কর্মৰেত্রেও নারীরা নিরাপদ নয়

স্টাফ রিপোর্টার কর্মৰেত্রে নারীরা নিরাপদ নয়। প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানিসহ নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় ও যৌন উত্তেজক কথাবার্তাসহ বিভিন্ন উপায়ে পুরম্নষসহকর্মী, ইমিডিয়েট বস ও প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছে।
কাজের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরও অনেক সময় ফাইল হাতে ধরে দিয়ে বসের রম্নমে বসে থাকতে বাধ্য করছে। বসের কথামতো কাজ না করলে চাকরি হারানোর মতো ঘটনা ঘটছে। আবার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সহপাঠীদের দ্বারাও যৌন হয়নরানির শিকার হচ্ছে। মেধা থাকা সত্ত্বেও শিৰকের মন যুগিয়ে না চলার কারণে প্রথম শ্রেণী পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বেশিরভাগ সময় নিজের মানসম্মানের কথা বিবেচনা করে নারীরা এর বিরম্নদ্ধে উচ্চবাচ্য করছে না। মুখ বুজে সহ্য করছে। এর প্রভাব সরাসরি নারীর ব্যক্তি জীবন ও কর্মৰেত্রের ওপর পড়ছে। ব্যক্তিজীবনে নানা দুশ্চিনত্মা ও হতাশার সম্মুখীন হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানে ভাল কর্মদৰতা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে প্রমোশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জব স্যাটিসফেকশন। কর্মৰেত্রে যৌন হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে হলে মেয়েদের আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে হবে। করতে হবে সোচ্চার প্রতিবাদ। কিনত্ম এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন আইন না থাকায় হয়রানি বন্ধে কর্যকর কোন পদৰেপ গ্রহণ করা যাচ্ছে না। নীতিমালা বা আইন তৈরির মাধ্যমে এ হয়রানি বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে প্রত্যেক অফিস-আদালতে যৌন হয়রানিবিষয়ক অভিযোগ কেন্দ্র খুলতে হবে।
সোমবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে কর্মৰেত্রে নারীর যৌন হয়রানি বিষয়ে জাতীয় সংসদের মহিলা এমপিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বক্তারা এ কথা বলেন। দি এলায়েন্স ফর ওমেন ওয়ার্কার রাইটস ( এডবিস্নউডবিস্নউআর) আয়োজিত সভায় সংসদের প্রায় ১৫ নারী সদস্য ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপিকা ইশরাত শামীমের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন ডেমোক্র্যাসি ওয়াচের প্রধান তালেয়া রহমান, ড. হালিদা হানম, আফরোজা পারভিন, কাজী বেবী প্রমুখ। সাংসদদের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন খাদিজা খাতুন শেফালি, নিলুফার চৌধুরী মনি, রাশেদা বেগ হীরা, নুরজাহান বেগম এবং জোবেদা খাতুন ।
আলোচনাসভায় বক্তারা নারীর হয়রানি বন্ধে আইন প্রণয়নের জন্য কিছু সুপারিশ সংসদে পেশ করার জন্য সাংসদদের কাছে তুলে ধরেন। সুপারিশগুলো_ কর্মৰেত্রে নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। অধিক সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে তাদের শিৰিত করে তুলতে হবে। পুরম্নষ সহকর্মীদের যৌন হয়রানির প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে মহিলা শ্রমিকদের যৌন হয়রানি সম্পর্কে তুলে ধরতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাতে হবে। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পাঠ্যসূচী জেন্ডার বিষয়ে তুলে ধরতে হবে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণকে জানাতে হবে, এটা একটা অপ্রত্যাশিত আচরণ। পরিবারে সমতার ধারণাও শিৰা দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে খাদিজা খাতুন শেফালী এমপি বলেন, মেয়েরা পরিবারসহ সবার কাছেই অবহেলিত। বিভিন্ন ৰেত্রে এবং বিভিন্নভাবে তারা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাছাড়া মোবাইল ফোনের অপব্যবহারের কারণে মেয়েরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। সাংসদ নিলুফার চৌধুরী মনি বলেন, কর্মৰেত্রে মহিলা সাংসদরাও নিরাপদ নয়।। এমনকি মাদ্রাসার হুজুররাও ছাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়েদের মেধা থাকা সত্ত্বেও প্রথম বিভাগ পেতে হলে তার সৌন্দর্যকে বিকিয়ে দিতে হয়। মেয়েদের হয়রানি বন্ধে তৃণমূূল পর্যায়ে কর্মসূচী নিতে হবে। অফিস-আদালতে আলাদা নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। তালেয়া রহমান বলেন, পুরম্নষ মেয়েদের যৌন হয়রানির মাধ্যমে তার ৰমতার বহির্প্রকাশ ঘটিয়ে থাকে। কর্মৰেত্রে নারীদের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তার মাধ্যমে তারা এ কাজটি প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.