অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের প্রত্যাশা-‘মেরিনটেক’ জাহাজ নির্মাণ শিল্পের বিকাশে ভূমিকা রাখবে

দেশের জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়ে শেষ হলো ‘মেরিনটেক বাংলাদেশ’।
গতকাল শনিবার প্রদর্শনীর শেষ দিনেও অনেক দর্শনার্থী মেরিনটেকে এসে জাহাজ নির্মাণের বিভিন্ন সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির খোঁজখবর নেন।


এক্সপোনেট এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেড দ্বিতীয়বারের মতো জাহাজ নির্মাণসামগ্রী, প্রযুক্তি ও নৌ-স্থাপত্যের এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর আয়োজন করে। তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী গত বৃহস্পতিবার শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া উদ্বোধন করেন।
প্রদর্শনীতে বাংলাদেশসহ জার্মানি, ডেনমার্ক, নরওয়ে, দুবাই, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন, জাপান, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আধুনিক জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তি, মেরিন কাটিং, মেরিন ইঞ্জিন, কেবল লাইটিং, জেনারেটর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তি, নৌ-স্থাপত্যবিষয়ক পরিবেশবান্ধব নীতিমালা, নৌ-শিক্ষা ও প্রশিক্ষণবিষয়ক পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করে।
অংশ নেওয়া একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলেন, প্রদর্শনীটি জাহাজ নির্মাণ শিল্প বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে প্রদর্শনীটির পরিসর আরও বড় করে দেশের সব জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলে ভালো হতো।
দেশের সবচেয়ে পুরোনো জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘খুলনা শিপইয়ার্ড’ প্রদর্শনীতে তাদের তৈরি করা কয়েকটি নৌযানের ‘নমুনা’ নিয়ে আসে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি প্রপেলার, জিএম বুজ, গান মেটাল সিলভ, ডগ নোজ পিনসহ জাহাজ নির্মাণের বেশ কিছু সরঞ্জাম প্রদর্শন করে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত খুলনা শিপইয়ার্ড এ পর্যন্ত সাড়ে ৬০০ জাহাজ তৈরি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে তিনটি অয়েল ট্যাংকার, পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ, একটি অ্যালুমোনিয়াম বোট ও তিনটি ফিশারিজ বোট তৈরি করছে। খুলনা শিপইয়ার্ড ইঞ্জিন ছাড়া জাহাজ নির্মাণের অন্যান্য যন্ত্রাংশ তৈরি করে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
জাহাজ নির্মাণের ঝালাই কাজের যন্ত্রাংশ ও রং নিয়ে প্রদর্শনীতে অংশ নেয় হাসান অ্যান্ড কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোড, ওয়েল্ডিং মেশিন, ড্রাই ভেন ওয়েল্ডিং রড ও মেরিন পেইন্টস বিদেশ থেকে আমদানি করে দেশীয় জাহাজ নির্মাতাদের কাছে সরবরাহ করে।
প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক আবদুল গনি বলেন, ‘২০০৬ সাল থেকে জাহাজ নির্মাণের বিভিন্ন সামগ্রী দেশের বাজারে সরবরাহ করছি।’
জাহাজ নির্মাণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকেও মেরিনটেকে আসতে দেখা গেছে। তাঁদের অনেকেই ইন্টারন্যাশনাল মেরিন একাডেমির স্টলে ভিড় করেন। শিক্ষার্থীরা মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা এবং এ পেশার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চান বলে জানালেন মেরিন একাডেমির কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।
প্রদর্শনীতে মেরিন ইঞ্জিন, হাইড্রোলিক স্টিয়ারিং, প্রপেলার ও অ্যাঙ্কর চেইন নিয়ে অংশ নেয় মেরিন কনটেস্ক। চীনের তৈরি এসব যন্ত্র দীর্ঘদিন ধরে সরবরাহ করছেন বলে জানালেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা রাশেদ আলম চৌধুরী।

No comments

Powered by Blogger.