শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে হাসিনা-ব্যর্থদের ফর্মুলা দিয়ে চলবে না আ. লীগ

নেতা-কর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন দেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পুনর্নির্বাচিত সভাপতি শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সাল থেকে এ পর্যন্ত সাতবার ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
গত শনিবার ১৯তম জাতীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলররা শেখ হাসিনাকে সপ্তমবারের মতো দলের সভাপতি নির্বাচিত করেন।
সারা দেশ থেকে আসা কাউন্সিলররা গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে উপস্থিত হয়ে শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সম্মেলন সফল হয়েছে উল্লেখ করে দলীয় সভাপতি তৃণমূল নেতাদের অভিনন্দন জানান। তিনি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন। পরে গণভবনে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়।শেখ হাসিনা জেলা নেতাদের উদ্দেশে বলেন, 'আগামী দুই মাসের মধ্যে যেসব জেলার সম্মেলন হয়নি সেসব সম্মেলন করতে হবে। সম্মেলনের কাজ যেন দ্রুত শেষ হয়। সম্মেলন শেষ হলে বর্ধিত সভা হবে। আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করেছি। বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করব।'
নাম উল্লেখ না করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এক উপদেষ্টার (ড. আকবর আলি খান) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারবিষয়ক ফর্মুলার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ কেউ আজ ফর্মুলা দেন। ব্যর্থ লোকদের ফর্মুলা দিয়ে আওয়ামী লীগ চলবে না। গণতন্ত্রও সুরক্ষিত হবে না। কারো ফর্মুলায় নয়, আওয়ামী লীগ নিজস্ব ধারায় চলবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করে তাঁরা একটি নির্বাচন দিতে পারেননি। ব্যর্থ হয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক মোটাতাজা মানুষ দল করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। দল করতে পারেননি। তাদের ফর্মুলা চাই না।
তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেককে নিজ এলাকার জনগণ ও ভোটারদের দিকে নজর রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রচারণা চালাতে হবে।
মিডিয়ার কিঞ্চিৎ সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টক শো এবং রেডিও-টিভি-পত্রিকার সংবাদ দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন না। পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলের মালিকদের অনেক টাকা। তাঁরা অনেক কিছু চায়, না দিলে নাখোশ হয়। তার পরই লেখা শুরু করে। নিজেরা একেকটা পত্রিকা হয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার করতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগের অত টাকা নেই।'
প্রত্যেক জেলায় নিজস্ব কার্যালয় করার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'জেলায় জেলায় অফিস করা অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক অফিস করতে হবে। এজন্য কেন্দ্র থেকে সহযোগিতা করা হবে। আওয়ামী লীগ একটা প্রতিষ্ঠান।' আওয়ামী লীগের সংগ্রহশালা করা হবে ঘোষণা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'অনেক এলাকায় প্রবীণ লোক রয়েছেন। তাঁদের কাছে দুর্লভ ছবি ও নিদর্শন রয়েছে। এগুলো সংগ্রহ করতে হবে।' সংগ্রহশালা করতে কেন্দ্রীয়ভাবে কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক ধারায় চলছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, সেভাবেই সম্মেলন হচ্ছে। অত্যন্ত সফল হয়েছে সম্মেলন। ঘন কুয়াশা ও শীত উপেক্ষা করে সারা দেশ থেকে ঢাকায় আসায় নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান দলীয় প্রধান। তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। আপনারা এসেছেন, কুয়াশা কেটে আলো ফুটে উঠেছে।'
ভাষণের পর সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা ফুল দিয়ে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। এরপর সিলেট, বগুড়া, নোয়াখালী, সৈয়দপুর, ফেনী জেলাসহ আওয়ামী লীগের ৭৩টি সাংগঠনিক জেলার নেতারা ফুল দিয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনার সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মাহবুব-উল আলম হানিফ, আহমেদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মেজবাহউদ্দিন সিরাজ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, সৈয়দা জেবুন্নেসা হক প্রমুখ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

No comments

Powered by Blogger.