চাকরিতে বিধিবদ্ধ ‘ছাত্রলীগ কোটা’!
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে ধন্যবাদ না দিয়ে আসলে উপায় নেই। অবশেষে তিনি স্বীকার করেছেন যে, ছাত্রলীগ অপকর্ম করে। স্বীকার করেছেন তারা ‘টেন্ডারবাজি’ করে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের টেন্ডারের জন্য নিজেরা নিজেরা রক্তারক্তি করে। ওবায়দুল কাদের অকপটে মেনে নিয়েছেন, পদের হালুয়া-রুটির জন্য ছাত্রলীগ হরদম গ্রুপিং করে, মেতে উঠে বহুবিধ ‘অশুভ খেলায়’। সম্প্রতি বুয়েটে অনুষ্ঠিত ছাত্রলীগের এক সভায় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সময়ে ‘বিষফোঁড়া’ হয়ে ওঠা ছাত্রলীগকে নিয়ে এমন তীক্ষè ও ঝাঁঝালো মন্তব্য করলেন খোদ দলটির সাধারণ সম্পাদক। এর আগে ছাত্রলীগের গত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে এমন কঠোর সমালোচনা করেছিলেন ওবায়দুল কাদের। দলের ভেতর এমন প্রকাশ্য সংস্কার বা আত্মসংশোধনী মনোভঙ্গি, দলের অন্যতম শীর্ষ নেতার মুখে জনসমক্ষে কর্মীদের এমন সমালোচনা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনেকটা বিরল। একই সঙ্গে অভিনবও বটে। ক্ষমতা নাকি আফিমের মতো। আবার কেউ বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাদকের নাম ক্ষমতা। আর বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে উদ্যমী, সক্রিয় ও প্রাণশক্তিপূর্ণ অংশটি হল ওই দলের ছাত্র সংগঠন। একইসঙ্গে সেটি ওই দলের সবচেয়ে বড় অস্ত্রও বটে। তো যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে,
ক্ষমতার মাদকে ওই দলের ছাত্রনেতারা বরাবরই অবিশ্বাস্য ‘কেউকেটা’ হয়ে ওঠে। ক্ষমতার আফিমে বুঁদ হয়ে দলটির ছাত্রসংঘের কর্মীরা বরাবরই ‘ধরাকে সরা জ্ঞান করে’। তাদের দোর্দণ্ড প্রতাপে, লম্ফ-ঝম্ফে, হুমকি-ধমকিতে নিরীহ মানুষের প্রায়ই জান জেরবার অবস্থা। ক্ষমতার পালাবদলে ছাত্র সংগঠনের নামটা হয়ত পরিবর্তন হয়। কিন্তু আচরণ পরিবর্তন হয় না। কী শিবির, কী ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল- সবাই এ ক্ষেত্রে এক গোছার বাঁশ। গদি বদলের খেলায় সবারই সেই ‘যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ’ দশা। কিন্তু আগে কখনও এ ধরনের সংস্কারকামিতা দেখা যায়নি। এভাবে নেতার মুখে পরিবর্তনের ডাক শোনা যায়নি। কয়লা ধুলে ময়লা কতটুকু যাবে, জানি না। তারপরও ময়লা কমানোর এই আয়োজনকে স্বাগত জানাই। হতে পারে, দীর্ঘমেয়াদি সিংহাসন ভাবনায় আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগকে চলার পথের কাঁটা ভাবছে। তাই হয়ত ‘টাকার জন্য অপকর্ম করো না’ জাতীয় আহ্বান। উদ্দেশ্য যাই হউক, মন্ত্রীর এই আত্মশুদ্ধি অভিযান দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রশংসনীয়। মন্ত্রী ওই দিন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। ছাত্রলীগের ওই সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যখন ছাত্রত্ব চলে যাবে, বেকার হবে, চাকরির প্রয়োজন হবে, আমার কাছে আসবে। এটা নেত্রী আমাকে বলে দিয়েছেন। পরীক্ষা দিয়ে রিটেনে টিকলা না, বলবা ছাত্রলীগ করেছি, এটা কিন্তু মানব না। রিটেনে (লিখিত পরীক্ষা) টিকবে, তারপর। নিয়ম মতো আমি প্রত্যেকের জন্য চেষ্টা করব।’ (যুগান্তর, সমকাল ও প্রথম আলো)
এ বক্তব্যের কয়েকটা অর্থ হয়-
১. নিয়োগ পরীক্ষায় যে দুর্নীতি হয় কিংবা সরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলো যে রাজনৈতিক প্রভাবদুষ্ট- মন্ত্রীর বক্তব্যেই তা সুস্পস্ট। এ যাবৎ বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অযোগ্য ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়োগ বা পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রীর এই প্রকাশ্য ঘোষণা ওই অভিযোগকে সত্য প্রমাণিত করল।
২. দলহীন সাধারণ ছাত্র হলে বা অন্য দল করলে চাকরি পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু ছাত্রলীগ করলে সে সম্ভাবনা আছে। আর রিটেনে টিকলে, চাকরি নিশ্চিত। প্রার্থী যতই যোগ্য আর মেধাবী হোক না কেন, ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। কিন্তু মেধাবীর কপালে ছাত্রলীগের তকমা থাকলেই কেল্লাফতে- সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ।
৩. এ বক্তব্য বেকার ছাত্রলীগ কর্মীদের জন্য চাকরি লাভের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ভাইভাকে (মৌখিক পরীক্ষা) লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা বানিয়ে দিল। ভাইভাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলছি কারণ, যোগ্যতা ও শ্রম দিয়ে লিখিত পরীক্ষাটা পার পাওয়া যায়, কিন্তু ভাইবার ক্ষেত্রে সেটা নাও ঘটতে পারে। ভাইভাটা পর্যাপ্ত অনিশ্চিত, অনেক ক্ষেত্রে ভাগ্য বা উপস্থিত বুদ্ধির খেলা। সেই পরীক্ষা এখন ছাত্রলীগের জন্য কার্যকর অর্থে মাফ! তাদের কাজ শুধু রিটেনে টেকা। ব্যস সই।
৪. মন্ত্রীর ঘোষণায় চাকরির বাজারে প্রকাশ্যে নতুন একটা কোটা চালু হল। সেটা হল ‘ছাত্রলীগ কোটা’। ওই বক্তব্য প্রকৃতপক্ষে বেকারদের এখন ছাত্রলীগে উৎসাহিত করবে। দলের আদর্শে উদ্বুদ্ধ না হোক, চাকরির লোভে বেকার ছাত্ররা এখন ছাত্রলীগে নাম লেখাতে চাইবে।
৫. বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৫-১৬ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপের হিসাবে, দেশের বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ। তাতে ৭০ শতাংশই আবার যুবক। পরিবারের মধ্যে কাজ করে কিন্তু মজুরি পান না, এমন মানুষ ১ কোটি ১১ লাখ। সে ক্ষেত্রে তাদেরও বেকার বলা যায়। তাছাড়া আছে আরও ১ কোটি ৬ লাখ দিনমজুর, যাদের কাজের নিশ্চয়তা নেই। উচ্চ শিক্ষিতের মধ্যে এই বেকারত্বের পরিমাণ সর্বাধিক। বিশ্ববিদ্যালয় উত্তীর্ণ বেকার প্রায় ৩ লাখ ১৫ হাজার। বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন মতে, বর্তমানে বাংলাদেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতকই বেকার। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (আইএলও) মতে, বেকারত্ব বাড়ছে এমন ২০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান ১২তম। বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে সেতুমন্ত্রীর ঘোষণা কী বার্তা দিল? মন্ত্রীর ‘ছাত্রলীগ কোটা’ চাকরির বাজারে এই বেকার জনগোষ্ঠীকে (যারা ছাত্রলীগ নয়) কি দ্বিতীয় শ্রেণীর প্রার্থীতে পরিণত করল না? সরকারি চাকরি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সেই অধিকার বাস্তবায়নে, ছাত্রলীগ হলে মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী দেখবে, আর সাধারণ বা অন্য দল হলে তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরবে বিষয়টি কি ‘এক দেশে দুই নীতি’ হয়ে গেল না? ছাত্রলীগ না করাটা তবে কি এখন অপরাধ, নাকি অভিশাপ? অবশ্য অনেক ছাত্রলীগ কর্মী ওবায়দুল কাদেরের ‘রিটেনে টিকে এসো, তারপর দেখব’ বক্তব্যকে ফাঁকা বুলি মনে করছেন। এমরান মিয়া নামের সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী জানান, ‘চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছি প্রায় ২-৩ বছর। অসংখ্য ভাইবা দিয়েছি। কই বারবার অনুরোধেও তো কোনো মন্ত্রী সহজে ফোন দিতে চায় না। ছাত্রলীগ পরিচয় তো এখন কোনো কাজে আসে না। কারণ সুবিধা নেয়ার জন্য সবাই যে ছাত্রলীগ বনে গেছে!’ তাছাড়া অনেক পাঠক হয়ত জেনে থাকবেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে আশান্বিত হয়ে ওই দিনই এক পঙ্গু সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী তাকে খোলা চিঠি লেখেন। চিঠিতে ওই কর্মী বলেন, ‘২০১০ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারিতে শিবিরের হামলায় আমি পঙ্গু হই।
এ বক্তব্যের কয়েকটা অর্থ হয়-
১. নিয়োগ পরীক্ষায় যে দুর্নীতি হয় কিংবা সরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলো যে রাজনৈতিক প্রভাবদুষ্ট- মন্ত্রীর বক্তব্যেই তা সুস্পস্ট। এ যাবৎ বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অযোগ্য ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়োগ বা পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রীর এই প্রকাশ্য ঘোষণা ওই অভিযোগকে সত্য প্রমাণিত করল।
২. দলহীন সাধারণ ছাত্র হলে বা অন্য দল করলে চাকরি পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু ছাত্রলীগ করলে সে সম্ভাবনা আছে। আর রিটেনে টিকলে, চাকরি নিশ্চিত। প্রার্থী যতই যোগ্য আর মেধাবী হোক না কেন, ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। কিন্তু মেধাবীর কপালে ছাত্রলীগের তকমা থাকলেই কেল্লাফতে- সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ।
৩. এ বক্তব্য বেকার ছাত্রলীগ কর্মীদের জন্য চাকরি লাভের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ভাইভাকে (মৌখিক পরীক্ষা) লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা বানিয়ে দিল। ভাইভাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলছি কারণ, যোগ্যতা ও শ্রম দিয়ে লিখিত পরীক্ষাটা পার পাওয়া যায়, কিন্তু ভাইবার ক্ষেত্রে সেটা নাও ঘটতে পারে। ভাইভাটা পর্যাপ্ত অনিশ্চিত, অনেক ক্ষেত্রে ভাগ্য বা উপস্থিত বুদ্ধির খেলা। সেই পরীক্ষা এখন ছাত্রলীগের জন্য কার্যকর অর্থে মাফ! তাদের কাজ শুধু রিটেনে টেকা। ব্যস সই।
৪. মন্ত্রীর ঘোষণায় চাকরির বাজারে প্রকাশ্যে নতুন একটা কোটা চালু হল। সেটা হল ‘ছাত্রলীগ কোটা’। ওই বক্তব্য প্রকৃতপক্ষে বেকারদের এখন ছাত্রলীগে উৎসাহিত করবে। দলের আদর্শে উদ্বুদ্ধ না হোক, চাকরির লোভে বেকার ছাত্ররা এখন ছাত্রলীগে নাম লেখাতে চাইবে।
৫. বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৫-১৬ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপের হিসাবে, দেশের বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ। তাতে ৭০ শতাংশই আবার যুবক। পরিবারের মধ্যে কাজ করে কিন্তু মজুরি পান না, এমন মানুষ ১ কোটি ১১ লাখ। সে ক্ষেত্রে তাদেরও বেকার বলা যায়। তাছাড়া আছে আরও ১ কোটি ৬ লাখ দিনমজুর, যাদের কাজের নিশ্চয়তা নেই। উচ্চ শিক্ষিতের মধ্যে এই বেকারত্বের পরিমাণ সর্বাধিক। বিশ্ববিদ্যালয় উত্তীর্ণ বেকার প্রায় ৩ লাখ ১৫ হাজার। বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন মতে, বর্তমানে বাংলাদেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতকই বেকার। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (আইএলও) মতে, বেকারত্ব বাড়ছে এমন ২০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান ১২তম। বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে সেতুমন্ত্রীর ঘোষণা কী বার্তা দিল? মন্ত্রীর ‘ছাত্রলীগ কোটা’ চাকরির বাজারে এই বেকার জনগোষ্ঠীকে (যারা ছাত্রলীগ নয়) কি দ্বিতীয় শ্রেণীর প্রার্থীতে পরিণত করল না? সরকারি চাকরি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সেই অধিকার বাস্তবায়নে, ছাত্রলীগ হলে মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী দেখবে, আর সাধারণ বা অন্য দল হলে তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরবে বিষয়টি কি ‘এক দেশে দুই নীতি’ হয়ে গেল না? ছাত্রলীগ না করাটা তবে কি এখন অপরাধ, নাকি অভিশাপ? অবশ্য অনেক ছাত্রলীগ কর্মী ওবায়দুল কাদেরের ‘রিটেনে টিকে এসো, তারপর দেখব’ বক্তব্যকে ফাঁকা বুলি মনে করছেন। এমরান মিয়া নামের সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী জানান, ‘চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছি প্রায় ২-৩ বছর। অসংখ্য ভাইবা দিয়েছি। কই বারবার অনুরোধেও তো কোনো মন্ত্রী সহজে ফোন দিতে চায় না। ছাত্রলীগ পরিচয় তো এখন কোনো কাজে আসে না। কারণ সুবিধা নেয়ার জন্য সবাই যে ছাত্রলীগ বনে গেছে!’ তাছাড়া অনেক পাঠক হয়ত জেনে থাকবেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে আশান্বিত হয়ে ওই দিনই এক পঙ্গু সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী তাকে খোলা চিঠি লেখেন। চিঠিতে ওই কর্মী বলেন, ‘২০১০ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারিতে শিবিরের হামলায় আমি পঙ্গু হই।
দীর্ঘদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে কোনো মতে বেঁচে যাই। তারপর কেটে গেছে সাড়ে সাত বছর। গত ২৪ মে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়স শেষ হয়ে গেছে।... রিটেনে টেকার পরও কেউ একটা চাকরি দিতে পারেননি, দেননি... চাকরি না পেয়ে, বয়স শেষ হয়ে যাওয়াতে আমি এখন অন্যের জমিতে বর্গা চাষ করি। যা দিয়ে আমার স্ত্রী-পুত্র, বয়স্ক বাবা-মায়ের খরচ বহন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। অতএব জনাব সাধারণ সম্পাদকের কাছে পিয়ন/এমএলএসএস-এর একটি চাকরি চাচ্ছি, যেটা দিয়ে আমি আমার পরিবার-পরিজনসহ খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা পাই। আমার আশা এবং বিশ্বাস, মাননীয় সাধারণ সম্পাদক দলের জন্য আমার ত্যাগ, নির্যাতিত হওয়া, পঙ্গু হওয়া, অবদান সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমার একটা সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করবেন, নয়তো একবোতল বিষ উপহার দিবেন। নিবেদক- মো. সাইফুর রহমান বাদশা, সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।’ গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই চিঠি ব্যাপকভাবে আলোচিত। তারপরও যতদূর জানি, ওই কর্মীর এখনও পর্যন্ত কোনো গতি হয়নি। তবে মন্ত্রীর ওই চাকরির আশ্বাস ফাঁকাবুলি হলেই জাতির জন্য মঙ্গল। দলবাজি, টেন্ডারবাজি, মাস্তানির পুরস্কার ‘সরকারি চাকরি’ হলে, তা ওই আত্মঘাতী সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করবে। ওই দলবাজি যদি দলের কাছে ‘ত্যাগ’ মনে হয়, তবে তার মূল্যায়ন তো দলে পদ, যোগ্যতার নিরিখে স্থানীয় নির্বাচন বা জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থিতার সুযোগ হতে পারে। ৩৭তম বিসিএসে ১টি পদের বিপরীতে প্রায় ১৯৯ জন পরীক্ষা দিয়েছে। তো এমন প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশে একজন মেধাহীন ও অযোগ্য দলবাজকে সুযোগ দিতে গিয়ে অগণিত মেধাবীকে বঞ্চিত করা- কোনোভাবে কাম্য নয়। বিশেষত আওয়ামী লীগের মতো গণতন্ত্র ও মানবাধিকারে বিশ্বাসী দলের কাছে এ একেবারে অপ্রত্যাশিত। আশা করি, সরকার ও সেতুমন্ত্রীর সুমতি হবে।
আফতাব উদ্দিন ছিদ্দিকী রাগিব : আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট
aftabragib2@gmail.com
আফতাব উদ্দিন ছিদ্দিকী রাগিব : আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট
aftabragib2@gmail.com
No comments