জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি

সরকার সব ধরনের জ্বালানি তেল পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন ও কেরোসিনের মূল্য আরেক দফা বৃদ্ধি করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে তেলের মূল্যবৃদ্ধির এ ঘোষণা দেয়া হয়।
এবারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা আর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি সাত টাকা বাড়ল। শুক্রবার থেকে এই নতুন মূল্য কার্যকর হয়েছে। সর্বশেষ ২০১১ সালের ২৯ আগস্ট জ্বালানি তেলের সর্বশেষ মূল্যবৃদ্ধির পর নতুন বছরে প্রথম দফা মূল্যবৃদ্ধি করা হলো। জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ-এর ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের পূর্বশর্ত হিসেবে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করেছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ এখনও আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। এ বাস্তবতা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ মঞ্জুরির পূর্বশর্ত না মানলে ঋণ পাওয়া যাবে না; আবার ঋণ না পাওয়া গেলে উন্নয়ন কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে। দাতা সংস্থার এই বাধ্যবাধকতার বেড়াজালে পড়ে অনিচ্ছাসত্ত্বেও অনেক সময় সরকার শর্ত মেনে ঋণ নিতে বাধ্য হয়। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রেও উল্লিখিত কারণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে, এটা বোঝাই যায়। ইতোপূর্বেকার সরকারগুলোর আমলেও এর কোনো ব্যতিক্রম ছিল না। তবে মূল্যবৃদ্ধির কারণ যা-ই থাকুক, দেশে সব ধরনের জ্বালানি তেলের পুনর্বার মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনজীবনে যেমন বিরূপ প্রভাব পড়বে তেমনি সরকারের এই শেষ বছরে অর্থাৎ নির্বাচনী বছরে বেশ বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখিও করতে পারে।
বর্তমান এই মূল্যবৃদ্ধির কারণে দরিদ্র ও সাধারণ মানুষ এবং কৃষিজীবী জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে সবচেয়ে বেশি। বর্তমান সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার, কৃষিবান্ধব সরকারও। সুতরাং সাধারণ জনগণ এবং কৃষকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সরকার কৃষি ও সেচকাজে ব্যবহৃত ডিজেল এবং গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের ব্যবহার্য কেরোসিনের ওপর থেকে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করবে এটাই সবার প্রত্যাশা।

No comments

Powered by Blogger.