‘ঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে আমার বোনটি বাঁচত’

‘ঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে আমার বোন হয়তো বেঁচে যেত’—দিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর মারা যাওয়া মেডিকেলের ছাত্রীর ভাই গতকাল শনিবার এই আক্ষেপ করেছেন। আগের দিন ওই ছাত্রীর ছেলেবন্ধুও এক সাক্ষাৎকারে হাসপাতালের জরুরি চিকিৎসাসেবা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
এই দুজনের এমন বক্তব্যের পর দিল্লিতে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ছয় ব্যক্তিকে আগামী সোমবার আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের একটি আদালত। ১০ জানুয়ারি এই মামলার শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
ছাত্রীর ভাই গতকাল বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘আমার বোন আমাকে বলেছে, বাস থেকে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার পর সে সাহায্যের জন্য পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু এরই মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা পেরিয়ে যায়।’ ছাত্রীর ভাই বলেন, এই সময়ে তাঁর শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তিনি বলেন, ‘পথচারীর সহায়তা এবং দ্রুত চিকিৎসাসেবা পেলে আমার বোন সুস্থ হতে পারত। আমাদের জনগণের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। বিপদগ্রস্তদের দিকে হাত বাড়াতে প্রস্তুত থাকা দরকার।’
গত শুক্রবার ছাত্রীটির ছেলেবন্ধু অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁদের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে সংবেদনশীল আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও পুলিশ ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিকে ছেলেবন্ধুর সাক্ষাৎকার প্রচার করায় ভারতীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ, চ্যানেলটি সাক্ষাৎকারদাতার মুখ অস্পষ্ট না করেই দেখিয়েছে, যা বেআইনি। কারণ, সাক্ষাৎকারদাতা একটি ধর্ষণ মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
ওই ছাত্রীর ছেলেবন্ধু ও ভাইয়ের অভিযোগের পর নয়াদিল্লিতে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা অমিতাল প্রসাদ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘ছেলেবন্ধুটি যে অভিযোগ করেছেন, আমরা সবাই সে রকমটাই সন্দেহ করেছি। এ ঘটনায় পুলিশকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’ কৃতী পল্লব নামের একজন গৃহবধূ বলেন, রাজধানীতে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের ব্যর্থতার বিষয়টি ইতিমধ্যে ফুটে উঠেছে। ভারতের রাজধানী ‘ভারতের ধর্ষণের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এএফপি ও এনডিটিভি।

No comments

Powered by Blogger.