দায়ী ব্যক্তিকে রাসায়নিক প্রয়োগে খোজা করার প্রস্তাব- ভারতে ধর্ষণ প্রতিরোধে নতুন আইনের খসড়া



ভারতে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আরও কঠোর আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চার (ইউপিএ) প্রধান শরিক কংগ্রেস। নতুন আইনের খসড়া অনুযায়ী দেশটিতে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে দায়ী ব্যক্তিকে রাসায়নিক প্রয়োগে খোজাকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন বিলের খসড়াটি চূড়ান্ত হলে বিচারপতি জে এস ভার্মার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি কমিটির কাছে তা পেশ করা হবে। নয়াদিল্লিতে এক ছাত্রীকে চলন্ত বাসে ১৬ ডিসেম্বর গণধর্ষণ ও প্রচণ্ড জখমের ঘটনার পর তুমুল প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার ওই কমিটি গঠন করে। প্রস্তাবিত নতুন আইনের খসড়ায় নারী নিগ্রহের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। ওই আইনে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে এবং দ্রুত বিচার আদালতে এ ধরনের মামলায় তিন মাসের মধ্যে রায় হবে। কংগ্রেসপ্রধান সোনিয়া গান্ধীর উপস্থিতিতে ২৩ ডিসেম্বর দলীয় বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। নয়াদিল্লিতে বহুল আলোচিত গণধর্ষণের প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে সোনিয়া ওই বৈঠক করেন।
সোনিয়ার নেতৃত্বাধীন জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের উদ্যোগে ভারতে তথ্য অধিকার (আরটিআই) আইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি আইন প্রণীত হয়েছে। নারী নির্যাতনবিরোধী নতুন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রেও ওই পরিষদ সক্রিয় ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নারী ও শিশু উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী কৃষ্ণা তিরাথ ওই নতুন আইনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে গত শুক্রবার টানা বৈঠক করেন। এতে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রচলিত আইন পরিবর্তনের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়। এসব সুপারিশের সারসংক্ষেপ তৈরি করে পর্যালোচনার জন্য বিচারপতি ভার্মার কমিটির কাছে পাঠানো হবে। কমিটি বর্তমান আইনগুলো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের ব্যাপারে সুপারিশ করবে। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই শেষে বিলটি আইনে পরিণত করার জন্য বিবেচনা করা হবে। ভারতীয় আইনসভার পরবর্তী অধিবেশন আরও দুই মাসেরও বেশি সময় পর শুরু হবে। তাই সরকার নতুন আইনটি অধ্যাদেশ আকারে বাস্তবায়নের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে।
ধর্ষণ প্রতিরোধে দলীয় বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী দ্রুত বিচার আইনে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার বিধান রাখার প্রস্তাব করেন। এ ছাড়া অভিযুক্ত ধর্ষণকারীকে রাসায়নিক প্রয়োগে খোজাকরণের পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেন রাজ্যসভার সদস্য রেনুকা চৌধুরী। এ ধরনের আইন বিভিন্ন দেশে প্রচলিত রয়েছে এবং এটি ধর্ষণ প্রতিরোধে কার্যকর হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এ ছাড়া কিশোরের সংজ্ঞা পরিবর্তন ও বয়স ১৫ বছর নির্ধারণের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়। পিটিআই।

No comments

Powered by Blogger.