বাগরাম কারাগারের নিয়ন্ত্রণ এল আফগানদের হাতে

মার্কিন সেনাবাহিনী গতকাল সোমবার বিতর্কিত বাগরাম কারাগারের নিয়ন্ত্রণ আফগানিস্তানের কাছে হস্তান্তর করেছে। আফগানিস্তানের ‘গুয়ানতানামো বে’ নামে পরিচিত এই কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে কাবুল দেশটির সার্বভৌমত্বের বিজয় হিসেবে দেখছে। প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই বাগরাম কারাগার হস্তান্তরকে স্বাগত জানিয়েছেন।


আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা জানান, এই কারাগারে আটক বন্দীদের তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে কারাগার হস্তান্তরের অনুষ্ঠান তেমন জাঁকজমকপূর্ণ ছিল না।
এই কারাগারে তিন হাজারের বেশি তালেবান যোদ্ধা ও সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী আটক রয়েছে। তবে এই বন্দীদের ভাগ্যে কী আছে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কাবুলের উত্তরে অবস্থিত বাগরাম কারাগারটি বন্দী নির্যাতনের জন্য বেশ কুখ্যাত।
২০১৪ সালের শেষ নাগাদ আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো সেনা সরিয়ে নেওয়া হবে। এর আগে আফগানিস্তানের সব কারাগার ওই দেশের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরই অংশ হিসেবে বাগরাম কারাগার আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করল যুক্তরাষ্ট্র।
ঘরোয়া পরিবেশে কারাগারটি আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কিছু কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া কারাগারে আফগানিস্তানের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
ওই অনুষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা কর্নেল রবার্ট ট্যারাডাস বলেন, ‘আমরা তিন হাজারের বেশি আফগান বন্দীদের তাদের হাতে তুলে দিয়েছি।’ তবে তিনি আশ্বাস দেন, যারা আফগানিস্তান ও যৌথ বাহিনীর জন্য হুমকি হবে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।
এ সময় আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী এনায়েতুল্লাহ নাজারি বলেন, ‘আমি আজ খুবই খুশি। কারণ আমাদের বন্দীদের দায়িত্ব আমাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ তবে দেশটির এক পুলিশ কমান্ডার সাফিউল্লাহ বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে তিন হাজার ১৮২ বন্দীকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
ন্যাটোর মুখপাত্র জেমি গ্রেবিল জানান, আটক ব্যক্তিদের ৯৯ শতাংশই আফগান কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আছে। আর বাকিদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়া স্থগিত আছে। তবে সব বন্দীকেই স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
২০১০ সালের এপ্রিলে বিবিসির অনুসন্ধানে বাগরাম কারাগারের গোপন স্থানে বন্দী নির্যাতনের খবর প্রকাশিত হয়। এ খবরে সমালোচনার মুখে পড়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আফগান কর্তৃপক্ষের তদন্তেও একই ধরনের অভিযোগ তোলা হয়। তবে মার্কিন বাহিনী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.