এক বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত অভিযুক্তরা জামিনে
নাটোরের বনপাড়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগকর্মীদের হামলা, ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নুর বাবু হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এক বছরেও সম্পন্ন করতে পারেনি পুলিশ। হত্যা মামলায় অভিযুক্ত সবাই উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। এদিকে বাবুর পরিবারকে অভিযুক্তরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রতিমুহূর্তে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নিহত বাবুর স্ত্রী মহুয়া নুর কচি বলেন, 'আমি তিনটি মেয়ে নিয়ে অসহায় অবস্থায় অতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করছি। বিএনপির নেতারা বাবুর পরিবারকে পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলেও গত এক বছরে তেমন কোনো সহায়তা পাইনি। অন্যদিকে বাবু হত্যা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আসামি নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কে এম জাকির হোসেন বনপাড়া পৌরসভার মেয়র এবং বনপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খোকন মোল্লা মাঝগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।'
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর বিএনপির সভাপতি সানাউল্লাহ নুর বাবুর নেতৃত্বে বনপাড়া বাজারের দিকে একটি মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগকর্মীদের হামলায় সানাউল্লাহ নুর বাবুসহ থানা যুবদলের সভাপতি রফিক সরদার ও বিএনপিকর্মী আলী আহত হন। এরপর তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কিছুক্ষণ পরেই বাবুর মৃত্যু হয়।
বাবুর স্ত্রী মহুয়া নুর কচি অভিযোগ করেন, প্রকাশ্যে এ ঘটনা ঘটলেও সেখানে কোনো পুলিশের উপস্থিতি ছিল না। হামলার ছবি তোলার সময় সন্ত্রাসীরা দৈনিক ডেসটিনির নাটোর প্রতিনিধি তোফাজ্জল হোসাইন, এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান মাসুদ রানাসহ তিনজন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে।
এ ঘটনার দুই দিন পর মহুয়া নুর কচি বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানা আওয়ামী লীগের ২৭ নেতা-কর্মীসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কে এম জাকির হোসেন, বনপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খোকন মোল্লা, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কে এম জিল্লুর রহমান জিন্নাহ, যুবলীগকর্মী মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু, মাসুদ সোনার, সৈকত, রেজাউল করিম রিকন, ছাত্রলীগকর্মী রাপ্পু, সেলিম, হাশেম, বাদশাহ, যুবলীগ নেতা গৌতম চন্দ্র, বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, রিপন সোনার, মালেক, মাহাবুব, জনি, আশরাফুল ইসলাম মিঠু, হাবিব, মমিন, বাবলু মোল্লা, লুৎফর, বাবু ও আশরাফকে অভিযুক্ত করা হয়।
মহুয়া নুর কচি জানান, উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় বাবুর শেষসম্বল একমাত্র বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। বাবু নিহত হওয়ার পর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতারা তাঁদের পুনর্বাসন এবং একটি বাড়ি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু গত এক বছরে উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সামান্য কিছু অনুদান ছাড়া তিনি কোনো সাহায্যই পাননি। বর্তমানে তিনটি মেয়েকে নিয়ে তিনি বনপাড়া পৌর এলাকায় মাত্র দেড় হাজার টাকার একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। অন্যদিকে গত বনপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও কারচুপি এবং দলের একটি অংশের বিরোধিতার কারণে মাত্র ৪০ ভোটের ব্যবধানে তাঁকে পরাজিত করা হয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, 'বাবু হত্যার এক বছরেও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়া প্রমাণ করে, আওয়ামী লীগ নেতারা ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য কালক্ষেপণ করছেন।' তিনি বলেন, 'বাবু হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আসামি কে এম জাকির হোসেনকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়ে এবং সর্বশক্তি নিয়োগ করে কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত করে প্রমাণ করতে চেয়েছে, জাকির সন্ত্রাসী নয়। এ অবস্থায় ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে আমি সন্দিহান। তবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অবশ্যই বাবু হত্যা ঘটনার বিচার করা হবে। অবশ্যই বাবুর পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে।' বাবু হত্যা মামলায় অভিযুক্ত কে এম জাকির হোসেন তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'আমি সন্ত্রাসীও নই, সন্ত্রাস লালনও করি না। রাজনৈতিক কারণে তামাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।' তিনি দাবি করেন, সন্ত্রাসী হলে জনগণ তাঁকে ভোট দিয়ে পৌর মেয়র নির্বাচিত করত না। তিনিও বাবু হত্যা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিরুল ইসলাম জানান, 'বাবু হত্যা মামলাটি প্রথমে ডিবি পুলিশের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছিল। পুলিশ বনপাড়া এবং ঢাকার সংসদ ভবনসংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে অভিযুক্ত কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছিল। এরপর মামলাটি সিআইডিতে দেওয়া হয়েছে। এখন মামলাটি কী অবস্থায় আছে তা আমার জানা নেই। তবে অভিযুক্ত সবাই জামিনে মুক্ত রয়েছেন।' বাবু হত্যা মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর বিএনপির সভাপতি সানাউল্লাহ নুর বাবুর নেতৃত্বে বনপাড়া বাজারের দিকে একটি মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগকর্মীদের হামলায় সানাউল্লাহ নুর বাবুসহ থানা যুবদলের সভাপতি রফিক সরদার ও বিএনপিকর্মী আলী আহত হন। এরপর তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কিছুক্ষণ পরেই বাবুর মৃত্যু হয়।
বাবুর স্ত্রী মহুয়া নুর কচি অভিযোগ করেন, প্রকাশ্যে এ ঘটনা ঘটলেও সেখানে কোনো পুলিশের উপস্থিতি ছিল না। হামলার ছবি তোলার সময় সন্ত্রাসীরা দৈনিক ডেসটিনির নাটোর প্রতিনিধি তোফাজ্জল হোসাইন, এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান মাসুদ রানাসহ তিনজন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে।
এ ঘটনার দুই দিন পর মহুয়া নুর কচি বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানা আওয়ামী লীগের ২৭ নেতা-কর্মীসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কে এম জাকির হোসেন, বনপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খোকন মোল্লা, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কে এম জিল্লুর রহমান জিন্নাহ, যুবলীগকর্মী মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু, মাসুদ সোনার, সৈকত, রেজাউল করিম রিকন, ছাত্রলীগকর্মী রাপ্পু, সেলিম, হাশেম, বাদশাহ, যুবলীগ নেতা গৌতম চন্দ্র, বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, রিপন সোনার, মালেক, মাহাবুব, জনি, আশরাফুল ইসলাম মিঠু, হাবিব, মমিন, বাবলু মোল্লা, লুৎফর, বাবু ও আশরাফকে অভিযুক্ত করা হয়।
মহুয়া নুর কচি জানান, উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় বাবুর শেষসম্বল একমাত্র বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। বাবু নিহত হওয়ার পর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতারা তাঁদের পুনর্বাসন এবং একটি বাড়ি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু গত এক বছরে উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সামান্য কিছু অনুদান ছাড়া তিনি কোনো সাহায্যই পাননি। বর্তমানে তিনটি মেয়েকে নিয়ে তিনি বনপাড়া পৌর এলাকায় মাত্র দেড় হাজার টাকার একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। অন্যদিকে গত বনপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও কারচুপি এবং দলের একটি অংশের বিরোধিতার কারণে মাত্র ৪০ ভোটের ব্যবধানে তাঁকে পরাজিত করা হয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, 'বাবু হত্যার এক বছরেও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়া প্রমাণ করে, আওয়ামী লীগ নেতারা ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য কালক্ষেপণ করছেন।' তিনি বলেন, 'বাবু হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আসামি কে এম জাকির হোসেনকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়ে এবং সর্বশক্তি নিয়োগ করে কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত করে প্রমাণ করতে চেয়েছে, জাকির সন্ত্রাসী নয়। এ অবস্থায় ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে আমি সন্দিহান। তবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অবশ্যই বাবু হত্যা ঘটনার বিচার করা হবে। অবশ্যই বাবুর পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে।' বাবু হত্যা মামলায় অভিযুক্ত কে এম জাকির হোসেন তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'আমি সন্ত্রাসীও নই, সন্ত্রাস লালনও করি না। রাজনৈতিক কারণে তামাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।' তিনি দাবি করেন, সন্ত্রাসী হলে জনগণ তাঁকে ভোট দিয়ে পৌর মেয়র নির্বাচিত করত না। তিনিও বাবু হত্যা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিরুল ইসলাম জানান, 'বাবু হত্যা মামলাটি প্রথমে ডিবি পুলিশের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছিল। পুলিশ বনপাড়া এবং ঢাকার সংসদ ভবনসংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে অভিযুক্ত কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছিল। এরপর মামলাটি সিআইডিতে দেওয়া হয়েছে। এখন মামলাটি কী অবস্থায় আছে তা আমার জানা নেই। তবে অভিযুক্ত সবাই জামিনে মুক্ত রয়েছেন।' বাবু হত্যা মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে।
No comments