ঢাকায় বসছে ‘এলডিসি ৪ মনিটর’-এর সভা- মানবসম্পদে বিনিয়োগে গুরুত্ব আরোপ

শুধু মাথাপিছু আয় বাড়িয়েই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটানো যাবে না। গুরুত্ব দিতে হবে মানবসম্পদ উন্নয়নে। এ জন্য এ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মত এমনই।


সিপিডি বলছে, স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উত্তরণ ঘটা কয়েকটি দেশের মাথাপিছু আয় উন্নত দেশের মতো হলেও সেসব দেশ ভালো নেই।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এবং বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বাংলাদেশ নিয়ে আশার কথাও বলেছে সংস্থাটি। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, আগামী দিনে যে কয়টি দেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ঘটবে, তার একটি হবে বাংলাদেশ।’
মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনীতির ভঙ্গুরতা—এ তিন সূচকের ওপর ভিত্তি করেই কারা স্বল্পোন্নত দেশ তা, নির্ধারণ করা হয়। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে এ দেশগুলোর মাথাপিছু আয় এক হাজার ৮৬ ডলার, মানবসম্পদ সূচক ৬৬ এবং অর্থনীতির ভঙ্গুরতা সূচক ৩৮ হতে হবে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আয় বাড়লেই গরিব মানুষের উন্নতি হয় না। ইকুয়াটোরিয়াল গিনির মাথাপিছু আয় উন্নত দেশের মতো। কিন্তু তার পরও তাদের অবস্থান স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে।
প্রতি ১০ বছর পর স্বল্পোন্নত দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ সম্মেলনটি গত বছর তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হয়। স্বল্পোন্নত কাতারে এখন দেশ আছে ৪৮টি। ইস্তাম্বুল সম্মেলনের একটি প্রধান লক্ষ্য হলো ১০ বছরে স্বল্পোন্নত দেশের সংখ্যা নামিয়ে আনা।
আজ বসছে ‘এলডিসি ৪ মনিটর’: গত বছর ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত স্বল্পোন্নত দেশগুলোর চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনে যেসব সিদ্ধান্ত ও লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে, সেগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে তা মূল্যায়নে বিভিন্ন দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা একটি ফোরাম গড়ে তুলেছেন। নাম ‘এলডিসি ফোর মনিটর’।
এ ফোরাম প্রতি দুই বছর পর পর স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অবস্থা এবং শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে। আজ শুক্রবার থেকে তিন দিন রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সভা করে আগামী দিনগুলোর করণীয় ঠিক করবে ফোরাম।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইস্তাম্বুল সম্মেলনের সিদ্ধান্ত ও লক্ষ্য বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হবে। ২০১৩ সালে আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দিতে চাই।’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে শুধু উত্তরণ নয়, সাবলীল উত্তরণ হতে হবে। সে জন্য সিদ্ধান্ত কতটুকু বাস্তবায়িত হলো তা মূল্যায়নে ইস্তাম্বুল সম্মেলনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সাংসদ, ব্যক্তি খাত, বিভিন্ন পেশাজীবী ও সুশীল সমাজকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সে লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.