খালেদার শীতবস্ত্র বিতরণ-তেল-গ্যাসের দাম বাড়ালেই তাৎক্ষণিক হরতাল কর্মসূচি

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবিতে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ, মানবপ্রাচীর, গণতন্ত্র হত্যা দিবস, গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ, কালো দিবস ইত্যাদি।
গত শনিবার বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আন্দোলন-পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেন নেতারা। গতকাল রবিবার রাতে ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়। তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে তাৎক্ষণিকভাবে হরতাল দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয় বৈঠকে।
গতকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে জোট নেতাদের সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতার বৈঠক হয়। রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হয়ে বৈঠক শেষ হয় সাড়ে ১০টায়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বৈঠকের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম কর্মসূচি চূড়ান্ত করার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানান।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ৬ জানুয়ারি সব জেলা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি (ওয়ান-ইলেভেন) জরুরি অবস্থা জারির দিনটি কালো দিবস হিসেবে পালন, ১৫ জানুয়ারি সারা দেশে মানবপ্রাচীর (ঢাকায় গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত), ১৯ জানুয়ারি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ১৮ থেকে ২২ জানুয়ারি পাঁচ দিন নানা কর্মসূচি, ২৩ জানুয়ারি সারা দেশে গণসংযোগ, প্রচারপত্র বিতরণ এবং ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৪ সালে বাকশাল গঠনের প্রতিবাদে গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন।
তরিকুল ইসলাম জানান, বৈঠকে সরকারের ভূমিকা, প্রশাসনে দুর্নীতি, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমকে গুম, বিশ্বজিৎসহ অনেককে হত্যা, দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো এবং রুহুল কবির রিজভীকে অবরুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন ১৮ দলীয় জোটের নেতারা। শেষ পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমা, জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কর্মসূচি এবং ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম খান, জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, মহাসচিব শামীম আল মামুন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মো. ইসহাক, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, মহাসচিব ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ পিপলস লীগের চেয়ারম্যান গরীব নেওয়াজ, ইসলামী ঐক্যজোট মহাসচিব আবদুল লতিফ নেজামী, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, ন্যাপের (ভাসানী) চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক, মহাসচিব হাসরত খান ভাসানী, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মফিজুল হুদা দুলাল প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.