প্রশ্নবিদ্ধ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের ভূমিকা-বাঁধ দিয়ে নদী দখল

খল বিভিন্ন রকমের। নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ তারই একটি। সারা দেশের ছোট-বড় অনেক নদীই এখন দখলের শিকার। ঠাকুরগাঁওয়ের টাঙ্গন নদে এ রকম বেশ কিছু বাঁধ-বেড়া ইত্যাদি দিয়ে মাছের চাষ চলছে। অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক, কিন্তু তাঁরা খোঁজ রাখার প্রয়োজন মনে করেননি যে মাছ চাষের নামে নদীর কী ক্ষতিসাধন করা হচ্ছে।


টাঙ্গন নদের কোথাও বালুর বস্তার বাঁধ দিয়ে নদীর গতিপথ বন্ধ করা হয়েছে, কোথাও বাঁশের বেড়া ও ডালপালা পুঁতে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। দুই ক্ষেত্রেই দেখা যায়, জেলা প্রশাসন থেকে ‘পেন কালচার’ নামে পরিচিত স্বল্প পরিসরে জালের ঘের দিয়ে মাছ চাষের অনুমতি নিয়ে বাঁধের ঘের বানানো হয়েছে। গতকাল রোববারের প্রথম আলোর সংবাদে এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক বলেন, অনিয়ম হয়েছে কি না তা তাঁর জানা নেই, খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নেবেন। খোঁজখবর করা কেমন কাজ, তার জন্য কত তেল পোড়াতে হয়, তা আমাদের জানা নেই। অথচ চক্ষুষ্মান যে কেউই দেখতে পাবে, খোদ জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পেছনেই এ রকম একটি বালুর বস্তার বাঁধ প্রশাসনিক ‘খোঁজখবরের’ মহিমা কীর্তন করছে। হয় তিনি দায়িত্বশীল নন, নয়তো সচেতনভাবেই অনিয়মকে প্রশ্রয় দিয়েছেন।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে নদীর যেকোনো স্থানে বাঁধ দিয়ে পানিপ্রবাহের পথ রুদ্ধ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। বাঁধদাতারা সেই অপরাধ নিশ্চিতভাবেই করেছেন এবং জেলা প্রশাসনের ভূমিকা এতে সহযোগীর। কেবল ঠাকুরগাঁওয়েই নয়, প্রায়ই সংবাদপত্রে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ রকম নদী-নালা-খাল-বিল ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো ব্যবহারের ঘটনা প্রকাশিত হওয়া এককথায় পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের গাফিলতিকেই প্রকাশ করে।
ঠাকুরগাঁওয়ের টাঙ্গন নদ থেকে অবিলম্বে বাঁধগুলো অপসারণ করা হোক, দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া হোক। পাশাপাশি দেশের সর্বত্র এ ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ করায় সরকারি নির্দেশনা পাঠানো হোক।

No comments

Powered by Blogger.