পামতেল মালয়েশিয়া ও মসুর ডাল নেপাল থেকে আনা হচ্ছে- মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে 0 বাণিজ্যমন্ত্রী কুয়ালালামপুর গেছেন, আগামী সপ্তাহে নেপাল যাচ্ছে প্রতিনিধি দল by মিজান চৌধুরী

বাজার নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয়ভাবে পামতেল ও মসুর ডাল আমদানি করা হচ্ছে। পামতেল আনা হচ্ছে মালয়েশিয়া থেকে। নেপাল থেকে আনা হবে মসুর ডাল। শীঘ্রই ওই দুই দেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সূত্রমতে, নেপাল থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল আমদানির সিদ্ধানত্ম হয়েছে।


আগামী সপ্তাহে নেপালের সঙ্গে এ সংক্রানত্ম একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যাচ্ছে। অপরদিকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মালয়েশিয়া থেকে অধিক পরিমাণ পামতেল আমদানির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই পামতেলের বিষয়টি সুরাহা করতে মালয়েশিয়া গেছেন। তিনি মালয়েশিয়া পামঅয়েল বোর্ডের (এমপিওবি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমদানি নিয়ে আলোচনা করবেন।
অভ্যনত্মরীণ চাহিদা পূরণ করতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে ডাল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল নেপাল সরকার। সম্প্রতি বাংলাদেশের ওপর থেকে নেপাল ডাল রফতানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এই সুযোগ কাজে লাগাতে দ্রম্নত নেপাল থেকে ডাল আমদানির সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়। প্রাথমিক অবস্থায় তিন হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল রাষ্ট্রীয়ভাবে আমদানির প্রায় চূড়ানত্ম পর্যায়ে।
বর্তমান খুচরা বাজারে ডালের মূল্য সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। বলতে গেলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে ডালের দাম। এক মাসের ব্যবধানে মসুর ডালের মূল্য বেড়েছে ৭ শতাংশ। খুচরা বাজারে এক কেজির দাম হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৩০ টাকা এবং নিম্নে ৮৪ টাকা। গত কয়েক মাস ধরে ডালের বাজার উর্ধমুখী রয়েছে। দেশী মসুর ডাল শেষ হওয়ার কারণে আমদানিকারকরা বাজার থেকে অতিমুনাফা আদায় করছে। বর্তমান ১৩০ টাকা মূল্যের মসুর ডালের আমদানি মূল্য হচ্ছে ১০৩ টাকা। প্রতি কেজিতে ১০ টাকা মুনাফা করলেও ১১৩ টাকা দাম ওঠার কথা। কিন্তু কেজিপ্রতি ব্যবসায়ীরা মুনাফা করছে ২৭ টাকার ওপরে। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে সরকারীভাবে ডাল আমদানির সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি ভোজ্যতেলের দামও বেড়েছে। বিশেষ করে এক মাসের ব্যবধানে প্রতিকেজি পামতেলের মূল্য বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পামতেলের দাম হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা। গত বছর এই পামতেলের মূল্য ছিল ৪৮ থেকে ৫২ টাকা। পামতেলের এই মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে মালয়েশিয়া থেকে পামতেল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে।
সূত্রমতে, গত ১২ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ান পামঅয়েল বোর্ড পামতেলের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে হোটেল শেরাটনে। ওই প্রদর্শনী উদ্বোধনশেষে মালয়েশিয়ার বনশিল্প এবং নিত্যব্যবহার্য পণ্যবিষয়ক মন্ত্রী বার্নার্ড জি ডম্পক বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে সে দেশ থেকে পামতেল আমদাানির আহ্বান জানান। বর্তমানে বেসরকারীভাবে মালয়েশিয়া থেকে বছরে ২৩ কোটি মার্কিন ডলারের পামতেল আমদানি করা হচ্ছে। পরিমাণের দিক থেকে প্রায় সোয়া দুই লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশের সপ্তম বৃহত্তম পামতেল আমদানিকারক হিসেবে স্থান রয়েছে মালয়েশিয়ায়। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ মোট পামতেল আমদানি করে ৯ লাখ মেট্রিক টন। যার মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা হয় ২ লাখ ১৭ হাজার ২৬৪ মেট্রিক টন। এর আর্থিক মূল্য হচ্ছে ২৩ কোটি ডলার। ওই আহ্বানের প্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারম্নক খান গত বুধবার রাতে মালয়েশিয়া গেছেন। যাওয়ার আগে তিনি জনকণ্ঠকে জানান, মসুর ডালের ব্যাপারে খুব শীঘ্রই একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে নেপালের সঙ্গে। তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ওই চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাবে। তবে মালয়েশিয়া থেকে পামতেল আমদানির জন্য মালয়েশিয়ান পামঅয়েল বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক হবে। আশা করি ওই বৈঠকের পর আমদানির ব্যাপারে একটি সিদ্ধানত্ম নেয়া যাবে।

No comments

Powered by Blogger.