রিভিউ পিটিশন বিষয়ে কারা কর্তৃপৰ এখনও কিছু জানে না আইজি প্রিজন- বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় কারাগারে আটক দ-িত পাঁচ আসামি রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে কিনা তা জানা নেই। আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন।বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন।


আইজি প্রিজন সাংবাদিকদের জানান, আসামিদের আইনজীবীরা রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে তা অফিসিয়ালভাবে পাইনি। অন্যদিকে আসামি পৰের ব্যারিস্টার আব্দুলস্নাহ আল-মামুন জানিয়েছেন, ১৯ নবেম্বর রায় ঘোষণার পরপরই আমরা রিভিউ পিটিশন দাখিল করব, তা কারাকর্তৃপৰসহ অন্যদের অবহিত করা হয়েছে। দু'বার আমরা কারাকর্তৃপৰকে অবহিত করেছি। এ্যাডভোকেট নজরম্নল ইসলাম চৌধুরী জেলখানায় গিয়ে জানিয়ে এসেছেন। এ বিষয়ে আবেদনও করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ আসামির নামে ৫০ হাজার টাকা সুপ্রীমকোর্টে জমা দেয়া হয়েছে।
১৯ নবেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে পাঁচ আসামির আপীল আবেদন নাকচ করে দেয়া হয়। এর ফলে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল থাকে। এরপর বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলাম, বিচারপতি মোঃ আব্দুল আজিজ, বিচারপতি বিজন কুমার দাস, বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন ও বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ১৭ ডিসেম্বর ৪১২ পৃষ্ঠার রায়ে স্বাৰর করেন। ১৯ ডিসেম্বর ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়। ২১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতসহ সংশিস্নষ্ট বিভাগে রায়ের অনুলিপি পাঠানো হয়। ২২ ডিসেম্বর রায়ের অনুলিপি আসামি পৰের আইনজীবীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালতে পেঁৗছানোর পর লাল খামে মৃতু্য পরোয়ানা জারি করে তা কারাগারে পেঁৗছানোর কথা। কিছু আইনী জটিলতা এবং জজকোর্ট শীতকালীন ছুটি থাকার কারণে মৃতু্য পরোয়ানা কারাগারে পেঁৗছাতে দেরি হয়। ৩ জানুয়ার দ-প্রাপ্ত আসামি মেজর (অব) বজলুল হুদা লে. কর্নেল (বরখাসত্ম) সৈয়দ ফারম্নক রহমান, লে. কর্নেল (অব) সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, লে. কর্নেল (অব) মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি) এবং লে. কর্ণেল (অব) একেএম মুহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার)-এর নামে মৃতু্য পরোয়ানা জারি করেন বিচারিক আদালতের বিচারক এমএ গফুর।
লাল খামে মৃতু্য পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছার পরপরই আসামিদের ৰণ গণনা শুরম্ন হয়। এদিকে আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলাম সোমবার বলেছিলেন, এখন আসামিদের ৭ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিৰা চাইতে হবে। বৃহস্পতিবার তিনি আবারও জানালেন, যেহেতু আমরা বিচারিক আদালত থেকে লাল খামে মৃতু্য পরোয়ানা পেয়েছি সে জন্য প্রক্রিয়াটি চলমান রেখেছি। মার্সির জন্য সময় আছে। কেউ কেউ প্রাণভিৰার জন্য লিখছেন। এখনও তাদের কাছ থেকে আবেদনগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে নেয়া হয়নি।
বিষয়টি সম্পূর্ণ জেল সুপারের অধীনে, সেখানে আপনি কেন কথা বলছেন। এর উত্তরে আইজি প্রিজন বলেন, কারা কর্তৃপৰ বলতে জেল কর্তৃপৰ করবে। আমার অধীনে ৬৮টি জেল আছে। জেল কোড অনুযায়ীই সব কিছু হবে। যে দিন লাল ফাইল পেয়েছি, সেই দিনই আসামিদের তা বলা হয়েছে। যতৰণ পর্যনত্ম রিভিউ-এর কাগজপত্র অফিসিয়ালভাবে না পাব ততদিন প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। আমরা বিষয়টি অফিসিয়ালভাবে চাই। আইন ছাড়া কিছু করা হবে না। ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে রায় কার্যকর করতে হবে। এর মধ্যে ১৯ কিংবা ২০ তাং কাগজপত্র এসে গেলে আমরা স্টপ করে দেব। কারাগারে পাঁচ আসামি ভাল আছে। তাদের প্রতি তীৰ্ন নজর রাখা হয়েছে।
জেল কোড অনুযায়ী ফাঁসির আদেশ বহাল থাকা সংক্রানত্ম সিদ্ধানত্ম বা রায়ের কপি দ-প্রাপ্তদের মাঝে পৌঁছাতে হবে। সে ৰেত্রে তারা রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা চাইবেন কিনা সে সিদ্ধানত্ম নেবার পরে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আবেদন করতে পারবে। রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা হলে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধানত্ম দেবেন। ৰমা করা হলে তারা মুক্তি পেতে বা দ- কমিয়ে সাজাপেতে পারেন। এছাড়া মৃতু্য পরোয়ানা জেল কর্তৃপৰের কাছে গেলে ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে। রিভিউ করতে পারবে আপীল বিভাগের রায়ের কপি প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে।
আসামিপৰের আইনজীবী দ্রম্নত রিভিউ করার সিদ্ধানত্ম নিয়েছেন। সেজন্য প্রতি আসামির জন্য ১০ হাজার টাকা করে ৫০ হাজার টাকা সুপ্রীমকোর্টে জমা দেয়া হয়েছে। কাগজপত্রও প্রস্তুত করা হয়েছে। সম্ভবত ১৫ জানুয়ারী বা তার পরে রিভিউ করা হতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.