স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের

স্টাফ রিপোর্টার বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো গঠন করা হচ্ছে। রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর এবং রাষ্ট্রায়ত্ত তিন ব্যাংকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এ কথা বলেন।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথক এক বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ সচিব ইলিয়াস আহমেদের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া সমগ্রিক অর্থনৈতিক সমন্বয় সংক্রানত্ম আরও একটি বৈঠক সরকারের বিগত ৬ মাসের অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রকাশের সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়েছে।
বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে দেশের ব্যবসা বাণিজ্যও ৬০ শতাংশই বেসরকারী মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো পরিচালনা করছে। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে পলস্না দিয়ে চলতে হবে। এ কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো করার নীতিগত সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ জন্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে মন্ত্রণালয়ে প্রসত্মাব পাঠাতে বলা হয়েছে। তাদের প্রসত্মাব পাওয়ার পর যাচাই বাছাই করে বেতন কাঠামো চূড়ানত্ম করা হবে।
কেমন হবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বেতন কাঠামো সে সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতীয় বেতন কাঠামোর সঙ্গে খুব বেশি অসামাঞ্জস্যপূর্ণ হবে না। কারণ কেউ অনেক বেশি বেতন পাবেন আর কেউ খুব সামান্য পাবেন এমনটা দৃষ্টিকটু হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেখা গেছে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারী অন্য চাকুরেদের চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করেন। তবে যে বেতন কাঠামো প্রসত্মাব করা হবে তা পর্যায়ক্রমে বাসত্মবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আপাতত রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ার ছাড়ার কোন পরিকল্পনা নেই সরকারের। তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এখনও সরকারের উপর নির্ভরশীল। যখন তারা নিজেরা চলতে পারবে বলে মনে করা হবে তখনই শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধানত্ম নেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী সমন্বয় কমিটির বৈঠকের ফলাফল তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকা-ে স্বচ্ছতা আনতে এখন থেকে প্রতি তিন মাস পর পর অর্থনৈতিক সমীৰা তুলে ধরা হবে। আগামী ১৯ জানুয়ারি জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের অগ্রগতি প্রকাশ করা হবে। পরবর্তী তিন মাসের হিসাব দেয়া হবে ফেব্রম্নয়ারিতে। এতে ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে জনগণ সরকারের বিগত ৬ মাসের কর্মকা- সম্পর্কে ধারণা পাবে। তিনি বলেন, ৬ মাসে এডিপি বাসত্মবায়ন হয়েছে ২৮ শতাংশ টাকার অঙ্কে, যার পরিমাণ ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গত বছর প্রথম ছয় মাসে এডিপি বাসত্মবায়ন হয়েছিল ২৩ ভাগ, টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এখনও আশা করছি সাড়ে ৬-এর উপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারব। দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, কর আদায় লৰ্যমাত্রা অর্জন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এখনও মনে করছি কোন অবস্থাতে মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশর উপরে যাবে না। মূল্যস্ফীতি দুই সংখ্যায় উনি্নত হতে পারে আইএমএফ-এর আশঙ্কা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা আইএমএফ-এর ধারণার সঙ্গে একমত নই। তিনি বলেন, বর্তমানে আনত্মর্জাতিক বাজারে চিনির দাম কিছুটা বেড়েছে, তাছাড়া অন্যান্য নিত্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রয়েছে। দেশে খাদ্য উৎপাদন এবং মজুদ সনত্মোষজনক বলে জানান তিনি।
প্রবাসীদের কল্যাণের বিষয়টি মহাজোট সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার উলেস্নখ করে তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক নামে একটি সেবামূলক ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছি। এ ব্যাংক কিভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায় সে জন্য প্রবাসী কল্যাণ সচিব ইলিয়াস আহমেদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রয়েছেন। এ কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে চূড়ানত্ম সিদ্ধানত্ম নেয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.