কর্মসংস্থান প্রকল্প-এ কেমন খাল খনন?

ঝালকাঠি জেলায় খাল খননের নামে চলছে পাড় ছাঁটাই_ এমন শিরোনামে সমকালের লোকালয় পাতায় খবর প্রকাশিত হয়েছে রোববার। খবরের সঙ্গে যে রঙিন ছবি রয়েছে তাতে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমেও কেউড়া ইউনিয়নের খালে কিছুটা পানি রয়েছে।
এ অবস্থায় অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান প্রকল্পের কাজ করাতে হলে পানি সেচে ফেলা আবশ্যক। কিন্তু সেটা করা হয়নি। এর পরিবর্তে শ্রমিকদের দিয়ে খালের পাড়ের মাটি ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। কথায় বলে_ নাই কাজ তো ধান-চাল মিশিয়ে বাছ। ঝালকাঠির খাল খননের নামে যেন এটাই ঘটছে। খালপাড়ের ছেঁটে ফেলা মাটি এমনকি সড়কেও ফেলা হচ্ছে। অতিদরিদ্রদের ৪০ দিনের কাজের কর্মসূচি নিঃসন্দেহে ভালো। কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে কি যথাযথ কাজের অভাব পড়েছে? ঝালকাঠিরই কীর্তিপাশা ইউনিয়নের একটি সড়ক পুনর্নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ তেমন বেশি নয়_ মাত্র ৪ লাখ ৬ হাজার টাকা। কিন্তু শ্রমিকরা ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি সুপারি বাগানের ভেতরে মাটি ফেলছে। এর সুফল কে ভোগ করবে? এলাকার যে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কাজের তত্ত্বাবধান করছেন, তার যুক্তি অভিনব_ বাগানের গাছ কেটে ভবিষ্যতে সড়ক নির্মাণ করা হবে। তাই মাটি ফেলে রাস্তার নমুনা করা হচ্ছে। কথায় বলে_ দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। এ ক্ষেত্রেও সেটাই যেন ঘটছে। প্রকল্প সম্পর্কে একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান যুক্তি দিয়েছেন, কাজের বিনিময়ে গরিবদের প্রতিদিন মজুরি দেওয়াই এসব প্রকল্পের উদ্দেশ্য। প্রকল্প বড় কথা নয়।
কিন্তু সেটাও কি হচ্ছে? সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রমিকদের পারিশ্রমিক সময়মতো দেওয়া হয় না। দরিদ্রদের এ কর্মসূচিতে দিনের মজুরি দিনেই পরিশোধ করার নিয়ম। কিন্তু তিন সপ্তাহ কাজ করার পরও অনেক শ্রমিক মজুরি পাননি। ঝালকাঠির প্রকল্প নিয়ে সমস্যার কথা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন। সরেজমিন পরিদর্শনের পর তার মনে হয়েছে, কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে না। তাহলে প্রতিকার করবে কে? অন্যায় যারা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়ই-বা কার? যেসব শ্রমিক কাজ করেও সময়মতো মজুরি পাচ্ছেন না, তাদের স্বার্থই-বা কে দেখবেন?

No comments

Powered by Blogger.