বাগরাম কারাগারের দায়িত্ব বুঝে নিল আফগান কর্তৃপক্ষ

প্রায় তিন হাজার ২০০ বন্দিসহ বাগরাম কারাগারের দায়িত্ব আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে মার্কিন সেনারা। আফগানিস্তান সরকার গতকাল সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে। ২০১৪ সালের শেষ নাগাদ আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।


তবে কারাগারের ছোট একটি অংশ নিয়ন্ত্রণে রাখার ইচ্ছা জানিয়েছে মার্কিন বাহিনী।
রাজধানী কাবুলের প্রায় ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত বাগরাম কারাগার কাগজপত্রে পারওয়ান আটক কেন্দ্র নামে পরিচিত। কারাগারটি একসময় আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর সবচেয়ে বড় ঘাঁটির ভেতর ছিল। তবে ২০১০ সালে সামরিক ঘাঁটির কয়েক মাইল দূরে নতুন নির্মিত ভবনে এটি স্থানান্তর করা হয়। আফগানিস্তানে যেসব কারাগারে বন্দি নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে, বাগরাম তার অন্যতম। এটি আফগানিস্তানের 'গুয়ানতানামো বে' নামেও পরিচিতি পায়। ২০১৪ সালে ন্যাটো সেনা প্রত্যাহার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এই কারাগারের নিয়ন্ত্রণ আফগান কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান। তারই অংশ হিসেবে গত মার্চে আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ন্যাটোর এক সমঝোতা চুক্তি হয়। আফগান সামরিক পুলিশের কমান্ডার সফিউল্লাহ সফি জানান, গত ছয় মাসে বাগরাম কারাগারের তিন হাজার ১৮২ জন বন্দির দায়িত্ব আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে ৫০ জন বিদেশি বন্দি এবং মার্চের চুক্তির পর কারাগারে আসা কয়েক শ ব্যক্তি এখনো মার্কিন বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। কারাগারের দায়িত্ব হস্তান্তর উপলক্ষে গতকাল ছোট এক অনুষ্ঠান হয়। দায়িত্বরত প্রতিরক্ষামন্ত্রী এনায়েতুল্লাহ নাজারি অনুষ্ঠানে বলেন, 'আফগান বন্দিদের আফগান কর্তৃপক্ষের কাছেই হস্তান্তর প্রত্যক্ষ করতে পারায় আমি খুশি।' কারাগারের দায়িত্ব হস্তান্তরের ঘটনাকে আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বের জয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে প্রেসিডেন্ট কারজাইয়ের মুখপাত্র আইমাল ফাইজি বলেন, গত মার্চে স্বাক্ষরিত চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে মতভেদ রয়ে গেছে। কারাগারে আটক ছয় শতাধিক লোককে এখনো আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। এই লোকগুলোকে মার্কিন বাহিনী অবৈধভাবে আটকে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে ন্যাটোর মুখপাত্র জেমি গ্র্যাবিল বলেন, গত ৯ মার্চের আগে আটক থাকা ৯৯ শতাংশ বন্দিকেই আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাগরাম কারাগারের বিদেশি বন্দি ও মার্কিন উপদেষ্টারা ২০১৩ সালের ৯ মার্চ পর্যন্ত মার্কিন বাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকবেন বলেও জানান তিনি। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.