মোবাইলে সাঈদীর আদিরস! মিথ্যা প্রমাণে লাখ ডলার পুরস্কার

মোবাইল ফোনে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আদিরসাত্মক সংলাপ নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে দেশ-বিদেশে। সম্প্রতি এমন কয়েকটি অডিও ক্লিপ ইন্টারনেটে ছেড়েছে বাংলা লিকস্ নামে ইন্টারনেটভিত্তিক এক সংগঠন।
শুক্রবার রাতে অনলাইন ডেইলি বাংলানিউজের কাছেও এমন বেশ কয়েকটি অডিও ক্লিপ পাঠিয়েছে তারা।

জামায়াতের পক্ষ থেকে এসব ক্লিপকে নকল বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও প্রকাশিত সব ক্লিপকে আসল দাবি করে প্রকাশকারীরা বলছে, এমন আরো ক্লিপ আছে তাদের হাতে। শিগগিরই সেগুলো প্রকাশ করা হবে।

এমনকি প্রকাশিত ক্লিপ কেউ ভুয়া প্রমাণ করতে পারলে তাকে এক লক্ষ মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়ারও ওপেন চালেঞ্জ ছুঁড়েছে বাংলা লিকস। 

এসব টেপে একাধিক নারীর সঙ্গে সাঈদীর অশ্লীল, আদিরসাত্মক ও কুরুচিপূর্ণ সংলাপ রয়েছে।

যদিও এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা বলছেন, এমন অডিও টেপ কেউ বের করলে তা হবে অপপ্রচার। জামায়াত নেতাদের অনেকেই এসব অডিও শোনেন নি।

শিবিরের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা দাবি করছেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন ব্লগার এটা নেটে ছেড়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ``বিতর্কিত স্কাইপি সংলাপের পর সাঈদীকে একজন খারাপ মানুষ হিসেবে তুলে ধরতে এ অডিও টেপ বানানো হয়েছে।``

বস্তুত ‘সুবক্তা হিসেবে ইসলামী বয়ান দিয়ে সাধারণ মুসল্লিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা সাঈদীর সুনাম ধসিয়ে দিতেই’ এ উদ্যোগ বলে অভিযোগ উঠছে জামায়াত-শিবিরের তরফে। 

এমনকি কে বা কারা এমন অডিও ক্লিপস বাজারে ছাড়ছে তা চিহ্নিত করা গেছে বলেও দাবি তুলছে জামায়াত-শিবির।

এ অডিও ক্লিপটি ব্লগার অমি রহমান পিয়াল `সাঈদীর সেক্সটেপ` বলে বাজারে ছেড়েছেন বলে অভিয়োগ তুলছেন তারা।

কিন্তু এ অভিযোগ অস্বীকার করে অমি রহমান পিয়াল বাংলানিউজকে বলেন, ``এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। ফেসবুকে আমার ছবি দিয়ে সেখানে বাড়তি টেক্সট জুড়ে দেওয়া হয়েছে।”

বিস্ময় প্রকাশ করে পিয়াল বলেন, “আমি নাকি সাঈদীর অডিও টেপ সফটওয়ারের মাধ্যমে তৈরি করে বাজারে ছেড়েছি। প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এরকম একটা ঘৃণ্য ও মিথ্যে অভিযোগের মাধ্যমে আমার ও আমার পরিবারকে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।``

সাঈদীর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগের সাইটে অন্যতম প্রচারণাকারী সরওয়ার ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ``কম্পিউটারে ভয়েস চেঞ্জারের মাধ্যমে সাঈদীর  কণ্ঠস্বর নকল করা হয়েছে। কম্পিউটারে ভয়েস অপশনে নয়েজ কমানো, ইকো সংযোজনা, ব্যাকগ্রাউন্ড সংযোজন, কথার গতি কমানো বাড়ানো করে বিভিন্ন সফটওয়ারের মাধ্যমে সাঈদীর কণ্ঠস্বরের মতো করা হয়েছে।``

তবে এমন যুক্তির সঙ্গে দ্বিমত রয়েছে আইটি বিশেষজ্ঞদের।

সফটওয়ার নির্মাতা ও কম্পিউটার প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ``নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির কণ্ঠস্বর আরেকজনের মতো করার কোনো প্রযুক্তি বিশ্বে এখনো নেই। ভয়েস চেঞ্জার অপশনের মাধ্যমে পিচ কমিয়ে বা বাড়িয়ে কোন কণ্ঠকে মেয়েলি বা পুরুষালি ও হিজড়েদের মতো করা যায়। এটা ব্যবহার করা হয় কারও কণ্ঠ যেন শনাক্ত করা না যায়। কিন্তু নির্দিষ্ট একজনের কণ্ঠ তা করা সম্ভব নয়। এমন যদি করা যেতো তাহলে বিশ্বের খ্যাতনামা অভিনেতা গায়কদের কণ্ঠস্বর বিকৃত করে অনেক কিছুই করা হতো।``

বিশেষজ্ঞদের মত, ডিকটেটিং ও ভয়েস রিকগনাইজিং সফটওয়্যার, ভয়েস ইমিটেটর, মিমিক্‌রি এবং স্পিচ এডিটিং-এর মাধ্যমে কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করা গেলেও একজনের কণ্ঠ আরেকজনের মতো করা যায় না। এর নজির বিশ্বের এখনও নেই।

বাংলা লিকস্ এর চ্যালেঞ্জ
এ অডিও ক্লিপ যারা নকল মনে করছেন তাদের প্রতি ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলা লিকস।

সংগঠনটির দাবি, এ কণ্ঠস্বর যে সাঈদীর তার পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ রয়েছে। যদি কেউ এসব ক্লিপ মিথ্যা প্রমাণ করতে পারে, তাহলে তাকে একলক্ষ ইউএস ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে। বাংলা লিকস্ দাবি করে, যারা শুনবেন সবাই যেন ক্রমানুসারে সব প্রকাশনা শোনেন।

এ টিমে কাজ করা একজন সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, ``এ ক্লিপ যারা অবিশ্বাস করছেন, তারা ২/১টি শুনেই মন্তব্যে বসে যান যে, আমরা কোনো ফেরেশতার নাম নিয়ে বদনাম রটাচ্ছি।

তাদের দাবি ওগুলো নাকি ফেইক, কণ্ঠ নকল করে বানানো। যদি তাই হয় তাহলে অবিশ্বাসকারীদের  অনুরোধ করব, যেকোনো বিখ্যাত একজনের সঙ্গে অন্য যে কারো কথোপকথনের একটি উদাহরণ প্রকাশ করুন। আমরা অধীর আগ্রহে আপনার প্রকশনাটি গ্রহণ করব।``

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলা লিকস টিমে বিশ্বের ৮ টি দেশ থেকে সর্বমোট ২৪ জন সদস্য কাজ করছে। শিগগিরই তারা সাঈদীর সংলাপ দাবি করে আরও কয়েকটি অডিও ক্লিপ ইন্টারনেটে ছাড়বে।

1 comment:

  1. Please vist a new web portal www.onlinebanglamedia.com and share with others..Many Thanks

    ReplyDelete

Powered by Blogger.