ভিওআইপি ব্যবসা উন্মুক্ত করে দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

জাফর আহমেদ ভিওআইপি ব্যবসাকে লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে যে অর্থ আসবে তা দিয়ে বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ডকে (বিটিটিবি) আধুনিকায়নের মাধ্যমে দেশের জনগণের কাছে তথ্য প্রযুক্তির অত্যাধুনিক সেবা প্রদান করা যাবে।
একই সঙ্গে তিনি আদমজী এবং চট্টগ্রাম স্টীলমিলসহ যে সব সরকারী কলকারখানা বন্ধ করে দিয়ে রফতানিকরণ প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) করা হয়েছে সে প্রক্রিয়ায় সরকারী সম্পদের যে লুটপাট আগের সরকার করেছে তার সুষ্ঠু তদনত্ম করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে সংশিস্নষ্ট মন্ত্রীদের প্রতি তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সর্বশেষ অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে অনুমোদনের জন্য প্রথম এজেন্ডা হিসেবে 'বাংলাদেশ টেলিফোন নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্প' নামে একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। প্রকল্পটি দেশের টেলিফোন ব্যবহারকারীদের সুবিধার্তে সাবমেরিন কেবলে অনুপ্রবেশ সুবিধার উন্নয়ন, টেলিকম সার্ভিসের উন্নয়নমূলক সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্পটির মাধ্যমে কাজ করা হবে। প্রকল্পটিতে প্রায় ৬শ' ২৩ কোটি টাকা ব্যয় করে এ লক্ষ্য বাসত্মবায়ন করা হবে বলে জানানো হয়।
সূত্র জানায়, এ সময় সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তা এবং মন্ত্রীর কাছে প্রধানমন্ত্রী অবৈধ ভিওআইপি সম্পর্কে জানতে চান। উত্তরে মন্ত্রী এবং কর্মকর্তারা তাঁকে এখনও অবৈধ ভিওআইপি চলছে বলে জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাজারে সাধারণ মানুষের জন্য ভিওআইপি লাইসেন্স ছাড়ার নির্দেশ দেন তার ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দীন আহমেদ রাজুকে। তিনি বলেন, অবৈধ ভিওআইপি যেহেতু বন্ধ করা যাচ্ছে না তাই কিছু সংখ্যক অসাধু ব্যবসায়ী লাভবান হওয়ার চেয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা লাভবান হোক। আর এতে লাইসেন্সের মাধ্যমে সরকার অনেক অর্থও পাবে। লাইসেন্স বিক্রির এই অর্থ থেকে বিটিটিবিকে আধুনিকায়ন করা যাবে বলে মত দেন তিনি। এ সময় মন্ত্রী খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানানো হয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এশিয়ার বৃহত্তম আদমজী জুট মিল এবং চট্টগ্রাম স্টীলমিল বন্ধ করে দিয়ে ওসব জায়গায় রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) করণের মধ্যে বিশাল দুর্নীতি হয়েছে। নিরপেক্ষ এবং যথাযথ তদনত্মের মাধ্যমে এসব দুর্নীতির চিত্র বের করে জনগণের কাছে পেঁৗছে দেয়া হবে। তিনি বলেছেন, পৃথিবী যখন পরিবেশ বাঁচানোর জন্য পাটের দিকে ঝুঁকছে। তখন জোট সরকার দেশের আদমজী জুট মিল বন্ধ করে দিয়ে এদেশকে ভারতের বাজার বানিয়েছে। তিনি বলেন, এখন আমাদের পাট ভারত কিনে নিয়ে তারা উন্নত বিশ্বের কাছে কয়েক গুণ লাভ করে বিক্রি করছে। আবার সেই পাট দিয়ে ভারত পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরি করে তার আনত্মর্জাতিক বাজার ধরছে। অথচ আগের সরকার দেশের এত বড় সম্পদ বিক্রি করে দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেছেন, এই পুরো প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে। এই দুর্নীতি সুষ্ঠু তদনত্মের মাধ্যমে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত ওই দিন আদমজী জুট মিল এবং চট্টগ্রাম স্টীলমিলের জায়গা ইপিজেডে রূপানত্মরকরণে একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ওই প্রকল্পটি অনুমোদন না দিয়ে উল্টো আদমজী এবং চট্টগ্রাম স্টীল মিলের দুর্নীতি তদনত্ম করার ঘোষণা দিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.