নববর্ষের আগেই এল সুসংবাদ- ১০ হাজার কর্মীর চাহিদা পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া by শরিফুল হাসান



নতুন বছর আসার আগেই এল সুসংবাদ। ১০ হাজার কর্মীর চাহিদাপত্র এল মালয়েশিয়া থেকে। গতকাল রোববার বনায়ন (প্ল্যান্টেশন) খাতের ১০ হাজার কর্মী নিয়োগের ওই চাহিদাপত্র ঢাকায় পাঠিয়েছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রালয়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ওই কর্মী নিয়োগের নিবন্ধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেবে সরকার। তবে এবার শুধু ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে নাম নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া কর্মী নিয়োগের জন্য জেলা বা উপজেলা কোটার পরিবর্তে ইউনিয়ন কোটা করা হবে। তবে বনায়ন খাতে নিয়োগের জন্য কৃষিকাজে অভিজ্ঞতাসহ আগের সাত যোগ্যতা ঠিক থাকছে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব জাফর আহমেদ খান গতকাল রোববার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার বছর পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলল। আমরা শিগগির নাম নিবন্ধন করার জন্য আবেদন চাইব। এ ক্ষেত্রে শুধু সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকেই নাম নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে। ফলে প্রতারণা কমবে।’
জাফর আহমেদ খান আরও জানান, ১০ হাজার কর্মীর চাহিদাপত্র পাঠালেও মালয়েশিয়া আগামী তিন মাসে বনায়ন খাতে ৩০ হাজার কর্মী নেবে। প্রতি মাসে মালয়েশিয়া ১০ হাজার করে চাহিদাপত্র পাঠাবে বলে জানিয়েছে। সচিব বলেন, ‘এ কারণে আমরা এবার একসঙ্গে ৩০ হাজার কর্মীর জন্য নাম নিবন্ধন করাব। কর্মীদের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক কোটা করছি। এর মাধ্যমে সারা দেশ থেকে সুষমভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মী যেতে পারবে।’ কর্মীদের বেতন কত হবে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ন্যূনতম ৯০০ রিঙ্গিত বা ২৫ হাজার টাকা পাবেন। এ ছাড়া একজন কর্মীর মালয়েশিয়া যেতে খরচ ৪০ হাজার টাকার বেশি পড়বে না।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বনায়ন খাতের কর্মী হিসেবে যাঁরা মালয়েশিয়ায় যেতে চান, তাঁদের মোট সাতটি যোগ্যতা থাকতে হবে। এগুলো হলো: বাংলাদেশের নাগরিকত্ব, কৃষিকাজে অভিজ্ঞতা, বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে, গ্রাম এলাকার প্রকৃত বাসিন্দা, উচ্চতা কমপক্ষে পাঁচ ফুট বা তদূর্ধ্ব, ওজন কমপক্ষে ৫০ কেজি এবং ২৫ কেজি মালামাল হাতে করে বহনের ক্ষমতা।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বনায়ন খাত ছাড়াও কৃষি (অ্যাগ্রিকালচার), উৎপাদন (ম্যানুফ্যাকচারিং), নির্মাণ ও সেবা (সার্ভিস)—এই পাঁচ খাতে বাংলাদেশ থেকে প্রাথমিকভাবে লোক নেবে মালয়েশিয়া।
বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় চার বছর ধরে জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ। টানা কূটনৈতিক যোগাযোগের পর এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে দেশটি।
বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিম রেজা গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিটি বিভাগের কর্মীদের নাম নিবন্ধনের জন্য আলাদা তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। নিজ ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে নাম নিবন্ধন করার পর তাঁকে ফিরতি যে বার্তা পাঠানো হবে, তাতে বলা থাকবে যে কোনো কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে (টিটিসি) তাঁর সাক্ষাৎকার হবে। সাক্ষাতের সময়ই তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, দক্ষতার কাগজপত্র ও অন্যান্য তথ্য যাচাই-বাছাই এবং তাঁর আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে। ব্যক্তিগত তথ্যভান্ডার করা হবে। নির্বাচিত হওয়ার পর কর্মীদের এমআরপি (যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট) করতে বলা হবে। কর্মী নিজ খরচে পাসপোর্ট করবেন। তারপর তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.