কঠোর নিরাপত্তায় দিল্লির সেই ছাত্রীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে কঠোর নিরাপত্তায় গণধর্ষণের শিকার সেই ছাত্রীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে দিল্লির একটি শ্মশানে তাঁকে দাহ করা হয়।
এদিকে গণধর্ষণে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার ও নারীদের নিরাপত্তার দাবিতে গতকালও নয়াদিল্লিসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়। নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে।
১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন ২৩ বছর বয়সী ওই ছাত্রী। প্রায় দুই সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত শনিবার সকালে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আগামী ৩ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করা হতে পারে বলে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ বিমানে শনিবার মধ্যরাতে লাশ নয়াদিল্লিতে পৌঁছায়। এ সময় বিমানবন্দরে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী। তাঁরা ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। বিমানবন্দর থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় ওই ছাত্রীর বাড়িতে। এ সময় ওই বাড়ির আশপাশের এলাকার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বাড়িতে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে গতকাল ভোরে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নেওয়া হয় শ্মশানে। ছাত্রীর পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনকে শ্মশানে নেওয়া হয় একটি বাসে করে। তবে সাধারণ মানুষ ও গণমাধ্যমকর্মীদের শ্মশান এলাকায় যেতে দেওয়া হয়নি। দিনের বেলা মানুষজন জড়ো হতে পারে এবং এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে—এমন আশঙ্কায় সকাল সাড়ে ছয়টার মধ্যে দাহ করার প্রস্তুতি নেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সূর্যোদয়ের আগে দাহ করার নিয়ম না থাকায় সময় এক ঘণ্টা পেছানো হয়। পরে সকাল সাড়ে সাতটায় চিতায় আগুন দেন ওই ছাত্রীর বাবা।
এর আগে লাশ শ্মশানে নেওয়ার পর সেখানে শ্রদ্ধা জানান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দিক্ষিত। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আর পি এন সিং ও দিল্লির বিজেপি প্রধান ভিজেন্দর গুপ্তও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ অব্যাহত: গতকাল নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ইন্ডিয়া গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিক্ষোভস্থলে দীপালি শর্মা নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা চাই গণধর্ষণের এই ঘটনার দ্রুত বিচার হোক। ধর্ষণের ঘটনা প্রতিরোধে কঠোর আইন করা হোক। যতক্ষণ পর্যন্ত তা না হচ্ছে ততক্ষণ আমরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাব।’ পিটিআই ও জিনিউজ।

No comments

Powered by Blogger.