মডেল সারিকা, ফৌজিয়া লিসানী, নাসির, নাহিদ এবং দ্বীপ মেকআপ পারসোনা -ডিজাইনার রাল্ফ লরেন by তৌফিক অপু

ক্যাসিক ফ্যাশন ডিজাইনিং জগতে এক উজ্জ্বল নত্রের নাম রাল্ফ লরেন। তার পোলো ব্র্যান্ড এখন বিশ্ব বিখ্যাত। এছাড়াও নারী-পুরম্নষের বিষয়ভিত্তিক ড্রেস মেকিংয়ে ছিল তার অসাধারণ নৈপুণ্য। তিনি একাধারে পেইন্ট ডিজাইনিংয়ে সমান দতা ও প্রশংসা অর্জন করেন। ১৯৩৯ সালের ১৪ অক্টোবর নিউইয়র্কের ব্র্রোনক্স শহরে দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেন।


তার বাবা ছিলেন রংমিস্ত্রি। একটা বেডরম্নমে তার অন্য দুই ভাইয়ের সাথে শেয়ার করে থাকতেন। লরেন এবং তার অন্য তিন বড় ভাই মূলত মায়ের কাছেই মানুষ। লরেনের প্রতিভা ছোটবেলা থেকেই প্রকাশ পায়। স্কুলের পড়ার থেকে টুকটাক কাজ করে পয়সা জমিয়ে লরেন একটি দামী সু্যট কেনেন। কেনার পর তিনি ভাবতে থাকেন শুধুমাত্র সেলাই এবং সুতার কারম্নকাজ একটা সাধারণ কাপড়ের টুকরোকে অসাধারণ করে তোলে। সেই থেকে ড্রেস মেকিংয়ের প্রতি তার ঝোঁক বেড়ে যায়। মাত্র ১২ বছর বয়স থেকেই লরেন নিজের ড্রেস নিজেই তৈরি করে তাতে ডিজাইন করতেন এবং তা প্রশংসাও কুড়াত অনেক। এভাবেই তিনি ফ্যাশন ডিজাইনের প্রতি উৎসাহী হয়ে ওঠেন। ম্যানহাটানের সিটি কলেজে বিজনেস স্টাডিজের ছাত্র হলেও ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়ার প্রতি তার ছিল তীব্র ঝোঁক। এ কারণে বিজনেস স্টাডিজে ডিগ্রী নেয়ার আগেই তিনি তা ছেড়ে দিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে নাইট স্টুডেন্ট হিসেবে নাম লেখান। দিনের বেলাতে গেস্নাভ কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে কাজ করেন। পরবতর্ীতে তিনি এ রিভেট্জ এ্যান্ড কোং নামের একটি টাই ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে চাকরি করেন। মূলত এখান থেকেই ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের ভিত শক্ত করেন রালফ লরেন। এখানে চাকরি করা অবস্থায় তিনি চওড়া টাইয়ের প্রবর্তন করেন। এই টাই ডিজাইন করার পর তিনি পঞ্চাশ হাজার ডলার লোন করে নিজেই ১৯৬৮ সালে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এর নাম দেন পোলো। লরেনের বড় ভাইসহ এই নামকরণ করেন তিনি। পাওয়ার স্টাইল এবং ইন্ট্রিগু-এর প্রতীক হিসেবে পোলো নামকরণ করেন তারা। পরিশ্রমী লরেনের ভাগ্য ভাল বলেই নিজ গুণ ও সততার মাধ্যমে অল্পতেই পোলোর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করাতে সম হন। বর্তমানে পোলো একটি নামীদামী ব্র্যান্ড হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। ষাট দশকে লরেন যখন তার চওড়া টাইয়ের উন্নতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তখন বস্নুমিংডেল তাকে প্রেসার ক্রিয়েট করেছিল টাইয়ের প্যাটার্ন চেঞ্জ করার জন্য। কিনত্মু সে সময় তিনি দৃপ্তকণ্ঠে এর বিরোধিতা করেছিলেন। যার ফলে পরবতর্ীতে চওড়া টাইয়ের ফ্যাশন বেশ জনপ্রিয়তা পায়। আশির দশকে এসে লরেন জুট ডিজাইনিংয়েও মনোযোগ দেন এবং সেই সাথে শার্ট ডিজাইনিংয়ে দতা অর্জন করেন। সে সময় পুরম্নষদের পরিধানের নানা রকম ফেব্রিক নিয়ে কাজ করেন রালফ। এরই ধারাবাহিকতায় অফিস এক্সিকিউটিভদের পোশাকে স্টাইলের ছোঁয়া এনে দেন তিনি। যেন অফিসে একজন পাওয়ারফুল লুকিং ম্যানে পরিণত হন একেকজন অফিস এক্সিকিউটিভ। পুরম্নষদের পোশাকে সফলতা অর্জন করার পর তিনি মনোযোগ দেন মেয়েদের পোশাকের প্রতি। এমন সময় বিভিন্ন বিজনেসম্যান মডেল মিলে রালফ লরেনকে নয় শ' মিলিয়ন ডলার সম কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে ভূষিত করে। এবং সেই কোম্পানির রালফই প্রথম ফ্যাশন ডিজাইনার। লাইফ স্টাইল বেসিজ পোশাক তৈরি করে বহু ক্রেতার সনি্নবেশ ঘটান তিনি। এভাবেই তার যশ খ্যাতি ছড়াতে থাকে সারাবিশ্বে। বর্তমানে পোলো ব্র্যান্ডের ৩৫০টির মতো কট্রাক্ট মেনুফ্যাকচার রয়েছে পুরো বিশ্বে। ২৭৫টির মতো রিটেইল সপ রয়েছে আমেরিকাতে এবং ১০০টিরও অধিক রয়েছে বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে। পোলোর প্রতিষ্ঠাতা রালফ লরেন এখন পর্যনত্ম শতকরা ৯০ ভাগ ভোট ও নিয়ন্ত্রণ করার ৰমতা রাখেন। তিনি ১৯৬২ থেকে ৬৪ সাল পর্যনত্ম আমেরিকান সোলজারদের সেবা দিয়েছেন। এর পরই তিনি বিয়ে করেন রিকি লো বিয়ারকে। তিনি এন্ড্রু, ডেভিড এবং ডায়লান নামের তিন সনত্মানের জনক। তার গুণগত কাজের মানই পোলোকে বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডের তালিকায় নিয়ে যায়, যা এখনও সবার নজর কাড়ে। পোশাক বিক্রির তালিকাতেও পোলো শীর্ষে। এক কথায় বলা যায় রালফ লরেন নিজ সততা ও পরিশ্রমের গুণেই পোলোকে বিশ্বে সমাদৃত করতে পেরেছেন।

No comments

Powered by Blogger.