প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর -সহযোগিতা ও মৈত্রী প্রসারিত হোক উন্নতির শর্তে
চীনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং আঞ্চলিক ও কৌশলগত দিক থেকে অনেক গুরুত্ব বহন করছে। বেইজিংয়ে ঘোষিত যৌথ ইশতেহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের এক ধাপ উত্তরণও ঘটেছে। অন্যতম বৃহত্ প্রতিবেশী এবং বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে চীনের সঙ্গে সদ্ভাব ও অর্থনৈতিক যোগাযোগে বাংলাদেশের স্বার্থ নিহিত রয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাসীন হওয়ার এক বছরের মাথায় এই সফরটি তাই হয়ে উঠেছিল সময়ের প্রয়োজন।
বাণিজ্য ঘাটতি মেটানো, উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থনৈতিক সহায়তা, জ্বালানি ও কৃষিতে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে চীন বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দৃশ্যত এই ইশতেহারকে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত চাহিদা ও স্বার্থ রক্ষার অর্জন বলে চিহ্নিত করা যায়। তবে চুক্তিকে দীর্ঘমেয়াদি অর্জনের সূচনা হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চাই দক্ষ ও কার্যকর যোগাযোগ এবং নিজস্ব স্বার্থ সম্পর্কে সচেতনতা।
চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বাংলাদেশের প্রায় দ্বিগুণ। আয়তন, সামর্থ্য ও প্রভাবের দিক থেকে চীন অনেক এগিয়ে থাকা একটি দেশ। ভূ-রাজনীতি ও বিশ্ব অর্থনীতিতে চীনের ভূমিকা নেতৃস্থানীয়। কিন্তু এর উপযুক্ত সুফল বাংলাদেশ যে সব সময় নিতে পেরেছে, তা নয়। চীন বাংলাদেশে বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ, অথচ দেশটির সঙ্গে বর্তমানে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের শিল্পক্ষেত্রে চীনা বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ যথেষ্ট নয়। মিয়ানমার হয়ে চীনের কুনমিংয়ের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ও গ্যাস-তেল পাইপলাইন প্রতিষ্ঠা এবং চীনা সহযোগিতায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ— এই বিষয়টিগুলো বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর সুরাহা হলে চট্টগ্রাম বন্দর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হয়ে ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান এবং চীনের বাণিজ্য পরিবহনের অন্যতম কেন্দ্র হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বেসামরিক কাজে পরমাণু শক্তির ব্যবহারের বিষয়ে চীনের কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা এখনো নিশ্চিত হয়নি। এ ছাড়া রয়েছে চীন থেকে আসা ব্রহ্মপুত্র নদের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্য আনার প্রশ্ন। বর্তমান যৌথ ইশতেহার ও সমঝোতাপত্রে এসব বিষয় উল্লিখিত হয়েছে। নতুন করে যুক্ত হয়েছে সার কারখানা প্রতিষ্ঠা, কৃষিতে প্রযুক্তি সহায়তা এবং দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নের প্রশ্নটি। বাংলাদেশ বাণিজ্য ঘাটতির পরিপূরক হিসেবে যে তিন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে, তার শর্ত যেন বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূল হয়, সেটিও দেখা দরকার।
ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার প্রশ্নটি বিবেচ্য ছিল। জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে এই ভারসাম্য রক্ষা অতীব কঠিন কাজ। চীনা পুঁজি ও চীনের বাজার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যেমন পরিপুষ্ট করতে পারে, তেমনি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীনের বৈশ্বিক প্রভাবের সুফলও বাংলাদেশ পেতে পারে। তাইওয়ান ও তিব্বতকে এক চীনের অংশ হিসেবে স্বীকার করার মাধ্যমে বাংলাদেশ চীনের প্রতি তার বন্ধুত্ব প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশে চীনা পণ্যের বাজারও প্রসারিত হচ্ছে। এ অবস্থায় উন্নয়নকামী বাংলাদেশকে বিনিয়োগ, সামরিক ও প্রাযুক্তিক সহায়তা গ্রহণ এবং উষ্ণ কূটনৈতিক যোগাযোগ নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগী হতে হবে। এবং এর ভিত্তি হতে হবে পারস্পরিক সুবিধা ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক।
নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস দুই বৃহত্ প্রতিবেশীর সঙ্গে সহযোগিতা ও মৈত্রীর মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার যে ধারণা সামনে এনেছিলেন, ভারতের পর চীনের সঙ্গে সহযোগিতা প্রসারিত করার পর তা কতটা কাজে দেয়, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।
বাণিজ্য ঘাটতি মেটানো, উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থনৈতিক সহায়তা, জ্বালানি ও কৃষিতে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে চীন বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দৃশ্যত এই ইশতেহারকে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত চাহিদা ও স্বার্থ রক্ষার অর্জন বলে চিহ্নিত করা যায়। তবে চুক্তিকে দীর্ঘমেয়াদি অর্জনের সূচনা হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চাই দক্ষ ও কার্যকর যোগাযোগ এবং নিজস্ব স্বার্থ সম্পর্কে সচেতনতা।
চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বাংলাদেশের প্রায় দ্বিগুণ। আয়তন, সামর্থ্য ও প্রভাবের দিক থেকে চীন অনেক এগিয়ে থাকা একটি দেশ। ভূ-রাজনীতি ও বিশ্ব অর্থনীতিতে চীনের ভূমিকা নেতৃস্থানীয়। কিন্তু এর উপযুক্ত সুফল বাংলাদেশ যে সব সময় নিতে পেরেছে, তা নয়। চীন বাংলাদেশে বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ, অথচ দেশটির সঙ্গে বর্তমানে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের শিল্পক্ষেত্রে চীনা বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ যথেষ্ট নয়। মিয়ানমার হয়ে চীনের কুনমিংয়ের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ও গ্যাস-তেল পাইপলাইন প্রতিষ্ঠা এবং চীনা সহযোগিতায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ— এই বিষয়টিগুলো বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর সুরাহা হলে চট্টগ্রাম বন্দর দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হয়ে ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান এবং চীনের বাণিজ্য পরিবহনের অন্যতম কেন্দ্র হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বেসামরিক কাজে পরমাণু শক্তির ব্যবহারের বিষয়ে চীনের কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা এখনো নিশ্চিত হয়নি। এ ছাড়া রয়েছে চীন থেকে আসা ব্রহ্মপুত্র নদের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্য আনার প্রশ্ন। বর্তমান যৌথ ইশতেহার ও সমঝোতাপত্রে এসব বিষয় উল্লিখিত হয়েছে। নতুন করে যুক্ত হয়েছে সার কারখানা প্রতিষ্ঠা, কৃষিতে প্রযুক্তি সহায়তা এবং দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নের প্রশ্নটি। বাংলাদেশ বাণিজ্য ঘাটতির পরিপূরক হিসেবে যে তিন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে, তার শর্ত যেন বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূল হয়, সেটিও দেখা দরকার।
ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার প্রশ্নটি বিবেচ্য ছিল। জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে এই ভারসাম্য রক্ষা অতীব কঠিন কাজ। চীনা পুঁজি ও চীনের বাজার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যেমন পরিপুষ্ট করতে পারে, তেমনি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীনের বৈশ্বিক প্রভাবের সুফলও বাংলাদেশ পেতে পারে। তাইওয়ান ও তিব্বতকে এক চীনের অংশ হিসেবে স্বীকার করার মাধ্যমে বাংলাদেশ চীনের প্রতি তার বন্ধুত্ব প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশে চীনা পণ্যের বাজারও প্রসারিত হচ্ছে। এ অবস্থায় উন্নয়নকামী বাংলাদেশকে বিনিয়োগ, সামরিক ও প্রাযুক্তিক সহায়তা গ্রহণ এবং উষ্ণ কূটনৈতিক যোগাযোগ নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগী হতে হবে। এবং এর ভিত্তি হতে হবে পারস্পরিক সুবিধা ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক।
নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস দুই বৃহত্ প্রতিবেশীর সঙ্গে সহযোগিতা ও মৈত্রীর মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার যে ধারণা সামনে এনেছিলেন, ভারতের পর চীনের সঙ্গে সহযোগিতা প্রসারিত করার পর তা কতটা কাজে দেয়, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।
No comments