ইবিতে সংঘর্ষ-দলাদলিই সার, শিক্ষা চুলোয়

সলামী বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দলাদলির শিকার। কখনও স্থানীয়-অস্থানীয় আদলে আধিপত্যের লড়াই, আবার কখনও প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে দ্বিমুখী ও ত্রিমুখী লড়াই যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সব সংঘর্ষের বেলায়ই জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির প্রধান পক্ষ বা প্রতিপক্ষ থেকেছে।


ডাইনিং ম্যানেজার নিয়োগকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়টিতে যে ব্যাপক ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে তাতেও ইসলামী ছাত্রশিবির প্রধান অংশীদার ছিল। বস্তুত ছাত্রশিবির ও সরকার সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের মধ্যে এই লড়াই এতটা ভয়াবহ আকার নেয় যে, এতে গোলাগুলির মধ্যে পড়ে উভয় পক্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে অনেকেই গুলিবিদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্রের ব্যবহার আতঙ্কজনক। আশ্চর্যজনক হলো, সংঘর্ষ চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে ছিলেন না। তারা ঘটনাস্থলে আসেন তাণ্ডব শেষ হওয়ার পরে। কিন্তু কেন তারা এত দেরি করে ঘটনাস্থলে এলেন সে ব্যাপারে নিশ্চয়ই তাদের কাছ থেকে কোনো সদুত্তর মিলবে না। ক্যান্টিন ম্যানেজার নিয়োগকে কেন্দ্র করে জটিলতার উদ্ভব এবং সে জটিলতা নিরসনের জন্য ছাত্র প্রতিনিধিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সবার অংশগ্রহণে সভা অনুষ্ঠান সত্যিই অবাক করার মতো। ক্যান্টিন ম্যানেজারের পদটি কেন প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনদ্বয়ের কাছে এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল তা সহজেই অনুমেয়। ফাও খাওয়া এবং চাঁদাবাজি নিশ্চয়ই এর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই অন্যায় ব্যবস্থাকে বৈঠক করে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করল। এটা নিশ্চয়ই দেশের একটির্ স্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের জন্য লজ্জার এবং এখানে নৈতিকতার প্রশ্নও এসে যায়। কিন্তু তারপরও ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি। প্রশ্ন হলো, বৈঠকের আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে সুরক্ষা চেয়েছিল? ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মাঝে মধ্যেই লড়াই চলে। তাই এখানে ক্রাইসিস ব্যবস্থাপনার একটা স্থায়ী ব্যবস্থা থাকা উচিত। ছাত্রভর্তির ক্ষেত্রে দলবাজিকে প্রশ্রয় না দিলে এ ক্ষেত্রে কিছুটা ইতিবাচক ফল হতে পারে। বিশ্ববিদ্যা্যলয় কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন এ ব্যাপারে একটা স্থায়ী সমাধান সূত্র বের করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে দলাদলি ও সংঘর্ষমুক্ত রাখার ব্যবস্থা করবে, এটাই প্রত্যাশা। সবারই মনে রাখা উচিত, দলাদলিকে প্রশয় দিলে শিক্ষা চুলোয় যায়।
 

No comments

Powered by Blogger.