কুর্দি বিদ্রোহীদের হামলায় ২৬ তুর্কি সেনা নিহত

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি বিদ্রোহীদের যুগপৎ হামলায় ২৬ তুর্কি সেনা নিহত হয়েছে। এসব হামলায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৬ জন। গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন পুলিশফাঁড়ি ও সেনাঘাঁটিতে হামলাগুলো চালানো হয়। এর জবাবে কয়েক শ তুর্কি সেনা ইরাকের উত্তরাঞ্চলে ঢুকে কুর্দি বিদ্রোহীদের ঘাঁটিগুলোতে হামলা শুরু করেছে। তারা আকাশ ও স্থলপথে হামলা চালাচ্ছে। স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) বিদ্রোহীরা ইরাক সীমান্তবর্তী হাক্কারি প্রদেশের কুকুরকা ও ইয়ুকসেকোভার আটটি স্থানে হামলা চালায়। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। পিকেকে বিদ্রোহীরা এই সব হামলার দায় স্বীকার কররেছে।


১৯৯৩ সালের পর তুর্কি সেনা নিহত হওয়ার সবচেয়ে বড় ঘটনা এটি। ওই বছর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বিঙ্গল প্রদেশে পিকেকের হামলায় ৩৩ তুর্কি সেনা নিহত হয়। কুর্দি বার্তা সংস্থা ফিরাত নিউজ (সংস্থাটিকে পিকেকের মুখপাত্র বিবেচনা করা হয়) জানায়, 'পিকেকে বিদ্রোহীদের পাকড়াও করার জন্য কয়েক শ সেনা ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত অতিক্রম করেছে।' পিকেকের মুখপাত্র দসদার হাম্মো বলেন, 'তুর্কি পদাতিক সেনারা হাক্কারি অঞ্চলের জেলি সীমান্ত দিয়ে ইরাকে প্রবেশ করছে।' তুর্কি বিমান বাহিনী ইরাকের উত্তরে কানদিল অঞ্চলে কুর্দি বিদ্রোহী ঘাঁটিগুলোতে হামলা করছে। এর আগে গত আগস্টে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে তুর্কি বিমানবাহিনী হামলা চালায়। এতে প্রায় ১৬০ বিদ্রোহী মারা যায়। কুকুরকায় কুর্দি হামলায় ৯ সেনার মৃত্যুর ঘটনায় ওই বিমান হামলা চালানো হয়েছিল।
সেনাদের ওপর হামলার 'কঠিন প্রতিশোধ' নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুল। গতকাল সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'সন্ত্রাসের মাধ্যমে তুরস্ককে ভয় দেখানো যাবে না। এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করব আমরা। এটা কারো ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে আমাদের যারা দুঃখ দিতে চেয়েছে, তাদের আরো বেশি পরিমাণ ভোগাব আমরা।' সেনাদের ওপর হামলার পর প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ দাভুদাগলু তাঁদের বিদেশ সফর বাতিল করেছেন। গত গ্রীষ্ম থেকেই পিকেকে বাহিনীর সঙ্গে তুর্কি সেনাদের সংঘর্ষের ঘটনা বেড়েছে। গত মঙ্গলবার তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বে একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে পাঁচ পুলিশ সদস্য ও তিনজন বেসামরিক লোক নিহত হয়। এই বিস্ফোরণের দায় পিকেকের ওপর চাপানো হয়েছে। তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কুর্দিপ্রধান এলাকা নিয়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে ১৯৮৪ সাল থেকে যুদ্ধ করছে বিদ্রোহীরা। তখন থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার লোক নিহত হয়েছে।
সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.