গেছেন। (অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত ইতেকাফের এ ধারা অব্যাহত ছিল)। (বুখারি ও মুসলিম)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতেন। হজরত নাফে বলেন, আমাকে হজরত ইবনে ওমর (রা.) ওই স্থানটি দেখিয়েছেন, যে স্থানে নবী (সা.) ইতেকাফ করতেন। (মুসলিম)।
ইতেকাফের মর্যাদা : হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইতেকাফকারী গোনাহ থেকে মুক্ত থাকে। তার সব নেক আমল এমনভাবে লিপিবদ্ধ হতে থাকে, যেভাবে তিনি নিজে তা করতেন। (ইবনে মাজাহ, মেশকাত)। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করবে, সে দুটি ওমরাহ ও দুটি হজ আদায় করার সওয়াব পাবে।’ (বুখারি)। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইতেকাফ করবে, আল্লাহ তায়ালা তার এবং জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তিনটি পরিখার দূরত্ব সৃষ্টি করবেন, প্রত্যেক পরিখার প্রশস্ততা দুই দিগন্তের চেয়েও বেশি। (বায়হাকি)। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ইতেকাফকারী নিজেকে পাপ থেকে মুক্ত রাখে এবং তার জন্য পুণ্য জারি রাখা হয়। (মেশকাত)। আলী বিন হোসাইন (রা.) নিজ পিতা থেকে বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে ১০ দিন ইতেকাফ করে, তা দুই হজ ও দুই ওমরার সমান।’ (বায়হাকি)। ইতেকাফের শর্ত হচ্ছে, মুসলমান হওয়া। ইতেকাফের জন্য নিয়ত করা। পুরুষদের জন্য মসজিদ ছাড়া ইতেকাফ হবে না। শরীর পাকপবিত্র হতে হবে। রোজাদার হতে হবে। জ্ঞানসম্পন্ন ও প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। আবশ্যকীয় প্রয়োজন ছাড়া মসজিদে অবস্থান করতে হবে।
ইতেকাফে করণীয় : বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত করা। তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার করা। বেশি করে দরুদ ও ইস্তিগফার পড়া। তাফসির অধ্যয়ন ও হাদিসের জ্ঞানচর্চা করা। বেশি করে নফল নামাজ পড়া, বিশেষ করে তাহিয়াতুল ওজু, সালাতুল এশরাক, সালাতুল চাশত, সালাতুল জাওয়াশ, সালাতুল হাজত, সালাতুল আওয়াবিন ও সালাতুল তাসবিহ ইত্যাদি নিয়মিত আদায় করা। দ্বীন সম্পর্কে পড়াশোনা করা ও করানো। ওয়াজ ও দ্বীনের প্রচার এবং প্রসারের কাজে লিপ্ত থাকা। মসজিদে থেকে করা যায়- এমন সব কাজই ইতেকাফ অবস্থায় করা যায়।
ইতেকাফে বর্জনীয় : নিরর্থক, অপ্রয়োজনীয়, অশ্লীল কথা বলা ও কাজ করা। দুনিয়াবি কোনো কাজ করা। একবারে চুপচাপ বসে থাকা। অন্যের গিবত করা। লেনদেন বা বেচাকেনা করা। বসে বসে বাজে গল্প বলা বা শোনা ইত্যাদি।
যেসব কারণে ইতেকাফ নষ্ট হয় : মসজিদ বা নারীদের ইতেকাফ স্থান থেকে বিনা প্রয়োজনে বের হলে। ইসলাম ত্যাগ করলে। অজ্ঞান, পাগল বা মাতাল হলে। নিয়মিত ঋতুস াব দেখা দিলে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে বা গর্ভপাত হলে। সহবাস করলে। বীর্যপাত ঘটলে কিন্তু স্বপ্নদোষ হলে নয়। ইতেকাফকারীকে জোরপূর্বক মসজিদ বা ইতেকাফের স্থান থেকে বের করে দিলে। শরিয়ত অনুমোদিত কোনো কাজে বাইরে গেলে যদি কেউ আটকে রাখে বা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে ইতেকাফ স্থানে যেতে দেরি হয় তবে ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে।
লেখক : শাইখুল হাদিস, দারুল হাবিব মাদ্রাসা, মিরপুর ঢাকা
ক্ষমার ইতেকাফ : হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এভাবেই করে গেছেন। (অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত ইতেকাফের এ ধারা অব্যাহত ছিল)। (বুখারি ও মুসলিম)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতেন। হজরত নাফে বলেন, আমাকে হজরত ইবনে ওমর (রা.) ওই স্থানটি দেখিয়েছেন, যে স্থানে নবী (সা.) ইতেকাফ করতেন। (মুসলিম)।
ইতেকাফের মর্যাদা : হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইতেকাফকারী গোনাহ থেকে মুক্ত থাকে। তার সব নেক আমল এমনভাবে লিপিবদ্ধ হতে থাকে, যেভাবে তিনি নিজে তা করতেন। (ইবনে মাজাহ, মেশকাত)। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করবে, সে দুটি ওমরাহ ও দুটি হজ আদায় করার সওয়াব পাবে।’ (বুখারি)। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইতেকাফ করবে, আল্লাহ তায়ালা তার এবং জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তিনটি পরিখার দূরত্ব সৃষ্টি করবেন, প্রত্যেক পরিখার প্রশস্ততা দুই দিগন্তের চেয়েও বেশি। (বায়হাকি)। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ইতেকাফকারী নিজেকে পাপ থেকে মুক্ত রাখে এবং তার জন্য পুণ্য জারি রাখা হয়। (মেশকাত)। আলী বিন হোসাইন (রা.) নিজ পিতা থেকে বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে ১০ দিন ইতেকাফ করে, তা দুই হজ ও দুই ওমরার সমান।’ (বায়হাকি)। ইতেকাফের শর্ত হচ্ছে, মুসলমান হওয়া। ইতেকাফের জন্য নিয়ত করা। পুরুষদের জন্য মসজিদ ছাড়া ইতেকাফ হবে না। শরীর পাকপবিত্র হতে হবে। রোজাদার হতে হবে। জ্ঞানসম্পন্ন ও প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। আবশ্যকীয় প্রয়োজন ছাড়া মসজিদে অবস্থান করতে হবে।
ইতেকাফে করণীয় : বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত করা। তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার করা। বেশি করে দরুদ ও ইস্তিগফার পড়া। তাফসির অধ্যয়ন ও হাদিসের জ্ঞানচর্চা করা। বেশি করে নফল নামাজ পড়া, বিশেষ করে তাহিয়াতুল ওজু, সালাতুল এশরাক, সালাতুল চাশত, সালাতুল জাওয়াশ, সালাতুল হাজত, সালাতুল আওয়াবিন ও সালাতুল তাসবিহ ইত্যাদি নিয়মিত আদায় করা। দ্বীন সম্পর্কে পড়াশোনা করা ও করানো। ওয়াজ ও দ্বীনের প্রচার এবং প্রসারের কাজে লিপ্ত থাকা। মসজিদে থেকে করা যায়- এমন সব কাজই ইতেকাফ অবস্থায় করা যায়।
ইতেকাফে বর্জনীয় : নিরর্থক, অপ্রয়োজনীয়, অশ্লীল কথা বলা ও কাজ করা। দুনিয়াবি কোনো কাজ করা। একবারে চুপচাপ বসে থাকা। অন্যের গিবত করা। লেনদেন বা বেচাকেনা করা। বসে বসে বাজে গল্প বলা বা শোনা ইত্যাদি।
যেসব কারণে ইতেকাফ নষ্ট হয় : মসজিদ বা নারীদের ইতেকাফ স্থান থেকে বিনা প্রয়োজনে বের হলে। ইসলাম ত্যাগ করলে। অজ্ঞান, পাগল বা মাতাল হলে। নিয়মিত ঋতুস াব দেখা দিলে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে বা গর্ভপাত হলে। সহবাস করলে। বীর্যপাত ঘটলে কিন্তু স্বপ্নদোষ হলে নয়। ইতেকাফকারীকে জোরপূর্বক মসজিদ বা ইতেকাফের স্থান থেকে বের করে দিলে। শরিয়ত অনুমোদিত কোনো কাজে বাইরে গেলে যদি কেউ আটকে রাখে বা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে ইতেকাফ স্থানে যেতে দেরি হয় তবে ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে।
লেখক : শাইখুল হাদিস, দারুল হাবিব মাদ্রাসা, মিরপুর ঢাকা
No comments