প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ-ব্রাদার্স-সূর্যতরুণ হারছেই

বচেয়ে কম রান যে ম্যাচে, সবচেয়ে বেশি উত্তেজনাও সে ম্যাচে! ওল্ড ডিওএইচএস-ব্রাদার্স ম্যাচের ভেন্যু ছিল বিকেএসপি। ব্রাদার্সের পাকিস্তানি ওপেনার ইমরান নাজিরের এলবিডব্লুর সিদ্ধান্তকে ঘিরে কাল উত্তেজনা ছড়িয়েছিল সেখানে। আম্পায়ারদের দিতে হয়েছে পুলিশি নিরাপত্তা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ৮৮ রানে গুটিয়ে গিয়ে ব্রাদার্স হেরেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানেই।


প্রিমিয়ার লিগের কালকের অন্য দুই ম্যাচেও মোটামুটি সহজ জয় পেয়েছে ভিক্টোরিয়া ও প্রাইম দোলেশ্বর। মিরপুরে ভিক্টোরিয়া ২১ রানে জিতেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে। ফতুল্লায় প্রাইম দোলেশ্বর ৭২ রানে হারিয়েছে সূর্যতরুণকে।
কুয়াশার কারণে বিকেএসপিতে দুই ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয় খেলা, ম্যাচের দৈর্ঘ্য ছিল ৩৯ ওভার। শিশিরভেজা উইকেটে আগে ব্যাটিং নিয়েই বিপর্যয়ে পড়ে ব্রাদার্স। নাবিল সামাদের করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলে মোহাম্মদ আশরাফুলের ক্যাচ ওপেনার নাজিমউদ্দিন। প্রথম ওভারেই উইকেট হারানোর ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি ব্রাদার্স। তবে শুভাগত হোমের করা ম্যাচের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ইমরান নাজিরের এলবিডব্লু উত্তেজনা নিয়ে আসে ম্যাচে। ইমরানের দাবি, প্যাডে লাগার আগে ব্যাট ছুঁয়ে গিয়েছিল বল। মাঠেই ব্যাট উঁচিয়ে সেটা দেখানোর পর ব্রাদার্স সমর্থক-কর্মকর্তাদের তোপের মুখে পড়েন আম্পায়াররা। পরে পুলিশ এনে তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। খেলা শেষে ইমরান নাজিরকে করা হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা।
ব্রাদার্সের ৮৮ রান ২১.২ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়েই টপকে গেছে ওল্ড ডিওএইচএস। ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্টের সঙ্গে ১.৫৩৯ রান রেট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় এখন তারাই শীর্ষে। সমান ম্যাচে ব্রাদার্সের এটি পঞ্চম পরাজয়।
মিরপুরে ভিক্টোরিয়ার ২০৩ রানের জবাবে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ৭৬ রানে ৪ উইকেট হারালেও মুশফিকুর রহিমের ফিফটির (৫২) সৌজন্যে ৩৫ ওভার শেষে দলের রান ৬ উইকেটে ১৪১। হাতে ৪ উইকেট রেখে ১৫ ওভারে ৬৩ রান তো করাই যায়! কিন্তু সাকিব আল হাসানের করা ৩৮তম ওভারের প্রথম বলেই অধিনায়ক মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী আউট। সেখান থেকে শেখ জামালের শেষ ৪ উইকেট পড়ে মাত্র ২৯ রানে। ৩৮ রানে ৪ উইকেট নেওয়া ভিক্টোরিয়ার পেসার আল আমিনই নিয়েছেন এর ২টি।
সকালে ভিক্টোরিয়াও যে খুব স্বচ্ছন্দ ব্যাটিং করেছে, তা নয়। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে দলের মাত্র ১২ রানে ওপেনার আসিফ জাকিরকে হারানোর পর থেকেই নড়বড়েভাবে এগোতে থাকে দলটা। মিডল অর্ডারে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান কামরান সাজিদের ফিফটি (৫৮) না হলে দুই শ পেরোনোই কঠিন হতো। ১৪৮ রানে ৬ উইকেট পড়ার পর ষষ্ঠ উইকেটে সাব্বির রহমানের (২৯) সঙ্গে ৫২ রানের জুটি হয়েছে কামরানের। ভিক্টোরিয়ার পঞ্চম জয়ের দিনে এটি শেখ জামালের তৃতীয় হার।
ফতুল্লায় সূর্যতরুণকে হারিয়ে জয়ের ধারা ধরে রেখেছে প্রাইম দোলেশ্বর। দলের ১১ রানের মাথায় ওপেনার মিজানুর আউট হওয়ার পর আরেক ওপেনার সায়েম আলম (৩৬) ও কামরান আকমল (৬৪) দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ৯১ রান। সায়েমের আউটের পর ২১ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেটের পতন চাপে ফেলে দেয় প্রাইম দোলেশ্বরকে। তবে মানবিন্দর সিংয়ের ফিফটি (৫২) শেষ পর্যন্ত স্কোরটা নিয়ে যায় ২৫৫ রানে। জবাবে ৪৯.১ ওভারে ১৮৩ রানে অলআউট সূর্যতরুণ। জুপিটার ঘোষের ৫১ আর তায়েবুর পারভেজের ৬২ তাতে অলংকার মাত্র।
ছয় ম্যাচের সব কটিতেই হারল সূর্যতরুণ। প্রথম তিন ম্যাচে হারার পর টানা তিন ম্যাচ জিতল প্রাইম দোলেশ্বর।

সং ক্ষি প্ত স্কো র
ভিক্টোরিয়া: ৫০ ওভারে ২০৩/৮ (সাজিদ ৫৮, সাব্বির ২৯, তামিম ২৭, মুক্তার ২৫, জহুরুল ২৪; ধ্রুব সিং ৪/৫৫, মাহমুদুল ২/২৬)। শেখ জামাল: ৪৬.৪ ওভারে ১৮২ (মুশফিকুর ৫২, রাহুল ৩২; আল আমিন ৪/৩৮, সাকিব ২/২৭, ইউনুস ২/৩৭)।
ফল: ভিক্টোরিয়া ২১ রানে জয়ী।
ব্রাদার্স: ৩৩.২ ওভারে ৮৮ (মনসুর ২১; শুভাগত ৪/২০, নাবিল ২/১৩, আশরাফুল ২/১৪)। ওল্ড ডিওএইচএস: ২১.২ ওভারে ৮৯/২ (আনোয়ার ৩৭*, আশরাফুল ২৫; মনসুর ১/১৬)।
ফল: ওল্ড ডিওএইচএস ৮ উইকেটে জয়ী।
প্রাইম দোলেশ্বর: ৫০ ওভারে ২৫৫/৯ (আকমল ৬৪, মানবিন্দর ৫২, সায়েম ৩৬, কায়সার ৩৬; ইমরান ৩/৪৬, রাজা ২/৪০)। সূর্যতরুণ: ৪৯.১ ওভারে ১৮৩ (তায়েবুর ৬২, জুপিটার ৫১, শফিউল ২০; কায়সার ৩/২২, তাইজুল ৩/২৯)। ফল: প্রাইম দোলেশ্বর ৭২ রানে জয়ী।

No comments

Powered by Blogger.