হংকংয়ে আইনপরিষদ নির্বাচন-ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা ধরে রাখল গণতন্ত্রপন্থীরা

হংকংয়ে আইনপরিষদ নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থীরা ৭০ আসনের মধ্যে ২৭টিতে জয় পেয়েছে। ফলে পরিষদে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হলো তারা। বাকি ৪৩টি আসনে বেইজিংপন্থী দলগুলো জয়ী হয়েছে। গতকাল সোমবার ফল প্রকাশ করা হয়।


তবে প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ায় সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রপন্থী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান আলবার্ট হো 'রাজনৈতিক দায়' কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করেছেন।
গত রবিবার আইনপরিষদ নির্বাচনে ভোট নেওয়া হয়। চীনের বিশেষ প্রশাসনিক এ অঞ্চলটিতে টানা ১০ দিন বেইজিংবিরোধী আন্দোলনের পর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থী প্রার্থীরা ভালো করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। চীনা দেশপ্রেমমূলক পাঠ্যসূচি প্রণয়নের পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে ওই আন্দোলন চলছিল।
গতকাল সোমবার ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, গণতন্ত্রপন্থী সিভিক পার্টি পেয়েছে পাঁচটি আসন। গতবার দলটির দখলে ছিল চার আসন। ডেমোক্রেটিক পার্টি তাদের আট আসনের মধ্যে খুইয়েছে চারটি। সব মিলিয়ে গণতন্ত্রপন্থী দলগুলো পেয়েছে ২৭ আসন। তবে তাদের জনসমর্থন প্রায় ৬০ শতাংশ। নির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ৫৩ শতাংশ, যা ২০০৮ সালের নির্বাচনের চেয়ে বেশি।
পরিষদের ৪০টি আসনে এই প্রথমবারের মতো সরাসরি ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হলো। বাকি ৩০ আসনের প্রতিনিধি নির্বাচন করেছে অর্থনৈতিক ও পেশাজীবী সম্প্রদায়ের কয়েকটি ছোট আকারের নির্বাচক গ্রুপ। তাদের কল্যাণেই বেইজিংপন্থী দলগুলো ৪৩ আসন পেয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, নির্বাচনের ফল সবার জন্য ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে। চীন সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৭ সালে হংকংয়ের এ অধিকার পাওয়ার কথা। বর্তমানে আধা-স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে সাবেক ব্রিটিশ এ উপনিবেশ।
ফল বিপর্যয় প্রসঙ্গে সিভিক পার্টির আইনপ্রণেতা রনি তং বলেন, 'আমরা বেশি ভোট পেয়েছি কিন্তু আসন পেয়েছি কম। এটা খুবই দুঃখের।' পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান হো বলেন, 'দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ফলের এই মারাত্মক বিপর্যয়ের রাজনৈতিক দায় আমি নিচ্ছি।' তবে তিনি বলেন, বেইজিংপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ 'ক্রমে অসহিঞ্চু' হয়ে পড়ছে।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে হংকংয়ের বিদ্যালয়গুলোতে চীনা দেশপ্রেমমূলক পাঠ্যসূচি প্রণয়নের ঘোষণা দেয় সরকার। তবে সরকারি এ ঘোষণার প্রতিবাদে রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। তাদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে গত শনিবার রাতে ওই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে সরকার। পরদিন ভোট হয়। এ অবস্থায় গণতন্ত্রপন্থীরা নির্বাচনে ভালো করবে বলে আশা করা হচ্ছিল। এবার পরিষদের আসনও বাড়ানো হয়েছে ১০টি। আগে আসনসংখ্যা ছিল ৬০। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.