বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত-শান্তি-কল্যাণের পথ কুসুমাস্তীর্ণ হোক

ঙ্গীর তুরাগতীরে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছিল। পাঁচ দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব, যা আজ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। দুই পর্বেই লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লির ঢল নেমেছে। অত্যন্ত সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইজতেমার দুটি পর্ব। 'আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার' ধ্বনিতে ময়দান মুখর হয়ে ওঠে।


টঙ্গীর তুরাগতীরে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমান অস্থিতিশীল বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতির মধ্য দিয়ে শান্তির জন্য মোনাজাতের এই কাফেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মুসল্লিদের সুবিধার কথা ভেবে এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের ইবাদত-বন্দেগিতে গোটা ইজতেমা ময়দান মুখর হওয়ার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো, মানুষ শান্তির পক্ষে। যারা নানা অশান্তি ও নেতিবাচক কর্মকাণ্ড জিইয়ে রেখে সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে তৎপর, তাদের সংখ্যা সীমিত। শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদের প্রতিহত করবে শুভবোধের তাগিদে_এই আশাবাদ অত্যন্ত পুষ্ট। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়, যা চোখে পড়ার মতো। ইজতেমায় মূল বয়ান উর্দুতে হলেও বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষায় তা তাৎক্ষণিক অনুবাদ হওয়ায় সাধারণ সবার পক্ষেই বিষয়টি সহজে বোধগম্য হয়। কালিমার দাওয়াত মানুষের দিলে একিন সৃষ্টি করে। দাওয়াত একিনকে মজবুত করে। সংগত কারণেই বিশ্ব ইজতেমার খ্যাতি ও পরিচিতি প্রতিবছরই বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে বিদেশ থেকে আসা মুসল্লির সংখ্যাও। এর ফলে স্বাগতিক বাংলাদেশের মুসল্লিদের সঙ্গে বিদেশি মুসল্লিদের পারস্পরিক জানাজানি ও ভাববিনিময়ের একটি মজবুত সেতু হয়েছে এই বিশ্ব ইজতেমা।
আজ রবিবার দুপুরে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়ে আলেম-ওলামা ও সাধারণ মুসল্লিরা দেশ-জাতির কল্যাণ কামনা করবেন। তাঁরা বিশ্বশান্তি ও মুসলিম উম্মাহর উন্নতি কামনায় প্রার্থনা করবেন। মানুষ আখিরাতের ভাবনায় উদ্দীপ্ত হয়ে সদাসর্বদা যেন সিরাতুল মোস্তাকিমের পথে চলতে পারে, এর জন্যও প্রার্থনা করা হবে। সব রকম অশান্তি ও অশুভ দাপাদাপি নির্মূলে মানুষের সমবেত ইবাদত-বন্দেগি কল্যাণের পথ প্রশস্ত করবে_এই প্রত্যাশা রইল। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় ক্রমেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লির ভিড় যেভাবে বাড়ছে, এই বাস্তবতায় মুসল্লিদের অবস্থান ও নানা প্রয়োজনের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা জরুরি ভিত্তিতে ভাবতে হবে। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিলে বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীদের সুযোগ-সুবিধা আরো নিশ্চিত হবে।

No comments

Powered by Blogger.