স্মৃতির শহর দিলস্নীতে

নয়াদিলস্নী, ১১ জানুয়ারি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম রাষ্ট্রপতি ভবনে সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর শুরু হয়েছে। ১৯৭৬-১৯৮১ সাল পর্যনত্ম এ শহরেই তিনি নির্বাসিত জীবন যাপন করেছেন।
এ সফর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেকার সম্পর্ক জোরদার করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দৃ'দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা, তার স্বামী এম এ ওয়াজেদ এবং দু'সনত্মান সজীব ও সায়মা পুতুল একসময় এ শহরের লাজপত নগরের ৫৬, রিং রোডে থাকতেন। পরে তারা উঠেছিলেন পান্দারা পার্কের সি বস্নকের একটি ফ্ল্যাটে। ভারত সফরের এই ব্যসত্ম সময়ে শেখ হাসিনা লাজপত নগর এবং পান্দারা পার্কে তাঁর পুরোনো বাড়িতে যাবেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ সোমবার সারাদিনই তিনি ব্যসত্ম সময় কাটান।
শেখ হাসিনার পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুত্ব রয়েছে প্রণব মুখাজর্ীর। শেখ মুজিবের হত্যাকা-ের পর শেখ হাসিনা যখন দিলস্নীতে ছিলেন সে সময় ভারতের উপমন্ত্রী ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার প্রণব মুখাজর্ীর স্ত্রী শুভ্রা মুখাজর্ীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারেন শেখ হাসিনা।
দিলস্নীতে বসবাসের সময় শেখ হাসিনার ভাল পরিচয় ছিল ফুটবল খেলোয়াড়দের কাছে পরিচিত মুখ ডি কে বোসের সঙ্গে।
তিনি বলেন, 'পান্দারা পার্কে থাকার সময় তার (হাসিনা) সঙ্গে আমার সাক্ষাত হয়েছিল। সেটা ছিল সম্ভবত ১৯৮০ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসেবে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। সে সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা, বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলা সাহিত্য এবং ফুটবল- এসব বিষয়ে আলোচনা হতো বলেও জানান তিনি। লোদী রোডে অবস্থিত ভারতীয় আনত্মর্জাতিক কেন্দ্রে প্রায়ই হাসিনাকে মধ্যাহ্ন ভোজ বা রাতের খাবার খেতে দেখা যেত। সে সময় এ এল খাতিব নামে এক বাংলাদেশী সাংবাদিক হাসিনার সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। ইনি পরে শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি বই লেখেন।
বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় সে সময় শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে ছিলেন। হত্যাকা-ের পর হাসিনা প্রথমে যুক্তরাজ্য এবং পরে ভারতে আশ্রয় চান। বাংলাদেশে ফেরার আগ পর্যনত্ম (১৯৮১ সালের ১৭ মে পর্যনত্ম) শেখ হাসিনা দিলস্নীতে ছিলেন। এখানে থাকাকালীন তিনি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত হন।
শেখ হাসিনা প্রথমে লাজপত নগরের ৫৬ রিং রোডের ছিলেন এবং ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর মাসে পান্দারা পার্কের বাড়িতে ওঠেন। পরে ৫৬, রিং রোডের এ বাড়িটি নয়াদিলস্নীতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাযর্ালয়ে পরিণত হয় এবং চানক্যপুরীর কূটনৈতিক পাড়ায় যাওয়ার আগ পর্যনত্ম দূতাবাস বেশ কিছুদিন এখানেই ছিল।
ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য পাইওনিয়ারের সাংবাদিক বিবেক শুক্লা লিখেছিলেন, "পান্দারা পার্কের কথা অবশ্যই তার (হাসিনা) মনে থাকবে।"
মঙ্গলবার ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আই কে গুজরালের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন শেখ হাসিনা। '৯০ এর দশকের শেষ নাগাদ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তার সঙ্গে শেখ হাসিনার বেশ ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

No comments

Powered by Blogger.