কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন by বিকাশ দত্ত

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছে ট্রাইব্যুনাল।
চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ জনাকীর্ণ আদালতে পিনপতন নীরবতার মধ্যে এই ঐতিহাসিক আদেশ প্রদান করেছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দু’সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও জেলা জজ মোঃ শাহিনুর ইসলাম। ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে বলে, চার্জ ৫ ও ৬ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়েছে। ৪ নং অভিযোগটি প্রমাণিত না হওয়ায় এটি থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অপরদিকে চার্জ ১, ২ ও ৩ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কাদের মোল্লাকে ১৫ বছরের কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। এই সাজাগুলো এক সঙ্গে চলবে। অর্থাৎ তাকে ৩০ বছর সাজা ভোগ করতে হবে। রায় ঘোষণার দিন থেকে এই সাজা কার্যকর হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, ছাত্র ও আইনজীবীসহ আরও অনেককে হত্যার মোট ৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল। ৫টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এই রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর এটি দ্বিতীয় রায়। এই রায়ের আগে ২১ জানুয়ারি প্রথম রায় প্রদান করে ট্রাইব্যুনাল-২। সেই রায়ে বাচ্চু রাজাকার হিসেবে পরিচিত আবুল কালাম আজাদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- প্রদান করা হয়। আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পর আসামি ও প্রসিকিউশন উভয় পক্ষই আপীল করবে বলে জানিয়েছেন। রায় ঘোষণার ত্রিশ দিনের মধ্যে এই আপীল করার বিধান রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুয়ায়ী ২০(১) ধারায় রয়েছে, যিনি কনভিক্টেট হবেন তিনি আপীল করতে পারবেন। অন্য দিকে ২০(২) ধারাতে আছে যদি আসামি খালাস পায় সে ক্ষেত্রে সরকার পক্ষ আপীল করতে পারবে। এখানে একটি চার্জে খালাস দেয়া হয়েছে, সেই খালাসের বিরুদ্ধে সরকার প্রয়োজন মনে করলে আপীল করতে পারবে।
রায় ঘোষণর পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘প্রত্যাশা করেছিলাম ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগে কাদের মোল্লার মৃত্যুদ- হবে। কিন্তু রায়ের মাধ্যমে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। আমাদের পরবর্তী করণীয় পরে বসে ঠিক করা হবে। মামলার প্রসিকিউশন পক্ষের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী বলেছেন, কাদের মোল্লার কিরুদ্ধে দেয়া ট্রাইব্যুনালের যাবজ্জীবন সাজার রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ৫টিই আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি, তারপরও ট্রাইব্যুনাল কেন তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিল না তা আমার বোধগম্য না। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করব।
আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ বলেছেন, জনগণ যে রায় প্রত্যাশা করছিল তা থেকে হতাশ হয়েছে। সম্পূর্ণ রায় দেখে প্রসিকিউশন আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে। সুবিচার বঞ্চিত হয়েছে কিনা প্রসিকিউশন তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন উচ্চ আদালতে আপীল করতে পারে। উল্লেখ্য, চার্জ-৪ প্রমাণিত হয়নি। আইন প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, রায়ে আমরা হতাশ হয়েছি। ডিফেন্স পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করবেন।
যে ভাবে ঘোষণা করা হয় ॥ মঙ্গলবার সকাল পোনে এগারোটায় ট্রাইব্যুনাল-২ রায় ঘোষণার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ বসেন। প্রথমেই আসামি আব্দুল কাদের মোল্লা ট্রাইব্যুনালের কাছে কথা বলার জন্য সময় চান। এ সময় চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীন বলেন, প্লিস এখন কথা বলবেন না, বসুন। এর পরও কথা বলতে চান কাদের মোল্লা। তখন চেয়ারম্যান আবারও বলেন, মোল্লা সাহেব বসুন, আমরা শুরু করি। এরপরে চেয়ারম্যান বলেন, আজকে কাদের মোল্লার রায় দিতে যাচ্ছি। ওখানে স্থান সঙ্কুলান না হওয়াতে আমরা ট্রাইব্যুনাল-১ এ বসেছি। যখন ট্রাইব্যুনাল-২ এ বর্তমান ট্রাইব্যুনাল-১ চেয়ারম্যান ছিলেন তখন কাজটি অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বাকি কাজটি আমরা তিন জনে এগিয়ে নিয়ে গেছি।
চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীন আরও বলেন, এই রায়ে ১৩২ পৃষ্ঠার ৪২৯টি অনুচ্ছেদ আছে। রায়ের সামারিতে ৩৫ পৃষ্ঠা পড়া হবে। এখানে ১১১টি অনুচ্ছেদ আছে। সামারি জাজমেন্টটি ৩ ভাগে ৩ জনে পড়ে শেষ করব। সেই অনুযায়ী ৩৫ পৃষ্ঠা সামারি রায়টি চেয়ারম্যান ও ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য পড়ে শেষ করেন। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল বসলেও ৫০ মিনিট থেকে রায় পাঠ শুরু হয়। প্রথমে রায় পাঠ শুরু করেন সদস্য জেলা জজ মোঃ শাহিনূর ইসলাম। ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত তিনি পাঠ করেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে অপর সদস্য বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও সর্বশেষ দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে রায় ঘোষণা করে সমাপ্তি টানেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীন।
রায়ে কি আছে ॥ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। অপর পাঁচ অভিযোগের তিনটিতে সংশ্লিষ্টতা এবং দুটিতে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। রায়ে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫টিতে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। দুটিতে যাবজ্জীবন কারাদ-। তিনটিতে ১৫ বছরের করাদ- এবং একটি প্রমাণিত হয়নি। এর মধ্যে অভিযোগ ৫ ও ৬-এ কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। অভিযেগ ৫-এ রয়েছে মোল্লার নেতৃত্বে একাত্তরের ২৪ এপ্রিল তার সহযোগী আল-বদরবাহিনীর প্রায় ৫০ জন সদস্য নিয়ে পাকিস্তানী সেনাবহিনীর সহায়তায় আলুব্দী গ্রাম ঘিরে নির্বিচারে গুলি করে ৩৪৪ জনকে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৪ এপ্রিল ফজরের নামাজ পরে পাকবাহিনী হেলিকপ্টারযোগে তুরাগ নদীর পাড়ে আলুব্দী গ্রামের পাশ্চিম পাশে অবতরণ করে। পূর্বদিকে হতে স্থানীয় আলবদর বাহিনীর নেতা আসামি আব্দুল কাদের মোল্লা তার সহযোগী আলবদর বাহিনীর প্রায় ৫০ জন সদস্য ও কতিপয় অবাঙালী বিহারীদের সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় ও যোগসাজশে আলুব্দী গ্রামে ঘিরে ফেলে ও নিরীহ নিরস্ত্র মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে বাসু মিয়া, জহিরুল হক ওরফে জোরা মোল্লাসহ ৩৪৪ জনের অধিক লোককে হত্যা করা হয়।
চার্জ-৬ এ রয়েছে, আব্দুল কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্ধের সময় তার আলবদর বাহিনী নিয়ে শহীদ হযরত আলীর লস্করের বাড়িতে ঢুকে মধ্যযুগীয় তা-ব চালায়। ঢাকার মিরপুরের ১২ নং সেকশনের কালাপানির ৫নং লাইনের ২১ নম্বর বাড়িতে এই তা-ব চালানো হয়। সেখানে আব্দুল কাদের মোল্লার নির্দেশে হয়রত আলী লস্করকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার স্ত্রী আমেনা ও দুই শিশু মেয়ে খোদেজা ও তাছলিমাকে জবাই করে হত্যা করা হয়। ছোট ছেলে বাবুু যার বয়স মাত্র ২ বছর তাকে মাটিতে আছড়িয়ে হত্যা করা হয় । দ্বিতীয় মেয়ে আমেনাকে (১১) পালাক্রমে ১২ জন মিলে ধর্ষণ করে।
তিন অভিযোগে ১৫ বছরের কারাদ- ॥ কাদের মোল্লাকে তিনটি অভিযোগে ১৫ বছরের কারাদ- প্রদান করা হয়েছে।
চার্জ-১ ॥ আলবদর বাহিনীর নেতা আসামি আব্দুল কাদের মোল্লা ও তার সহযোগী অবাঙালী বিহারীদের নিয়ে বাংলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে জোরপূর্বক ধরে এনে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ১ নম্বর এবং ১ নং শাহ আলী মাজার থেকে হাতে দড়ি বেঁধে টেনে পুনরায় মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে ঈদগাহ মাঠে নিয়ে এসে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পল্লবের দেহ দুদিন ঝুলিয়ে রেখে তার সহযোগী আলবদর বাহিনীর সদস্য ও অবাঙালী বিহারী দ্বারা পল্লবের আঙ্গুলগুলো কেটে ফেলে এবং ৫ এপ্রিল তার নির্দেশে ও উপস্থিতিতে তার প্রধান সহযোগী আলবদর আক্তার গু-া পল্লবের বুকে পরপর ৫টি গুলি করে হত্যা করে।
চার্জ-২ ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় আলবদরবাহিনী নেতা আাসামি আব্দুল কাদের মোল্লা তার সহযোগী আলবদর সদস্য ও অবাঙালী বিহারীদের নিয়ে মিরপুরের মহিলা কবি মেহেরুন্নেছাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য দেখে বাড়ির সিরাজ নামক এক ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।
চার্জ-৩ ॥ ২৯ মার্চ সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে আরামবাগ হতে তার নিজ বাড়ির অবস্থা দেখার জন্য আসেন। বাসার সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় তিনি পুনরায় আরামবাগের উদ্দেশে রওনা দেয়ার জন্য মিরপুর ১০ নং বাসস্ট্যান্ডে গেলে স্থানীয় আলবদর বাহিনীর নেতা আসামি আব্দুল কাদের মোল্লা তার সহযোগী আলবদরা বাহিনীর সদস্য ও অবাঙালী বিহারীদের নিয়ে বাসে ওঠার আগেই খন্দকার আবু তালেবকে ধরে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর আসামি আব্দুর কাদের মোল্লার নিদর্েৃশে ও উপস্থিতিতে তাকে জবাই করে হত্যা করে।
যেটি প্রমাণিত হয়নি ॥ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ ৪ প্রমাণিত হয়নি। এই অভিযোগটি হলো
চার্জ-৪ ॥ আব্দুল কাদের মোল্লা তার সহযোগী বাহিনী আলবদর সদস্য ও পাকি সৈন্যদের নিয়ে হত্যাকা- ঘটিয়েছেন। একাত্তরের ২৫ নবেম্বর ভাওয়াল খানবাড়ি ও ঘাটারচর (শহীদনগর) এবং পার্শ¦বর্তী দুটি গ্রামে কাদের মোল্লা তার সহযোগী আলবদর বাহিনীর সদস্যসহ পাকিস্তানী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে নিরস্ত্র মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১১ জনকে হত্যা করে। হত্যাকা-ের পর স্থানীয় বাড়িঘড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
এ্যাটর্নি জেনারেল ॥ এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রায় ঘোষণার পর তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদ-ের রায়ে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ‘প্রত্যাশা করেছিলাম পাঁচ ও ছয় নম্বর অভিযোগে কাদের মোল্লার মৃত্যুদ- হবে। কিন্তু রায়ের মাধ্যমে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। আমাদের পরবর্তী করণীয় পরে বসে ঠিক করা হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিধান অনুযায়ী আদালতের দেয়া যাবজ্জীবনের রায় ৩০ বছর।
প্রধান সমন্বয়কারী ॥ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমম্বয়কারী অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান বলেছেন, রায়ে একটি অভিযোগ থেকে আাসামিকে খালাস দেয়া হেয়েছে। তার বিরুদ্ধে আপীলের চিন্তা ভাবনা রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল সব কিছু বিচার-বিবেচনা করে রায় দিয়েছে বলে আমরা মনে করি। ‘তবে ৪ নম্বর অভিযোগ থেকে আসামি খালাস পেয়েছে। এই খালাসের বিরুদ্ধেই কেবল আমরা আপীল করতে পারব বলে আমি মনে করি।
চীফ প্রসিকিউটর ॥ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু বলেছেন, ভেবেছিলাম রায়ে কাদের মোল্লার মৃত্যুদ- হবে। তবে ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছে তার বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই।
আব্দুর রাজ্জাক ॥ ডিফেন্স টিমের প্রধান ব্যারিস্টার আব্দুস রাজ্জাক বলেছেন, কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিরুদ্ধে আপীল করা হবে। মঙ্গলবার বিকেলে নিজ চেম্বারে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ মামলায় কাদের মোল্লাকে নির্দোষ ঘোষণা করে মুক্তি দেয়া উচিত ছিল। আমরা মনে করি, আপীল বিভাগে এ রায় সম্পূর্ণভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.