হরতালের আড়ালে আজ সহিংসতা চালাতে পারে জামায়াত by শংকর কুমার দে

 রবিবারের ১৮ দলের হরতালের আড়ালে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল ও গ্রেফতারকৃত বিচারাধীন যুদ্ধাপরাধীর মুক্তির বিষয়টি সামনে নিয়ে এসে নাশকতা ও সহিংসতার চেষ্টা চালাতে পারেন জামায়াত শিবির।
পুলিশের ওপর আক্রমণ, গাড়িতে আগুন, ভাংচুর, নৈরাজ্য ও বিশৃংখলার প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছে তারা। এ জন্য তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রগকাটা শিবির ক্যাডার, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গী, সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্যদের মাঠে নামিয়েছে। এই ধরনের আশঙ্কার খবর পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা।জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে হরতালের আড়ালে সহিংস পথে পা দিয়েছে জামায়াত শিবির। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকতেও তারা জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করেছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট যখনই হরতাল বা রাজনৈতিক কর্মসূচী দিয়েছে তখনই তাদের কাঁধে ভর করে যুদ্ধাপরাধীর বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনাল বাতিল, বিচারাধীন আটক যুদ্ধাপরাধীর মুক্তির দাবিটি সামনে নিয়ে এসে মিছিল করেছে, স্লোগান দিয়েছে, পোস্টার সেঁটেছে, হ্যান্ডবিল ছড়িয়েছে প্রকাশ্যে। এসব ঘটনার সঙ্গে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পুলিশের ওপর আক্রমণ, পুলিশের গাড়িতে আগুন, রাজপথে চলাচলকারী যানবাহনে আগুন, ভাংচুর, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। রবিবারের ১৮ দলের ডাকা হরতালের আড়ালেও নাশকতা, ধ্বংসাত্মক, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছে জামায়াত শিবির।
জামায়াত শিবির একক দল হিসেবে রাজনীতির ময়দানে খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে আন্দোলনের নামে, বিভিন্ন জনসভাতেও বিএনপি ও জোটের দলের চেয়ে তারাই মূখ্য ভুমিকা পালন করেছে। খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে জনসভাগুলোতে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল বাতিল ও বিচারাধীন আটক যুদ্ধাপরাধীর মুক্তির দাবি সংবলিত ব্যানার, পোস্টার হাতে জামায়াত শিবিরের কর্মী-ক্যাডারদের সামনে স্লোগানমুখর তৎপরতায় দেখা গেছে। বিএনপি ১৮ দলকে নিয়ে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে হরতাল ডাকলেও জামায়াত শিবির তাদের যুদ্ধাপরাধী ইস্যুটিকেই প্রাধান্য দিয়ে সহিংসতা পথ বেছে নিয়ে মাঠে নেমেছে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য আটক করার পর থেকেই সহিংস পথ বেছে নিয়েছে জামায়াত শিবির। তারা ২০১০ সালের ২৮ জুনের হরতালের দিনে রাজধানীর মগবাজার রেললাইন এলাকায় গাড়িতে আগুন দিয়ে ফারুক হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে প্রকৌশলী আবুল কাসেমকে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত তারা দুই শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও পুলিশের ওপর আক্রমণ, হামলা করেছে। পুলিশের গাড়িসহ যানবাহনে আগুন দিয়েছে ও ভাংচুর করে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রবিবারের ১৮ দলের ডাকা হরতালে জামায়াত শিবির পুলিশের ওপর আক্রমণ, পুলিশের গাড়িতে আগুনসহ যানবাহনে আগুন ও ভাংচুর করার বিষয়টি শক্ত হাতে মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দফতরে হরতাল মোকাবেলার প্রস্তুতি সভায় রাজধানীর সকল থানাকে এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে লাশ ফেলে ইস্যু তৈরির চেষ্টা করা হতে পারে বলে বৈঠকে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হরতাল মোকাবেলায় কেবল রাজধানীতেই ১৫ সহস্রাধিক পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মাঠে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অপরাধী, সন্ত্রাসী, ওয়ারেন্টের আসামিসহ সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.