ডলারের দাম বাড়ার প্রভাব আদা-রসুনের বাজারেও

পাইকারি ও খুচরা দুই বাজারেই বেড়েছে রসুন ও আদার দাম। বিশেষ করে আমদানি করা আদা-রসুনের দাম বেড়েছে বেশি। তবে স্থির নেই দেশি আদা-রসুনের দামও। রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে গতকাল শনিবার প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, ১০ দিন আগেও আদার দাম ছিল কেজিপ্রতি ৬৮ থেকে ৭০ টাকা।


আর গতকাল খুচরা বাজারে রসুনের দর ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি, ১০ দিন আগে যা বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। আদা-রসুনের প্রধান পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে যায়, গতকাল পাইকারি ব্যবসায়ীরা চীনা রসুন বিক্রি করেছেন ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজি দরে। আর দেশি রসুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ১০ দিন আগেও তাঁরা আমদানি করা রসুন ৪৫ থেকে ৪৮ ও দেশি রসুন ২৮ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করেছেন।
আদার বাজার আরও ভয়াবহ। কেবল ভারত থেকে আমদানি করা আদার দামই তুলনামূলক কম। সেটা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি। ১০ দিন আগেও এই আদা বিক্রি হতো ২৭ থেকে ২৮ টাকায়।
প্রতি কেজি চীনা আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ১০ দিন আগেও যা বিক্রি হতো ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। আর দেশি আদার দাম এখন ৩০ থেকে ৩২ টাকা। আগে এই আদার দাম ছিল ২৬ থেকে ২৭ টাকা।
আদা-রসুনের আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের আমদানিব্যয় বেড়ে গেছে। প্রতি কেজি চীনা রসুন আমদানি করতে খরচ পড়ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। তা ছাড়া ডলার-সংকটের কারণে অনেক ব্যাংকই এখন আমদানিকারকদের জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে চাইছে না।
আবার অনেক আমদানিকারক দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন, বেশি দাম দিয়ে রসুন ও আদা আমদানি করবেন কি না। কারণ, চীন থেকে আদা-রসুন আমদানি করে দেশে আনতে এক মাস লেগে যায়। ডলারের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে ওই সময় ডলারের কী অবস্থা দাঁড়ায়, সেটা নিয়েও তাঁরা চিন্তিত।
তা ছাড়া বেশি দামে আমদানি করা আদা-রসুন সেই দামে বিক্রি করতে পারবেন কি না, সেটা নিয়েও তাঁরা চিন্তিত।
আদা-রসুনের একজন বড় আমদানিকারক ও শ্যামবাজারের পপুলার বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী রতন সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতি ডলারের মূল্যমান এখন ৮৫-৮৬ টাকা। ডলারের দর স্থির না হলে বাজার কোথায় গিয়ে ঠেকবে, তা বলা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা এক কদম এগোলে, ১০ কদম পিছিয়ে যাচ্ছেন।’
দেশি রসুনের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, শুকনো রসুন আমদানি করতে খরচ পড়ে ৪০ টাকা। সে কারণে দাম বেড়েছে। তাহলে ১০ দিন আগে কীভাবে ৩০ টাকায় বিক্রি করেছেন জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, তখন সরবরাহ ভালো ছিল। এখন মৌসুম শেষ। তাই সরবরাহ কম। দেশি আদার বিষয়েও একই কথা জানালেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, দেশে বছরে আদা-রসুনের চাহিদা কত সে বিষয়ে সরকার কিংবা ব্যবসায়ীদের কাছে কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই, যে কারণে এসব পণ্য চাহিদার বেশি আমদানি করে বিপাকে পড়েন ব্যবসায়ীরা। আর কম আমদানি হলেই বাজার চড়ে যায়।

No comments

Powered by Blogger.