বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ঐতিহাসিক রায়- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায় গত ১৯ নবেম্বর ঘোষিত হয়। এরপর পাঁচ বিচারপতি গত ১৭ ডিসেম্বর সে ঐতিহাসিক রায়ে স্বার করেন। রায়টির পূর্ণ বিবরণ এখানে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো_ -বাংলায় রূপান্তর : এনামুল হক

(পূর্ব প্রকাশের পর) "৩৭৭। এভাবে পেশকৃত প্রতিটি মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ কতর্ৃক দণ্ডাদেশ অনুমোদন কিম্বা নতুন দণ্ডাদেশ বা আদেশ দানের েেত্র এমন আদালতে দুই বা ততোধিক বিচারক থাকলে তাদের অন্তত দু'জন সেই দণ্ডাদেশ অনুমোদন কিম্বা নতুন দণ্ডাদেশ বা আদেশ দান করবেন এবং তাতে স্বার দিবেন।"


"৩৭৮। এ জাতীয় কোন মামলার শুনানি যখন বিচারকদের বেঞ্চে হয় এবং সেই বিচারকরা মতামত দেয়ার েেত্র সমানভাবে বিভক্ত থাকেন তখন তাদের মতামতসহ মামলাটি আরেক বিচারকের কাজে পেশ করা হবে এবং সেই বিচারক তাঁর কাছে যেমন উপযুক্ত মনে হয় সেভাবে মামলার শুনানি করার পর নিজের অভিমত দেবেন এবং রায় ও আদেশ সেই অভিমতের অনুগামী হবে।"
"৪২৯। আপীল আদালত যেসব বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত তারা অভিমত দেয়ার েেত্র সমভাবে বিভক্ত হলে তাদের অভিমতসহ মামলাটি একই আদালতের আরেক বিচারকের হাতে দেয়া হবে এবং সেই বিচারক যেমন উপযুক্ত মনে করবেন সেভাবে শুনানি (যদি প্রয়োজন হয়) করার পর তার অভিমত দেবেন এবং রায় ও আদেশ সেই অভিমতের অনুগামী হবে।"
উপরোক্ত বর্ণনাসমূহে দেখা যায় যে, দায়রা আদালত কোন মৃতু্যদণ্ড প্রদান করলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারায় সেই দণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য মামলার কার্যক্রম হাইকোর্ট বিভাগের কাছে পেশ করতে হবে। ৩৭৪ ধারায় কোন মামলার কার্যক্রম পর্যালোচনাকালে হাইকোর্ট বিভাগ মৃতু্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী আপীল করেছে কি কারনি সেটাই তোয়াক্কা না করে নিজ থেকেই তার আপীল আদালতের পাশর্্বমতার ভিত্তিতে কাজ করে এবং তদানুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগকে সা্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে আসামী দোষী না নির্দোষ সে সম্পর্কে একটা স্বাধীন উপসংহারে পেঁৗছাতেই হয়। হাইকোর্ট বিভাগের মৃতু্যদণ্ড অনুমোদনের মতা ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৬ নং ধারাতেই দেয়া হয়েছে। আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করা প্রাপ্ত সা্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যুক্তিযুক্ত হয়েছে এবং মামলার পারিপাশ্বর্িক অবস্থার বিচারে তাঁকে মৃতু্যদণ্ড দেয়া যথোপযুক্ত হয়েছে এই মর্মে নিজের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের ওপর একটি দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
আরও দেখা যায় যে, যদিও ৩৭৮ ধারাটি "অনুমোদনের জন্য দণ্ডাদেশ পেশ সম্পর্কে" শিরোনামে ফৌজদারি কার্যবিধির সপ্তবিংশ অধ্যায়ে এবং ৪২৯ ধারাটি "আপীল সম্পর্কে" শিরোনামে একত্রিংশ অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত তথাপি উভয় ধারায় ব্যবহৃত ভাষা প্রায় একই রকম। উভয় ধারায় ব্যবহৃত "তিনি যেমন উপযুক্ত মনে করেন" কথাগুলোর দ্বারা এ কথা মেনে নেয়া হয়েছে যে, তৃতীয় বিচারক যেরূপ উপযুক্ত মনে করেন সেভাবে মতপার্থক্য নি্#৬৩৭৪৩;ত্তির ব্যাপারে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন। তদানুযায়ী তিনি যদি ঠিক করেন যে অভিমত দেয়ার ব্যাপারে বিচারকরা যেখানে দ্বিধাবিভক্ত নন এমন আসামীর েেত্র যুক্তিতর্ক শোনার কোন প্রয়োজন নেই তাহলে সেই শুনানির ব্যাপারে তিনি অস্বীকৃতি জানাতে পারেন। (ক্রমশ )

No comments

Powered by Blogger.