তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীত বেড়েছে, চলছে শৈত্যপ্রবাহ

স্টাফ রিপোর্টার কুয়াশা ঘনীভূত হওয়ার কারণে ক্রমেই শীত পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এর সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ যোগ হওয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় সার্বিক তাপমাত্রা ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে।
ঢাকা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগের দিনের চেয়ে সোমবার সার্বিক তাপমাত্রা ২ থেকে ৫ ডিগ্রী পর্যনত্ম কমে গেছে। আগামী ২ থেকে ৩ দিন এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে দীর্ঘদিন ধরে যে শৈত্যপ্রবাহ চলছে তা সহজেই কমার লৰণ নেই। মঙ্গলবারও দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। রাতের তাপমাত্রাও অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানা গেছে। সোমবার দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রী; যা আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৫ ডিগ্রী বেশি। আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান জানান, কুয়াশার কারণেই শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। আরও কয়েকদিন এ অবস্থা থাকতে পারে। তবে কুয়াশা বাড়লে শীতের অনূভুতি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এদিকে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় শীতজনিত রোগে আক্রানত্ম হয়ে আরও ৯ জনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। ঘন কুয়াশার কারণে আনত্মর্জাতিক বিমানে কিছুটা সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে। ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনস সকাল ৭ টায় ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণের কথা থাকলে তা ২ ঘণ্টা পরে অবতরণ করে। কাতার এয়ারওয়েজ ২ ঘণ্টা পরে এবং বিজিএ রোম সকাল সাড়ে ৮ টায় অবতরণের কথা থাকলেও তা বেলা দেড়টায় অবতরণ করে। তবে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া কোন বিমানের সিডিউল পরিবর্তন হয়নি, যথানিয়মেই তা ছেড়ে গেছে।
সোমবার সারাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কঙ্বাজারে ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় ঢাকায় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাপ ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং সন্ধ্যায় ৬৬ শতাংশ। ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ছিল ২০ দশমিক ৭ ডিগ্রী এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ২৫ দশমিক ৩ এবং সর্বনিম্ন ১৪ দশমিক ৭, রাজশাহী বিভাগে ২০ ডিগ্রী এবং ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রী, খুলনাতে ২৩ ডিগ্রী এবং ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রী, বরিশালে ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রী এবং ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রী এবং সিলেটে সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রী এবং সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, শ্রীমঙ্গলসহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বিরাজমান শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে শীতজনিত রোগে আক্রানত্ম হয়ে কুড়িগ্রামে ৫ জন, কুষ্টিয়ায় ২ জন এবং ঠাকুরগাঁওয়ে ২ জনসহ আরও ৯ জনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। উত্তর জনপদের বিভিন্ন জেলায় সোমবার দুপুর পর্যনত্ম সূর্য দেখা যায়নি। গরম কাপড়ের অভাবে লাখ লাখ দরিদ্র মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খরকুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে তারা। কোল্ড ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রানত্ম হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। কুড়িগ্রাম থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ঘন কুয়াশার কারণে সোমবার সারাদিনই জেলায় সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। গরম কাপড়ের অভাবে উত্তরের এ জেলায় লাখ লাখ লোক শীতে কষ্ট পাচ্ছে। রেহাই পাচ্ছে না গবাদিপশুও। শীতজনিত রোগে আক্রানত্ম হয়ে ৫ শিশুর মৃতু্য হয়েছে। এ জেলায় প্রায় ১০ লাখ অতিদ্ররিদ্র মানুষ শীতবস্ত্রের অভাগে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ঠাকুরগাঁও থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, এ জেলায় শীত গত ১০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। শীতে বালিয়াডাঙ্গি উপজেলায় ২ জনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। প্রচ- শীতে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রানত্ম হচ্ছে। দৌলতপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শীতে আক্রানত্ম হয়ে ২ জনের মৃতু্য হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.