বিশ্লেষণ: ভারতে বিচারপতিদের আচরণবিধি- সরকার ও বিচার বিভাগের দ্বন্দ্ব অবসানের লক্ষণ নেই

বিচারপতিদের আচরণবিধি নিয়ে (কোড অব কন্ডাক্ট) ভারতে সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যকার দ্বন্দ্ব অবসানের আদৌ কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, বরং সরকার এ আচরণবিধির ওপর এমন কিছু নতুন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, যাতে এই দ্বন্দ্ব আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের মতামত অনুসারে, ১৯৯৭ সালে বিচারপতিদের জন্য তৈরি আচরণবিধিকে সরকার বিধিবদ্ধ মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা সত্ত্বেও আইনমন্ত্রী সালমান খুরশিদ গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, এই বিধিবদ্ধ মর্যাদা দেওয়ার অর্থ এই নয় যে, উন্মুক্ত আদালতে সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষকে নিয়ে যা খুশি বলার ব্যাপারে বিচার বিভাগের অবাধ স্বাধীনতা থাকবে।
সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আদালতে শুনানিকালে বিচারকদের যা খুশি তা-ই বলা ঠেকাতে সরকার ‘জুডিশিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি বিল, ২০১২’-এ একটি সুনির্দিষ্ট ধারা সংযোজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এ প্রসঙ্গে সালমান খুরশিদ বলেন, উন্মুক্ত আদালতে সাংবিধানিক সংস্থা ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে নিয়ে কয়েকটি উচ্চ আদালতের কিছু মন্তব্য সরকারের গোচরে এসেছে। এসব মন্তব্য বিচার বিভাগের লিখিত ঘোষণা বা বিবৃতিতে কদাচিৎ দেখা যায়। তাই ওই বিলের ‘জুডিশিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস’ অধ্যায়ের ৩ নম্বর অনুচ্ছেদে নতুন একটি ধারা সংযোজনে সরকারের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের প্রস্তাবের ভিত্তিতে কার্যকর ‘রি-অ্যাসেসমেন্ট অব ভ্যালুস অব জুডিশিয়াল লাইফ’ আইনটির ধারায়ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আরোপসহ সেটি জুডিশিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি বিল, ২০১২-এর অন্তর্ভুক্ত করার আরেকটি প্রস্তাব সরকারের কাছে রয়েছে।
বিলটি চলতি বছরের ২৯ মার্চ ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হয়। তবে এটি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ঝুলে আছে। নতুন সংশোধনীসহ বিলটি রাজ্যসভার অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। পরে সেটি আবার পাঠানো হবে লোকসভায়।
হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগে ন্যাশনাল জুডিশিয়াল কমিশন গঠনের কথা উল্লেখ করে সালমান খুরশিদ বলেন, ওই প্রস্তাবের ব্যাপারে কোনো যৌক্তিক উপসংহারে এখনো আসা হয়নি। পিটিআই।

No comments

Powered by Blogger.