অপহরণ নাটক সাজিয়ে বাবার কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা, আটক

পনার ছেলেকে আমরা অপহরণ করেছি। আমাদের পাঁচ লাখ টাকা দরকার। ছেলেকে ফেরত চাইলে টাকা নিয়ে যোগাযোগ করেন।' মোবাইল ফোনে এই কথা শুনে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েন বাবা মুন্সী গোলাম মোস্তফা। ছেলে ইশতিয়াকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পান তিনি। গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসে ছেলের খোঁজ না পেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মিরপুর থানায়। অপহৃত ইশতিয়াককে উদ্ধারে মাঠে নামে পুলিশ ও র‌্যাব। গতকাল বুধবার বিকেলে কৌশলে ফাঁদে ফেলে পুলিশ আটক করে এক অপহরণকারীকে। উদ্ধার করা হয় ইশতিয়াককে। কিন্তু পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে আসে ভিন্ন কাহিনী।


ঘটনাটি অপরহণ নয়; বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা আদায়ের জন্য বখাটে বন্ধুদের সহায়তায় নাটক সাজায় ইশতিয়াক নিজেই!মিরপুর থানা পুলিশ জানায়, ইশতিয়াক আহমেদের (১৮) সহযোগী কথিত অপহরণকারীর নাম রুবেল (২৬)। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে পূর্ব শেওড়াপাড়া থেকে তাদেরকে আটক করে পুলিশ। রুবেলের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মিঠাখোলা গ্রামে। পূর্ব শেওড়াপাড়ার ৮৯০ নম্বর বাড়িতে থাকে এবং ফুটপাতে ব্যবসা করে সে।
মিরপুর থানার উপপরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ইশতিয়াক কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার উড়বি গ্রামে। সে কলেজের 'হেস্টেলে থাকে। গত শনিবার বাবা গোলাম মোস্তফার মোবাইল ফোনে কল করে তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা ইশতিয়াকের বাবার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ঢাকায় এসে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ নিয়ে তার কোনো হদিস না পেয়ে গত মঙ্গলবার মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন গোলাম মোস্তফা। এরপর পুলিশ ও র‌্যাব ইশতিয়াককে উদ্ধারে অভিযানে নামে। গতকাল বিকেলে অভিযোগকারী গোলাম মোস্তফাকে দুই লাখ টাকাসহ পূর্ব শেওড়াপাড়া এলাকায় পাঠিয়ে কৌশলে রুবেলকে আটক করে পুলিশ। পরে রুবেলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শেওড়াপাড়া এলাকা থেকেই ইশতিয়াককে উদ্ধার করা হয়। ইশতিয়াক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, ভারত যাওয়াসহ ব্যক্তিগত কিছু কাজের জন্য ইশতিয়াক ও তার বন্ধুদের টাকার প্রয়োজন হওয়ায় রুবেলসহ আরো দুই বন্ধুকে নিয়ে অপহরণের নাটক সাজায় ইশতিয়াক।

No comments

Powered by Blogger.