দুই প্রার্থী মাঠে নেমেছেন- ছাড় দিতে রাজি নন আফসারউদ্দীন by তানভীর সোহেল ও মাসুদ রানা

গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের উপনির্বাচনে চাচা-ভাতিজির নির্বাচনী লড়াই নিয়ে বিব্রত সেখানকার আওয়ামী লীগ। স্থানীয় ও পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে স্বদলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এই উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি। আর আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাজউদ্দীনের ভাই ও রিমির চাচা আফসারউদ্দীন আহমদ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আফসারউদ্দীনকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে রাজি করাতে দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা আফসারউদ্দীনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তাতে কাজ হয়নি।
জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, আফসারউদ্দীনকে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে। এখনো নানাভাবে কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু তিনি নির্বাচন করার ব্যাপারে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আরও কয়েক দিন সময় আছে। দেখা যাক কী হয়।’
আফসারউদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তা বৈধ হয়েছে। তিনি সেখানে নির্বাচন করছেন। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
এদিকে গতকাল সকালে ঢাকা থেকে নির্বাচনী এলাকা কাপাসিয়া উপজেলায় পৌঁছান সিমিন হোসেন ও আফসারউদ্দীন। তাঁরা দুজনই সেখানে গণসংযোগ করেন। সিমিন হোসেন কাপাসিয়া, দুর্গাপুর ও চাঁদপুর ইউনিয়নের নারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। আর আফসারউদ্দীন কাপাসিয়া ও এর আশপাশ এলাকায় গণসংযোগ করেন।
আওয়ামী লীগের উপনির্বাচন পরিচালনাকারী কমিটির প্রধান ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, ‘একজন দলের, অন্যজন বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে এঁরা দুজনই আত্মীয়। এঁদের সবাই চেনে। এ জন্য কর্মীরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে।’
গাজীপুর আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতারা আফসারউদ্দীনকে তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে রাজি করাতে পারলে তাঁরা অপর প্রার্থী বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) আসাদুল্লাহ বাদলকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানাবেন। তাতে তিনি রাজি হলে সিমিন হোসেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।
কাপাসিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা মোতাহার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘দুই প্রার্থীই তাজউদ্দীন আহমদের পরিবারের সদস্য। দুজনকেই সাধারণ মানুষ সমানভাবে দেখে। এ অবস্থায় কীভাবে ভোট চাইব, সেটা একটা সমস্যা।’

No comments

Powered by Blogger.