রোকেয়া ভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ॥ একাডেমিক ভবনে তালা

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ৫ জানুয়ারি ॥ চার দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো অনতিবিলম্বে আবাসিক হল ও লাইব্রেরী চালু করা, বাস বৃদ্ধি এবং স্থায়ী মেডিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করা।
এসব দাবিতে শনিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলনকারীরা ভিসির এ কথা মেনে না নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য সময় বেঁধে দেয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অপরাধে বহিষ্কৃত ৩ ছাত্রলীগ কর্মীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টির উদ্দ্যেশ্যেই এ আন্দোলন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষক সমিতির তীব্র আন্দোলনে ৩ ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসব বহিষ্কৃত ছাত্রদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে ছাত্রলীগের একটি অংশ নেপথ্য থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে ৪ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। শনিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে আন্দোলকারীরা একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের একাংশের নেতা হাদিউজ্জামান হাদির নেতৃত্বে ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস ঘুরে আবার সেখানে গিয়ে শেষ হয়। বক্তব্য রাখে-হাদিউজ্জামান হাদি, লিটন, আলী রাজ এবং মুন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল ও লাইব্রেরী চালু করা, বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং স্থায়ী মেডিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করার দাবি জানায়।
বিশ্ববিদ্যালয়লের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের মুখে মাসখানিক আগে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রলীগের তিন কর্মীকে বহিষ্কার করার পর কয়েক শিক্ষক এবং একটি পক্ষ ওই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে নানা চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এতে ওই পক্ষটি ছাত্রলীগের একটি অংশকে আন্দোলনের জন্য বেছে নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আব্দুল জলিল মিয়া জানান, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের দাবি মেনে নিয়েছি। হলের নির্মাণ কাজ শেষের পথে বিদ্যুত সংযোগের কাজ চলছে। এজন্য কিছু দিন সময় লাগবে। লাইব্রেরী ভবনও নির্মাণ করা হয়ে গেছে। প্রায় ৫০ লাখ টাকার বই কেনা হচ্ছে। আগামী মার্চ মাসের প্রথম দিনই হল খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছি। তবে আন্দোলনকারীরা ভিসির এ কথা মেনে না নিয়ে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়। ভিসি বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয়।
অপরদিকে, নর্থ বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (নডিস) এর অধিভুক্তি বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধকরণ, শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল চালুকরণ ও পরিবহন পুলসহ সকল প্রশাসনিক কাজে শিক্ষকদের সম্পৃক্তকরণের দাবিতে শনিবার বিকেলে ক্যাম্পাসে অবস্থান ধর্মঘট করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষক। এরা হলেন, বাংলা বিভাগের প্রভাষক ড. তুহিন ওয়াদুদ, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাফিজুর রহমান সেলিম, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের গোলাম ফারুক, ব্যবস্থা বিভাগের ড. আপেল মাহমুদ, ইতিহাস বিভাগের ড. গোলাম রব্বানী।

No comments

Powered by Blogger.