কথামালার ফুলঝুরি, বাসত্মবতার সঙ্গে কোন মিল নেই- প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সম্পর্কে খোন্দকার দেলোয়ার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে অসত্য ভাষণ দিয়েছেন বলে মনত্মব্য করেছেন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ইতিবাচক কোন কিছু নেই। তাঁর দেয়া ভাষণ অসত্য তথ্যে ভরা। ফুলঝুরির কথামালা ছাড়া দেশের উন্নয়ন ও জনগণের পৰে বাসত্মবতার সঙ্গে কোন মিল নেই।


এমনকি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে কাজীর গরম্ন কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই বলেও মনত্মব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব। ৃখোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অসত্য ভাষণে জাতি বিভ্রানত্ম হয়েছে। উনি যে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে মনে হয়নি উনি জাতীয় সংসদের নেতা, বরং মনে হয়েছে উনি আওয়ামী লীগের নেত্রীই আছেন। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরম্নদ্ধে কথা বলেছেন। কিন্তু এ দুর্নীতি দূর করতে হলে আগে আওয়ামী লীগের নেতা ও সরকারের প্রশাসন থেকে শুরম্ন করতে হবে। দুর্নীতির আখড়া কোথায় তাও সরকারকেই খুঁজে বের করতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন এসব কথা বলেন। বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের এক বছর পূর্তি উপলৰে জাতির উদ্দেশে রেডিও-টেলিভিশনে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া জাতির উদ্দেশে ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, চারদলীয় জোট সরকার আমলের কর্মকা- ও দ্রব্যমূল্যসহ অনেক ব্যাপারেই অসত্য কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে দলীয় নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির আনত্মর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ নাসির আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু।
বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আওয়ামী লীগের দলীয় শহীদদের ও তাঁর পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী একবারও জিয়াউর রহমানের নাম উচ্চারণ করেননি। এটা অবশ্যই দেশবাসী ও বিএনপির জন্য বেদনাদায়ক বলে মনত্মব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে দাবি করে বলেছেন, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে, কিন্তু তাঁর এ কথা সম্পূর্ণ অসত্য। সেই নির্বাচন ছিল নীলনকশার নির্বাচন। পাতানো সেই নির্বাচনে ব্যালট পেপার রাসত্মায় পাওয়া গেছে। সেৰেত্রে প্রধানমন্ত্রী সত্য কথা না বলে জাতির সামনে অসত্য তথ্য তুলে ধরেছেন। এটা দেশবাসী মেনে নেবে না।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অওায়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ১/১১ সৃষ্টির জন্য চারদলীয় জোট সরকারকে দায়ী করে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য তুলে ধরেছেন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রেই ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন বানচাল করা হয়েছে। কারণ মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার একদিন আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচন থেকে পিছিয়ে যায়। আওয়ামী লীগের কারণেই সামরিক বাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তা ষড়যন্ত্র করে ১/১১-এর সূচনা করে। তাই বার বার আমরা বলছি ১/১১ সৃষ্টি আমাদের নয়, এটা আওয়ামী লীগের সৃষ্টি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে সরকারের কোন সফলতার কথা উলেস্নখ করতে পারেননি বলে মনত্মব্য করেন খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, গত এক বছরে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা সারাদেশে অরাজকতার সৃষ্টি করেছে, সে বিষয়ে তাঁর ভাষণে কোন কথা নেই। তাঁর ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সকল দোষ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে চারদলীয় জোট সরকারের ওপর। এ ধরনের ভাষণ জনগণ কখনও গ্রহণ করবে না। স্বাধীনতার পর থেকে দেশে অসত্য রাজনীতি অওয়ামী লীগই করে আসছে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে শুধু স্বপ্নের কথাই বলেছেন। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের বাসত্মবায়ন হোক। দেশবাসীও প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাসত্মবায়ন চায়। এ স্বপ্ন বাসত্মবায়নে যা যা করা প্রয়োজন, তা মহাজোট সরকারকে করতে হবে। কিন্তু বর্তমান সরকার কি তা করবে !

No comments

Powered by Blogger.