ছাত্রসংসদ নির্বাচন থাকলে নেতৃত্বের দেউলিয়াপনা সৃষ্টি হতো না -

বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোয় ছাত্র সংসদের নিয়মিত নির্বাচন হলে দেশে নেতৃত্বের দেউলিয়াপনা সৃষ্টি হতো না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিকল্পধারার সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, কোটার সংস্কারের জন্য যে আন্দোলন হয়েছে তা থেকেই দেখা যায় ছাত্ররা এখনো জেগে উঠলে সবকিছুই করেত পারে। ছাত্র রাজনীতি এখনো মারা যায়নি। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বই ‘বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি, অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’-এর ওপর আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বি. চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সব থেকে বড় অপরাধ হলো তারা বলেন বেশি লেখেন কম। আমাদের রাজনীতিবিদদের বেশি বেশি লিখতে হবে। তাদের কথাগুলো তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের সরকারের একটি মন্ত্রণালয়ও নেই যেটা দুর্নীতিমুক্ত। তারা বলতে পারবে না দুর্নীতি করেনি। বর্তমানে সব ক্ষেত্রেই ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হয়। যেকোনো চাকরির জন্য ঘুষ দিতে হয়। মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদ দুর্নীতির কারণে নিজ দলের বিরুদ্ধে লড়ে ৯২ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। দুুর্নীতির জন্য তাকে
রাজনীতিতে ফিরে এসে আবার ঐক্য গড়তে হয়েছে। আজ দেশের কী অবস্থা, সারা দেশে রাতের আঁধারে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। কত মায়ের বুক খালি হয়। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বলতে হবে আমরা আর কোনো দিন সন্ত্রাস করবো না, দুর্নীতি করবো না। জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, জনগণকে বলতে হবে অতীতের ভুল ক্ষমা করে দিন। শপথ নিতে হবে। যেখানে গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেয়া হয়, সেখানে কীভাবে ভালো নেতা বের হয়ে আসবে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে নির্বাচন দিয়ে আদর্শ নেতা বের করে আনতে হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নির্বাচন কমিশন খুলনায় নির্বাচনে একজন রিটার্নিং অফিসার থাকা অবস্থায় কী করে আরেকজন অফিসার নিয়োগ দিলো? আমাদের তো এখানে প্রতিবাদ করার কথা ছিল। কিন্তু তা আমরা করছি না।
তিনি আরও বলেন, একের পর এক ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে। কত বড় নির্লজ্জ বিষয়, যারা এরকম ব্যাংকগুলো লুট করছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, ব্যবস্থা নেই। দুই কোটি টাকার মামলায় তেহাত্তর বছর বয়সের এক নেত্রীকে দুদিন মাটিতে শুইয়ে রেখে তার পরে জামিনও বন্ধ করে রেখেছে। অথচ যারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে, তাদের নামে মামলার কোনো উদ্যোগ নেই। কোটা আন্দোলনকারী ছাত্রীদের ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে একটা মামলা হয়নি। কোনো বিচার করা হয়নি। তাহ?লে কীভাবে বল?বো দে?শে গণতন্ত্র আ?ছে?
‘এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময়’। এটাকেই আমি আমার বইয়ে সামনে নিয়ে আসতে চেয়েছি। আজ কোটা সমস্যা, ভ্যাট সমস্যা তার চেয়ে আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে গণতন্ত্র সমস্যা। সেই সমস্যার কথা বলতে হবে, যেটা বললে সব সমস্যার সমাধান হবে। এখন দরকার হচ্ছে একটাই, তাহলো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। দুর্নীতি মানে অর্থ নয়, এই যে ভোট চুরি করে সেটাও দুর্নীতি। আলোচনাসভায় আরো বক্তব্য রাখেন ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মুহাম্মদ মনসুর, আমানুল্লাহ আমান প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.