ঘটন-অঘটনের ২০১২

বছরের শুরুতে ৩রা জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসির হার্ড টকে লন্ডন বসে বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে হাইকোর্ট অর্ডার নয় অপশন দিয়েছিল। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপির উদ্দেশে বলেছিলেন, নির্বাচন বর্জন হবে তাদের রাজনৈতিক ভুল।
বছরজুড়ে পানি অনেক দূর গড়িয়েছে। হয়েছে গাড়ি ভাঙচুর, সংঘর্ষ গ্রেপ্তার। কথার ফুলজুড়ি ছিল পক্ষ-বিপক্ষে বছরজুড়েই। বছরের শেষ সীমায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ড. আকবর আলি খানের দেয়া ফর্মুলা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ব্যর্থ লোকের ফর্মুলা দিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা হয় না।
কারও ফর্মুলা নয়, আওয়ামী লীগ নিজস্ব গতিধারায় চলবে। বছর শেষে ডিসেম্বর জুড়েই ছিল হরতাল আর অবরোধে উত্তাল। রাজনীতির মাঠ গরম ছিল সাপ নিয়ে আলোচনায়। বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীতে পথসভায় বলেছেন, সাপকে বিশ্বাস করা যায় আওয়ামী লীগকে নয়। এর জবাবও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদলীয় নেত্রীর বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বলেছেন, তিনি সাপের ঝাঁপি নিয়ে খেলছেন। এভাবেই ঘটন-অঘটনের জন্ম দিয়ে ২০১২ সাল বিদায় হতে চলেছে। একেবারে বছরের শুরুতে ১৯শে জানুয়ারি সেনাবাহিনীর তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়, সেনাবাহিনীর ভেতরে একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেয়া হয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর থেকে এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সঙ্গে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কথাও জানানো হয়। ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সমপ্রতি কিছু প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের ইন্ধনে অবসরপ্রাপ্ত এবং সেনাবাহিনীতে কর্মরত কতিপয় ধর্মান্ধ কর্মকর্তা কর্তৃক অন্যান্য ধর্মান্ধকে পুঁজি করে দুরভিসন্ধিমূলক কর্মকাণ্ড করে সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করার নিষ্ফল চেষ্টা চালানো হয়। এই অপপ্রয়াসটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিহত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ইতিহাসে কোন অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ধরনের খোলাখুলি কথা এর আগে শোনা যায়নি। সেনাবাহিনীর ভেতরে হিজবুত তাহ্‌রীরের মতো নিষিদ্ধ সংগঠনের উপস্থিতি শঙ্কিত করে তোলে অনেককেই। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কিছু সেনা কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে দু’টি হত্যাকাণ্ড স্তম্ভিত করে পুরো বাংলাদেশের মানুষকে। সেদিন ছিল ১১ই ফেব্রুয়ারি। এদিন মধ্যরাতে নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য এবং অপরাধীকে শনাক্ত করতে পুলিশ বাহিনীর ব্যর্থতা পুরো সাংবাদিক সমাজকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। সরকার থেকে একের পর এক সময়সীমা বেঁধে দেয়ার পর পুরো বছর কেটে গেলেও এ হত্যাকাণ্ড এখনও রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে।
সাহারার বদলে নতুন স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর শপথ নেয়ার পরপরই সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার রহস্য উন্মোচনের দাবি করলেও বছর শেষে ঘটনা যেখানে থাকার সেখানেই রয়ে গেছে। আড়ালে থেকে গেছে অনেক কিছুই। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের রেশ চলাকালেই আরেকটি ঘটনা আবার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৭ই এপ্রিল মধ্যরাতে নিখোঁজ হন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এম. ইলিয়াস আলী। নিখোঁজ ও গুম নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে নানা সমালোচনার মুখে থাকা সরকার আরও একবার বেকায়দায় পড়ে। এপ্রিল মাসের শুরুতে শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামকে হত্যা নিয়েও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক হৈচৈ পড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনও বাংলাদেশ সফরে এসে এ ঘটনায় তার উদ্বেগের কথা জানান। গুম, খুনের এসব অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজপথও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি আরও হয়ে ওঠে সোচ্চার। এপ্রিল মাসেই ৪ দিন তারা দেশজুড়ে হরতাল পালন করে।
বছরজুড়ে আলোচনায় ছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি নিজামুল হকের সঙ্গে প্রবাসী আহমেদ জিয়াউদ্দিনের স্কাইপ কথোপকথন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে সামগ্রিক বিচার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। জানুয়ারিতেই জামায়াতে ইসলামীর নেতা গোলাম আযমকে কারাগারে পাঠানো ছিল বছরের বড় একটি ঘটনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে ১৩ই মে। পুরো বছরই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ছিল মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। গোলাম আযমই ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর মূল নেতা। তাকে ঘিরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে এবং পরে এ দলটি সংগঠিত হয়েছিল। যদিও বেশ কয়েক বছর আগেই তিনি জামায়াতের আমীরের পদ থেকে অবসরে গেছেন। তারপরও দলটিতে তার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রশ্ন যখনই এসেছে তখনই উঠে এসেছে গোলাম আযমের নাম। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোর দাবির মধ্যেও এক নম্বরে গোলাম আযমের তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন সময়। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গঠন করা হলেও অনেক পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন ও বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে দেখা যায়, তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগের জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অন্য অভিযোগে। পরে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের যে তদন্ত করা হচ্ছিল সেই তদন্তের পর্যায়েই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইবুনাল আদেশ দিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় ১১ই জানুয়ারি ভোর রাতে তার মগবাজারের বাসা থেকে। সেদিনই তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। বয়সের দিক তুলে ধরে তার জামিন আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত তা নামঞ্জুর করেন। এ বিচার প্রক্রিয়ায় বড় একটি ধাক্কা লাগে বিচারপতি মো. নিজামুল হকের স্কাইপ সংলাপ। এ জন্য তিনি পদত্যাগ করেন। তিনি ছিলেন ট্রাইবুনাল ১-এর চেয়ারম্যান। এই ট্রাইবুনালেই জামায়াতের একজন শীর্ষ নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যুক্তি-তর্ক শুনানি- সব কিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পর রায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল। এই ট্রাইবুনালেই গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামীসহ জামায়াতের আরও শীর্ষ কয়েকজন নেতার বিচারপ্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। ফলে স্কাইপ কথোপকথনের বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পটভূমিতে বিচারপতি মো. নিজামুল হক সরে গেছেন ঠিকই এবং ট্রাইবুনালও পুনর্গঠন করা হয়েছে। কিন্তু বিচার শেষ পর্যায়ে আসা তিনজন অভিযুক্তের পক্ষ থেকে বিচার পুনরায় বা নতুন করে শুরু করার আবেদন করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে, সেটা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো বলছে। এই বিচারপ্রক্রিয়ার শুরু থেকেই অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে এক ধরনের সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছিল। কথোপকথন ফাঁস হওয়ার ঘটনা নিয়ে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনেও সেই বিতর্ক জোরালো হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে অনেকেই এখন এই বিচারপ্রক্রিয়ার দিকে নজর দিচ্ছে- এমনটা মনে হচ্ছে।
রাজনীতির অঙ্গনে ১২ই মার্চের ঢাকা চলো কর্মসূচি ছিল ব্যাপক আলোচনায়। ৪ দলীয় জোট এদিন সারাদেশ থেকে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সরকার ও বিরোধী দলের পক্ষের মধ্যে চলে টান টান উত্তেজনা। বেগম খালেদা জিয়া নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে চারদলীয় জোটকে ১৮ দলীয় জোটে উন্নীত করার পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়ার জন্য তিন মাসের আলটিমেটাম ঘোষণা করেন।
৩০শে জুন নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের একটি অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করে প্রকল্পটির প্রধান ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক। অভিযোগ দুর্নীতির ষড়যন্ত্র। এর আগেই বিশ্বব্যাংক এই চুক্তিটি স্থগিত করেছিল। বিশ্বব্যাংক প্রথমে স্পষ্টভাবে না বললেও সংবাদ মাধ্যমে মূল অভিযোগটি উঠে আসে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের নামে। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তখন বলেছিলেন- এই বিবৃতি সম্পূর্ণভাবে আমরা অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। এই বিষয়ে গত ৯ মাস ধরে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আমাদের আলোচনা এবং চিঠিপত্র আদান-প্রদান হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সন্দেহ অপসারণের জন্য অসাধারণ সব পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রকৃতপক্ষে পদ্মা সেতু প্রকল্পে আজ পর্যন্ত কোন দুর্নীতি হয়নি।
এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে আগেই যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সৈয়দ আবুল হোসেনকে। পদত্যাগের দাবি এবং কড়া সমালোচনার মুখে ২৩শে জুলাই এই পদ থেকেও সরে দাঁড়ান সৈয়দ আবুল হোসেন। তার পদত্যাগের মাস দুয়েক আগেই একটি নাটকীয় ঘটনার মধ্যদিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ আসে সরকারের অপর এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। নবগঠিত রেল মন্ত্রণালয়ের প্রথম মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী বিপুল পরিমাণ অর্থসহ আটক হন ঢাকার পিলখানার বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড কার্যালয়ে। তার গাড়ির চালক টাকাসহ গাড়িটি বিজিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। রেলের নিয়োগে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নাম। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর রেলের দুর্নীতির কালো বেড়াল খুঁজে বের করার কথা বললেও দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়েই তিনি শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন।
এ বছর বাংলাদেশের জন্য অন্যতম শোকাবহ একটি ঘটনা ঘটে জুলাই মাসে। মরণব্যাধি ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াই করার পর নিউ ইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। তিনি শুধু লেখক হিসেবেই নন, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকারও ছিলেন। সহজ ও সাবলীলভাবে লেখার এক অসাধারণ শক্তিসম্পন্ন এই মানুষটির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে সারাদেশে।
২৯শে সেপ্টেম্বর। এদিন কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধপল্লীতে হামলার ঘটনা আলোড়ন তোলে সারাদেশে। ফেসবুকের একটি ছবিকে কেন্দ্র করে ইসলাম ধর্মের অবমাননার অভিযোগে কক্সবাজারের রামু ও চট্টগ্রামের পটিয়ার বৌদ্ধপল্লীতে হামলা চালায় একদল মানুষ। আকস্মিক এ ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়ে অনেকেই। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইট এবং রাজপথে এ ঘটনার নিন্দা জানায় সাধারণ মানুষ। আক্রান্ত এলাকার মানুষের দিন কাটতে থাকে আতঙ্কে। ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ ঘটনার জন্য সরকারি এবং বিরোধী দল পরস্পরকে দায়ী করে। পরবর্তীকালে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়। সেখানে তদন্তও শেষ হয়েছে। তবে ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছিল তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
বছরের শেষ দিকে এসে ঘটে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা। ঢাকার কাছে আশুলিয়ায় একটি গার্মেন্টে আগুন লেগে পুড়ে মারা যান ১১১ জন শ্রমিক। পরদিন সকালে অগ্নিদগ্ধ স্বজনের খোঁজে জড়ো হন বিপুল সংখ্যক মানুষ। তাজরিন গার্মেন্ট নামের ওই কারখানাটির অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনায় কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। অভিযোগ আছে, কারখানাটির কর্তৃপক্ষই অগ্নিকাণ্ডের সময় শ্রমিকদের তালা দিয়ে আটকে রেখেছিল। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তৈরী পোশাকের শ্রমিকরা। এ ধরনের কারখানার বিদেশী ক্রেতারাও আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখোমুখি হন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি একটি নাশকতা হিসেবে তুলে ধরা হয়। কারখানার মালিককে অবহেলার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। এভাবেই নানা ঘটন-অঘটনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সাল শেষ হয়ে জাতির ভাগ্যাকাশে উদিত হতে চলেছে নতুন সূর্য। নতুন বছর। কি হবে ২০১৩ সালে? আমরা কি নতুন বছরে নতুন প্রত্যাশা নিয়ে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবো? নাকি রাজনীতির ডামাডোলে; অর্থনীতির বৈকল্যে আরও নির্মম পরিণতির দিকে পা বাড়াবো- প্রত্যাশা থাকলো সুদিনের।

No comments

Powered by Blogger.