বইয়ের দোকান বন্ধ, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি- নোট ও গাইড বই বিক্রির সুযোগ দাবি

স্টাফ রিপোর্টার এবার মানবিক কারণ দেখিয়ে নোট ও গাইড বই বিক্রির সুযোগের দাবিতে অন্দোলনে নেমেছে পুসত্মক প্রকাশকরা। দাবি বাসত্মবায়নে রবিবার বাংলাদেশ পুসত্মক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির ডাকে সারাদেশে বইয়ের দোকান ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
নিষিদ্ধ নোট ও গাইড বই বিক্রির দাবিকে বেআইনী বলেও স্বীকার করছেন প্রকাশকরা। তবে তাদের দাবি, হাইকোর্টের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ নিয়ে আমরা বই প্রকাশ করেছিলাম। কিন্তু প্রকাশ করার পর ৮ ডিসেম্বর আদালত আবার বন্ধের পৰে রায় দেয়। এই অবস্থায় প্রায় দেড় শ' কোটি টাকার ৰতিসহ পুরো বিষয়টি মানবিকভাবে দেখে এবার অনত্মত বইগুলো বিক্রির সুযোগ দেয়া হোক।
৮ ডিসেম্বর নোটবই বন্ধে হাইকোর্টের দেয়া আগের আদেশ বহাল রেখে রায় দেন আপীল বিভাগ। এই অবস্থায় এবার পাঠ্যবই নিয়ে অবৈধ ব্যবসা করতে না পেরে আন্দোলনের নামে এটিকে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার কৌশল বলে মনে করছেন অনেকে। অভিযোগ আছে, শিৰা বছরের শুরম্নতে সময়মতো পাঠ্যপুসত্মক হাতে না পেয়ে শিৰক, শিৰার্থী, অভিভাবক এবং সরকার এক শ্রেণী অসাধু প্রকাশক, মুদ্রাকর ও বই ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। কৃত্রিম সঙ্কটকে পুঁজি করে চলে শত কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য। পাঠ্যবইয়ের কৃত্রিম সঙ্কটের সুযোগে নোট ও গাইড বইয়ে বাজার সয়লাব হয়ে যায়। পাঠ্যবইয়ের বিকল্প হিসেবে অভিভাবকরা নোটবই কিনতে বাধ্য হয়। গত শিৰা বছরেও বইয়ের বাজারের চিত্র ছিল এরকমই। চার মাস পরেও শিৰার্থীদের হাতে পুরো সেট বই তুলে দিতে বর্থ হয় সরকার। বইয়ের বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করার জন্য সরকার বিনামূল্যে পাঠ্যপুসত্মক বিতরণের সিদ্ধানত্ম নেয়। বর্তমান সরকারের প্রথম বাজেটে এ জন্য ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এবার প্রাথমিক সত্মরের মতো মাধ্যমিকেও বিনামূল্যে পাঠ্যপুসত্মক বিতরণের মধ্যদিয়ে শিৰার্থী ও অভিভাবকের পাঠ্যবই নিয়ে জিম্মিদশার অবসান ঘটেছে। এ সিদ্ধানত্ম বাসত্মবায়নের শুরম্ন থেকেই সরকার নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। তেজগাঁওয়ের এনসিটিবির গুদামে অগি্নকা- পরিকল্পিত নাশকতা বলে তদনত্ম রিপোর্টে প্রকাশ পায়। জানা গেছে, জাতীয় শিৰাক্রম ও পাঠ্যপুসত্মক বুক বোর্ডের (এনসিটিবি) বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠ্যবই, পাঠ্যবইয়ের নোট-গাইড ও নানা ধরনের সহায়ক বইয়ের কেনাবেচার ওপর বাংলাবাজারসহ সারাদেশের বই বাণিজ্য অনেকটাই নির্ভরশীল। সম্প্রতি উচ্চ আদালত এক রায়ে নোট-গাইড প্রকাশ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করে। পাশাপাশি চলতি বছর থেকে দেশের প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক সত্মরের সব শিৰার্থীকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুসত্মক দেয়ার সিদ্ধানত্ম নেয় সরকার। এ দুই কারণে বোর্ডবই ও নোট-গাইড বইয়ের ওপর গড়ে ওঠা বই বাজারে মন্দা শুরম্ন হয়েছে। পুসত্মক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, বহু বছরের আইনটি বর্তমান অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণর্ নয়। এই আইন বাতিল করতে হবে। তাদের অভিযোগ, দেশজুড়ে বইয়ের দোকানদারদের পুলিশ ও ম্যাজিস্টেটরা হয়রানি করছে। নোটবই আটকের নামে যখন-তখন তলস্নাশি চালাচ্ছে। এসব বন্ধের দাবিতে শনত্মিপূর্ণর্ কর্মসূচী হিসেবে রবিবার সারাদেশে বইয়ের দোকান বন্ধ রাখার পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ জেলার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছেন।
সমিতির সদস্য পুসত্মক ব্যবসায়ী মির্জা আলী আশরাফ কাশেম তাদের অবস্থান প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, সরকারের বিনামূল্যে বই বিতরণকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু আমরা যখন বই প্রকাশ করেছি তখনতো আদালতের স্টে অর্ডার থাকায় আমরা করেছি। এই অবস্থায় সরকার অনত্মত আমাদের বিষয়টি এ বছরের মতো বিবেচনা করবে এটাই আমাদের আশা। কিন্তু নিষিদ্ধ বই বিক্রির মতো দাবি তোলা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা কেবল এবার প্রকাশ করা বইগুলো বিক্রির সুযোগ চাই। পরবর্তীতে আর আমরা এই বই প্রকাশ করব না।
কর্মসূচী প্রসঙ্গে সমিতির নেতা এস এম গোলাম কবীর এবং এসএম মোহসীন, বাহাউদ্দিন ভুইয়াসহ অন্য নেতারা বলেন, আমরা চাই সরকার আমাদের বিষয়টি অনত্মত মানবিক কারণে হলেও বিবেচনা করম্নক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা আমাদের কথা খুলে বলতে চাই।

No comments

Powered by Blogger.