যা নিয়ে আছি- স্বপ্নকে জাগিয়ে তুলতে হবে

আতিউর রহমান, গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থনীতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লেখার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়েও লেখালেখি করেন। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা চল্লিশের অধিক। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ—মুক্তিযুদ্ধের মানুষ: মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন, মুক্তিযুদ্ধ জনযুদ্ধ: আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিত, উন্নয়ন কার জন্য, রবীন্দ্রভাবনায় সমাজ সংস্কৃতি ও অর্থনীতি প্রভৃতি।


অং সান সু চি
ঈদের ছুটিতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ে শেষ করেছি। অসম্ভব ভালো লেগেছে। বঙ্গবন্ধু কতটা মানবিক ছিলেন, এই বইটা পড়ে নতুন করে জানার সুযোগ হলো। এখন পড়ছি অং সান সু চিকে নিয়ে লেখা একটি বই—দ্য লেডি অ্যান্ড দ্য পিকক: দ্য লাইফ অব অং সান সু চি অব বার্মা, লেখক পিটার পপহ্যাম। বারবার পড়া বই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবি। কারণ, ওখানে স্বাধীনতার কথা আছে, রেঙ্গুনের বিদ্রোহীদের প্রসঙ্গ আছে। প্রিয় লেখকের তালিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো অবশ্যই আছেন। এ ছাড়া আছেন: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, শামসুর রাহমান, হাসান আজিজুল হক, মহাদেব সাহা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রমুখ।

আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়েছিলে...
গাড়িতে পুরোটা সময়ই গান শুনি। রবীন্দ্রসংগীত বেশি শোনা হলেও নজরুলসংগীতও শুনি; বিশেষ করে, তাঁর শ্যামাসংগীত। একসময় রজনীকান্ত সেনের গান প্রায়ই শুনতাম। বারবার শোনা গান ‘আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়েছিলে দেখতে আমি পাইনি’।

২২শে শ্রাবণ
সব ভাষার চলচ্চিত্রের প্রতিই আমি ভীষণভাবে দুর্বল, যদি সেটা মানসম্মত ছবি হয়। এখন বেশির ভাগ চলচ্চিত্র দেখা হয় প্লেনে। এ ছাড়া মেয়েদের সঙ্গে বাসায়ও দেখি। সম্প্রতি দেখা চলচ্চিত্র ২২শে শ্রাবণ। ঋতুপর্ণ ঘোষ, দীপ্তি নাভাল, মৃণাল সেন আমার প্রিয় চলচ্চিত্রকার।

মুদ্রা জাদুঘর করছি
সময় ও সুযোগ পেলেই চিত্র প্রদর্শনীতে যাই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি আমার ভীষণ প্রিয়। সমকালীন চিত্রশিল্পীদের ছবিও ভালো লাগে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বেশ কিছু চিত্রশিল্প ডিজিটালাইজ করার উদ্যোগ নিয়েছি। ভাষা আন্দোলনের ৬০ বছর ও মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর উপলক্ষে আমরা নোট ও ধাতবমুদ্রাগুলোকে নান্দনিক করার চেষ্টা করেছি। ধাতবমুদ্রায় রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা মুদ্রা জাদুঘর করার চেষ্টা করছি।

বাঙালিরা বাংলাদেশ গড়ে তুলবে
স্বপ্ন দেখি, রাজনীতিকদের মধ্যে হানাহানি ও বিভাজন দূর হবে। গ্রিক সভ্যতা নগরকেন্দ্রিক হওয়ায় ধ্বংস হয়ে যায়। এ কারণে কৃষিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সারা দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। স্বপ্ন দেখি, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ৩০টি ধনী দেশের একটি। প্রবাসী চৈনিকেরা যেভাবে চীন, ভারতীয়রা ভারত গড়ে তুলেছে; সেভাবে বাঙালিরা বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। আমাদের শাসনব্যবস্থায় ব্যর্থতা আছে, দুর্বৃত্তায়ন আছে, সুশাসনের অভাব আছে; তার পরও আমাদের সৃজনশীলতা প্রচুর। আমাদের স্বাধীনচেতা নতুন প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধপ্রীতি, প্রযুক্তিপ্রীতিতে আমি আশাবাদী, আমরা অবশ্যই এগিয়ে যাব।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: এ আহমেদ

No comments

Powered by Blogger.