হরতাল ঘৃণা করি, আলোচনার বিকল্প নেই ॥ মার্কিন রাষ্ট্রদূত

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডব্লিউ ড্যান মজেনা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের আহ্বান করা হরতালের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি হরতাল ঘৃণা করেন বলে কঠোর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।
পাশাপাশি বলেছেন, রাজনৈতিক সঙ্কট দূর করতে আলোচনার কোন বিকল্প নেই। এর আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবাট ও ব্লেক বাংলাদেশ সফরে এসে হরতালের সমালোচনা করেন। শনিবার সকালে আমেরিকান ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি হরতাল ঘৃণা করি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে আলোচনার কোন বিকল্প নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধানে গেলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র অব্যাহত থাকবে।’ এর আগে গত ১১ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফর শেষে ফেরার সময় এক সংবাদ সম্মেলনে হরতাল এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মতবিরোধ দূর করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংসদে আলোচনায় বসার পরামর্শ দেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও ব্লেক। তাঁর মতে, আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংলাপের মাধ্যমেই মতপার্থক্য দূর করা সম্ভব। আর নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোন আইন সংশোধনের প্রয়োজন মনে করলে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সংসদেই যাওয়া উচিত।
তিনি বলেন, হরতালকে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বিরাট সমস্যা। হরতাল দেশের ভাবমূর্তিতে ক্ষুণœ করার পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগ আনার প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করে। কারণ বিনিয়োগকারীরা স্থিতিশীলতা, নিশ্চয়তা ও সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ চায়। আর গরিব মানুষ, যারা দিন আনে দিন খায়- তাদের জন্যও হরতাল চরম ক্ষতিকর। তিনি বলেন, ‘তাই আমি মনে করি, উভয় দলেরই হরতাল এড়িয়ে চলা উচিত এবং শান্তিপূর্ণভাবে মতবিরোধ দূর করা প্রয়োজন। আর জাতীয় সংসদেই আলোচনার মাধ্যমে সব মতবিরোধ নিরসনের চেষ্টা করা জরুরি।’
এর আগে গত নবেম্বরে জামায়াতে ইসলামীর সাম্প্রতিক সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। এ ধরনের সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ার কোন যৌক্তিকতা নেই মন্তব্য করে দূতাবাসের বিবৃতিতে সমস্যা সমাধানে সংলাপ আয়োজনের ওপর জোর দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা ও অন্যান্য জেলায় সংঘটিত সাম্প্র্রতিক সহিংসতায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস উদ্বিগ্ন। এই সহিংসতার ফলে যারা আহত ও ব্যক্তিগতভাবে সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তাদের প্রতি রয়েছে আমাদের সহমর্মিতা। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে জড়িত হওয়া একটি মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার, সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। আমরা বিশ্বাস করি, সংলাপই যে কোন মতপার্থক্য দূরীকরণের উত্তম পন্থা।

No comments

Powered by Blogger.