সম্পাদক সমীপে- হরতাল পালনে নীতিমালা দরকার

জনমানুষের অধিকার আদায়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে দেশে রাজনৈতিক দল হরতাল আহ্বান করতে পারে, এ অধিকার অন্যায় বা অগণতান্ত্রিক নয়। হরতাল পালনের নামে গাড়ি ভাংচুর, যানবাহনে আগুন, বোমার আগুনে মানুষ হত্যা, এ্যাম্বুলেন্স যেতে বাধা, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে বাধা, বোমা-ককটেল নিক্ষেপ এসব হরতালবিরোধী কাজ।
খাদ্য তথা মাছ, চাল, ডাল, তরিতরকারি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বহনকারী গাড়ি ভাংচুর, যাতায়াতে বাধা হরতাল সমর্থন করে না। গণতন্ত্র রক্ষার প্রয়োজনে জনগণের কল্যাণে শান্তিপূর্ণ উপায়ে হরতাল পালন করতে নিষেধ নেই। হরতাল আহ্বান করলে কমপক্ষে ১৫ দিন আগে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে দেশবাসীকে অবহিত করে জানাতে হবে কী দাবি নিয়ে হরতাল ডাকা হচ্ছে। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে এমন বিষয়ে শুধু হরতাল পালন করা যেতে পারে।
কোন দল বা ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় অথবা নিছক শত্রুতাবশত অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক উপায়ে সরকার পতনের জন্য এবং অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় আসার জন্য হরতাল ডেকে জনগণকে কোনভাবেই হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। হরতালের নামে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করে গুলি করে মানুষ হত্যা দ-নীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য। যারা হরতাল আহ্বান করবে তারাই জানমাল, সম্পদ ও যানবাহন রক্ষা করবে এবং ক্ষতি হলে জবাবদিহি করবে। গণতান্ত্রিক সরকারেরও কর্তব্য, জনগণের স্বার্থ রক্ষায় জানমাল ও সম্পদ রক্ষার অঙ্গীকার পূরণে হরতাল পালন করতে নীতিমালা তৈরি করে মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন করে জনগণকে অবহিত করা। গণতান্ত্রিক দেশে যারা হরতাল সমর্থন করে না তাদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হলে হরতাল আহ্বানকারী দল ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। জনগণ ও রাষ্ট্রীয় ক্ষতি হলে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করার বিধান থাকবে। হরতাল আহ্বানকারী দল অন্যায় কাজে লিপ্ত হলে এবং অহেতুক ভাংচুর, আগুন, বোমা, ককটেল ব্যবহার ও জানমাল সম্পদের ক্ষতি করলে সে দল ও দলের নেতা বা দলের প্রধান তথা সভাপতি, সেক্রেটারিকে আটক করে তদন্তপূর্বক বিচারের আওতায় আনতে হবে। পুলিশ অবহেলা বা বাড়াবাড়ি করলে চাকরি হারাবে। হরতালের নামে যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ কারও নেই। জনগণ কোন দলকেই সেরূপ ক্ষমতা সংবিধানে প্রদান করেনি। দেশবাসীর প্রত্যাশা, হরতাল পালনে সরকার একটি নীতিমালা তৈরি করুক।
মোঃ মেছের আলী, শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ

রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থা
রাজধানী ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভালমানের কমিউটার রেল সার্ভিস এবং প্রয়োজনীয় রেললাইন স্থাপন করা দরকার। পাশাপাশি ঢাকায় বাসসার্ভিস, হাঁটার সুব্যবস্থা ও জ্বালানিমুক্ত যানের সমন্বয়ে সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। বর্তমানে ঢাকা মহানগরীর যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ও কয়েকটি ফ্লাইওভার নির্মাণাধীন। ১১ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত ২৬ কি.মি. এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যানজট, প্রাইভেটকার, দূষণ ও জ্বালানি নির্ভরতা বৃদ্ধি করবে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। তাছাড়া এই ব্যয়বহুল প্রকল্প টঙ্গি-কমলাপুর রেলের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ব্যাহত করবে। বর্তমানে ঢাকা শহরে ৯৫ শতাংশ মানুষ হেঁটে, রিকশায়, বাস ও রেলসহ গণপরিবহনে যাতায়াত করে। এসবের সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার। তাই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েরে পরিবর্তে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ, বাস, হাঁটা ও রিকশার সমন্বয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে পৃথক রেল মন্ত্রণালয় গঠন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। সুতরাং নিরাপদ যাতায়াতের জন্য রেলের উন্নয়ন জরুরী।
জাহেদুর রহমান ইকবাল, বাগমারা, রাজশাহী

ভুট্টা ও সরিষা চাষে সহায়তা করুন
একটানা বৃষ্টির কারণে ভুট্টা ও সরিষা চাষে কৃষকের প্রায় কয়েক হাজার একর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর, কৃষি প্রধান চলনবিলে ভুট্টা ও সরিষা চাষ উপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে কৃষকেরা বহু আশা-আকাক্সক্ষা নিয়ে ভুট্টা ও সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েন। কৃষকরা মনে করেছিলেন, এবার ভুট্টা ও সরিষা মৌসুম। এ দুটি ফসলে তারা প্রচুর লাভবান হবেন। এ জন্যই কৃষক জমি চাষ, কীটনাশক, সার, বীজসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু সংগ্রহ করে জমিতে ভুট্টো ও সরিষা বীজ রোপণ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, একটানা বৃষ্টির জন্য কৃষকের এ পূর্ণ আশা অপূর্ণই থেকে গেল। বছরের শুরুতেই ভুট্টো ও সরিষা চাষে এমন ক্ষতি হওয়ার ফলে চলনবিলের সব কৃষকই আজ হতাশায় পর্যবসিত। এ ক্ষতিতে কৃষকের প্রতিটি নিঃশ্বাস হচ্ছে-অস্বস্তিকর। শুধু কৃষকই নন, এই একটানা বৃষ্টির কারণে দেশেরও ক্ষতি হলো প্রায় কয়েকশ’ কোটি টাকা। যদি আমাদের দেশের কৃষি ব্যাংকগুলো বিনা সুদে সকল কৃষককে ঋণ দিত তবে, তারা ভুট্টা ও সরিষা চাষের হতাশা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেত। এমতাবস্থায় দেশের সব কৃষককে আবার ভুট্টা ও সরিষা চাষে আগ্রহী করবার জন্য কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

দিলরুবা রিজওয়ান দিনা
আয়েশা, সিংড়া-নাটোর।

No comments

Powered by Blogger.