রায় হবে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে, ট্রাইব্যুনালে যা রেকর্ড হয়েছে- যুদ্ধাপরাধী বিচার- গো. আযম নিজামী সাঈদীর মামলা রিট্রায়ালের ওপর শুনানিতে এ্যাটর্নি জেনারেল, আজ খন্দকার মাহবুবের

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত তিন আসামির মামলা রিট্রায়ালের ওপর এ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি শেষ করেছেন। শুনানিতে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, কে কার সঙ্গে কথা বলেছে এতে বিচার কাজ বন্ধ হবে না।
আগস্টে স্কাইপের বিষয় রেকর্ড করা হলেও রায়ের আগে প্লেস করছে। তারা ঘাপটি মেরে ছিল। স্কাইপের মাধ্যমে যা করা হয়েছে তা ক্রাইম। তিনি জানান, কার কাছ থেকে কিভাবে এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে তা বের করতে হবে। নিজামুল হকের স্কাইপে কথোপকথন আসামিপক্ষ সম্পূর্ণ চুরি করে সংগ্রহ করেছেন, যা সংবিধান ও আইনের পরিপন্থী। রায় হবে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে, যেগুলো ট্রাইব্যুনালে রেকর্ড করা হয়েছে। বিচারপতি নিজামুল হক এখন আর ট্রাইব্যুনালে নেই এবং রায়ও এখনও দেয়া হয়নি। এটা কোন অডিনারি মার্ডার কেসের ট্রায়াল হচ্ছে না। চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দু’সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। এদিকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবীর ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, ট্রাইব্যুনাল কোন চিড়িয়াখানা নয় যে, এখানে যে কেউ প্রবেশ করতে পারে। সম্প্রতি তুরস্ক থেকে আসা প্রতিনিধি দল সম্পর্কে তিনি এ মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য, ২৪ ডিসেম্বের পর্যবেক্ষকের ছদ্মাবরণে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট তুরস্কোর একটি প্রতিনিধি দল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করে। যারা মুসলিম ব্রাদারহুডের সক্রিয় সদস্য। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা তাদের যাচাই-বাছাই না করেই ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করতে দেয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তিনটি মামলা রিট্রায়ালের জন্য আাসমিপক্ষ আবেদন করেন। ইতোমধ্যে আসামিপক্ষ গোলাম আযম, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ওপর শুনানি শেষ করেছে। শুধু আাসামিপক্ষের আইনজীবী বার কাউন্সিলেরসহ সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন আজ শুনানিতে অংশ নেবেন। এর পর জবাব দেয়ার জন্য প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে শুনানি করা হবে।এর পর ট্রাইব্যুনাল আদেশ প্রদান করবেন। একই সঙ্গে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর একটি আবেদন আছে। সেটাও এর পর পরই শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, ৫ ডিসেম্বর রাত ১০টায় দি ইকোনমিস্ট থেকে ট্রাইব্যুনাল-১-এর সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হককে জানানো হয়, ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে তিনি যেসব কথাবার্তা বলেছেন এবং ই-মেইলের মাধ্যমে যেসব পরামর্শ নিয়েছেন তার সব কিছুই তাদের কাছে রয়েছে। এ বিষয়ে তারা চেয়ারম্যানকে আরও কিছু প্রশ্ন করেন। এ ঘটনার পরদিন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের কাজে হস্তক্ষেপ ও বিচারকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করায় লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্টের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আাসামিপক্ষ ২০ ও ২৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলা তিনটি পুনর্বিচারের (রিট্রায়াল) করার জন্য পৃথক তিনটি আবেদন করেন আসামিপক্ষ। ২৪ ডিসেম্বর থেকে গোলাম আযমের পুনর্বিচারের আবেদনটির বিষয়ে শুনানির মাধ্যমে আসামিপক্ষের শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিন ল পয়েন্টে শুনানি করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমেদ। এর পর শুনানিতে অংশ নেন ডিফেন্স কাউন্সিলের প্রধান ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। এর পর জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষে শুনানি করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। তিনি রবিবার তাঁর বক্তব্য শেষ করেন। এছাড়া খন্দকার মাহবুব হোসেনের শুনানি করার কথা থাকলেও তিনি সময়মতো না আসতে পারায় এ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিতে অংশ নেন।
দ্বিতীয় সেশনে এ্যাটর্নি জেনারেল শুনানির সময় খন্দকার মাহবুব হোসেন আসেন। তখন ট্রাইব্যুনাল জানান এ্যাটর্নি জেনারেলের শুনানি শেষ হলে পরবর্তীতে আপনি (খন্দকার মাহবুব হোসেন) শুনানি করবেন। তখন প্রসিকিউটর দাঁড়িয়ে বলেন, আমরা প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জবাব দেব। ট্রাইব্যুনাল জানান ঠিক আছে এর পর আপনারা জবাব দেবেন। এর আগে ডিফেন্স টিমের প্রধান ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বৃহস্পতিবার ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ কার্যদিবসে গোলাম আযমের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এর পর আাসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম রবিবার পর্যন্ত দুদিন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষে শুনানি করেন।
এ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য ॥ এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে বলেন, রায়গুলো হবে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে, যেগুলো ট্রাইব্যুনালে রেকর্ড করা হয়েছে। বিচারপতি নিজামুল হক এখন আর ট্রাইব্যুনালে নেই এবং রায়ও এখনও দেয়া হয়নি। ট্রাইব্যুনালে তিনি আইনের নানাবিধ দিক দেখিয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন। এর পর শুনানি শেষে তিনি সাংবদিকদের বলেন, বিচার কাজকে বিলম্বিত করার জন্য আসামিপক্ষ দরখাস্তগুলো দিয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো চীফ প্রসিকিউটর দাখিল করেছেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ রয়েছে। সব ধরনের তথ্য-প্রমাণ দাখিল করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ’৭৩-এর বিধানে রয়েছে। এ আইনে অন্য লোকের সাহায্য সহযোগিতা নিতে পারবেন বিচারকরা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ’৭৩-এর ১১ (ডি) এবং ১১ (৬) ধারায় এ বিধান রয়েছে। তাই বিচারপতি নিজামুল হক অন্য লোকের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে কোন অপরাধ করেননি। বিচারপতি মোঃ নিজামুল হক নাসিম স্কাইপে কথোপকথন আসামিপক্ষ সম্পূর্ণ চুরি করে সংগ্রহ করেছে, যা সংবিধান ও আইনের পরিপন্থী। ’৭১ সালের সত্যিকারের ঘটনার বিচারকে এগুলো দিয়ে তারা বিলম্বিত করতে চাচ্ছেন। বিচার হবে আদালতে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে।
তিনজনের অবস্থান ॥ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জামায়াতের তিন শীর্ষ নেতার বিচার চলছে। পাশাপাশি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীরও বিচার চলছে। এর মধ্যে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। তার বিরুদ্ধে রায় যে কোন দিন দেয়া হবে বলে উল্লেখ করে মামলাটির রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছে ট্রাইব্যুনাল। আর মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পক্ষে দ্বিতীয় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জেরা চলছিল। পুনর্বিচারের আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শুনানি মুলতবি থাকবে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। অন্যদিকে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সকল সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষী গ্রহণ করা হচ্ছিল প্রথম সাফাই সাক্ষী হিসেবে গোলামের ছেলে আব্দুল্লা হিল আমার আযমী সাফাই সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন। কিন্তু পর পর কয়েকটি ধার্য তারিখে সাফাই সাক্ষী ও তার আইনজীবী উপস্থিত না হওয়ায় বার বার সময়ের আবেদন করছিলেন অন্য আইনজীবীরা। এর প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ বাতিল করে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের দিন ধার্য করেছিলেন। তবে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী ও আইনজীবী উপস্থিত হতে পারলে তার অসমাপ্ত সাক্ষ্যগ্রহণেরও আদেশ দিয়ে রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। ১৯ ডিসেম্বরও এ তারিখ ধার্য থাকলেও আসামিপক্ষের পুনরায় বিচার শুরুর আবেদনে তা করা যায়নি।
একইভাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৭তম সাক্ষীর ক্যামেরা ট্রায়াল হওয়ার কথা। এরই মধ্যে তিনি একটি আবেদন দিয়েছেন। ফলে সাকার মামলার বিচারিক কার্যক্রমও মুলতবি রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজ স্বচ্ছতার খাতিরে সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নিজামুল হক নাসিম ১১ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন। সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নিজামুল হকের পদত্যাগের পর ১৩ ডিসেম্বর দু’টি ট্রাইব্যুনালই পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। এতে ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারপতি নিজামুল হকের স্থলে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর।
এরই মধে আাসমিপক্ষের আইনজীবীরা তিনটি মামলা পুনঃশুনানির আবেদন করেন। স্কাইপের মাধ্যমে সংগৃহীত বিষয়গুলো পরবর্তীতে দৈনিক আমার দেশ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে। ১৩ ডিসেম্বর প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ বিষয়টি নজরে আনেন। এর পর ইন্টারনেট স্কাইপির মাধ্যমে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের সঙ্গে ব্রাসেলসে বসবাসরত আন্তর্জাতিক অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে কথোপকথন, অনুবাদ বা এ সম্পর্কিত কোন লেখা দৈনিক আমার দেশ, সংগ্রামসহ সকল প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইনে প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। কথোপকথন হ্যাকিংয়ের কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তৃতীয় কোন পক্ষ জড়িত কি না, এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।
বিতর্ক ॥ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শুনানির সময় এ্যাটর্নি জেনারেল ও প্রসিকিউটরের সঙ্গে আাসামিপক্ষের আইনজীবীর বিতর্ক শুরু হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বিষয়টি নাটক বলে উল্লেখ করলে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালূম বলেন, আমরা নই, আপনারাই নাটক দেখিয়েছেন। তিনি আসামিপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, কথা ঠিক করে বলেন। শব্দ পরিবর্তন করুন। শুনানির একপর্যায়ে মিজানুল ইসলামকে উদ্দেশে করে এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা রাজশাহী নয়। তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, এটা বাংলাদেশ। এই ট্রাইব্যুনালে যে তিন বিচারক আছেন তাঁরা হাইকোর্টের।
শুনানিতে জনকণ্ঠ ॥ এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে দৈনিক জনকণ্ঠের একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন। ২৪ ডিসেম্বর দৈনিক জনকণ্ঠের চতুরঙ্গ পাতায় মহিউদ্দিন আহমেদের ‘হ্যাকিংয়ের অপরাধে ইংল্যান্ডে সম্পাদক জেল খেটেছেন, বাংলাদেশে নয় কেন?’ প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন।
শাহরিয়ার কবির ॥ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, ট্রাইব্যুনাল কোন চিড়িয়াখানা নয় যে, এখানে যে কেউ প্রবেশ করতে পারে। সম্প্রতি তুরস্ক থেকে আসা প্রতিনিধি দল সম্পর্কে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তাঁরা ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে এসে ট্রাইব্যুনাল ঘুরে দেখে যাবে, আসামির সঙ্গে কথা বলবেন তা হতে পারে না। এর জন্য উচ্চপর্যায়ে তদন্ত হতে হবে। এর ব্যর্থতার জন্য সরকারই দায়ী হবেন।
রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গোলাম আযম, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মতিউর রহমান নিজামীর মামলার রিট্রায়ালের আবেদনের ওপর শুনানি পর্যবেক্ষণ শেষে ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের মধ্যে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। জামায়াত এ বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র করছে। গোলাম আযমের মামলা রিট্রায়ালের আবেদনের শুনানিতে ব্যারিস্টার রাজ্জাক যা বলে গেছেন এখন সাঈদীর ক্ষেত্রে মিজানুল ইসলাম সেই একই কথা বলছেন। চরম ধৈর্যের সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল শুনে যাচ্ছে। আমার এত ধৈর্য নেই তাই আমি বের হয়ে এসেছি। তিনি আরও বলেন, অপরাধ হয়েছে বাংলাদেশে, অপরাধীরা বাংলাদেশের, ভুক্তভোগীরাও বাংলাদেশের। আমাদের আইন আছে, বিচার ব্যবস্থাও আমাদের। এক্ষেত্রে নাক গলানোর এখতিয়ার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নেই।
রবিবার সকালে ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বিচারিক কার্যক্রম দেখেন শাহরিয়ার কবির ও মুনতাসীর মামুন। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পুনর্বিচার চেয়ে করা আবেদনের পক্ষে আসামিপক্ষের শুনানি চলছিল। পরে তিনি ট্রাইব্যুনালের গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপে হ্যাকিং সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার বেডরুমের কথোপকথন রেকর্ড হয়েছে, এটা একটা অপরাধ। সেটা প্রকাশ করে আরেকটা অপরাধ করেছে আমার দেশ। আর আদালতে সেগুলো নিয়ে এসে আসামিপক্ষ আরেকটা অপরাধ করেছেন। এতে সাইবার ক্রাইমের ঘটনা ঘটেছে। আমি যদি এগুলো আমলে নেই, তাহলে আমিওতো সাইবার ক্রাইমকে উৎসাহিত করলাম। তাই হ্যাকিং বন্ধ করতে না পারেন, হ্যাকারদের শাস্তি তো দিতে পারেন। শাহরিয়ার কবীর বলেন, পৃথিবীর সব দেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন ও সার্বভৌম।

No comments

Powered by Blogger.